আলু কেনা শুরু, দেরি নিয়ে ক্ষোভ

একে তো শুরু হয়েছে দেরি করে। তার উপরে কেনাও হবে যথেষ্ট কম। সহায়ক মূল্যে সরকারের আলু কেনা নিয়ে এমনই ক্ষোভ চাষিদের মধ্যে। এ ভাবে আলু কেনার যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তাঁদের অনেকে। বিপুল ফলনের পরে দাম একেবারে পড়ে যাওয়ায় আলু রাখার জন্য চাষিদের লম্বা লাইন পড়ছিল হিমঘরগুলির সামনে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৫ ০২:২২
Share:

আলু কেনা পুরোপুরি শুরু না হওয়ায় বিক্ষোভ ।—নিজস্ব চিত্র।

একে তো শুরু হয়েছে দেরি করে। তার উপরে কেনাও হবে যথেষ্ট কম। সহায়ক মূল্যে সরকারের আলু কেনা নিয়ে এমনই ক্ষোভ চাষিদের মধ্যে। এ ভাবে আলু কেনার যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তাঁদের অনেকে।

Advertisement

বিপুল ফলনের পরে দাম একেবারে পড়ে যাওয়ায় আলু রাখার জন্য চাষিদের লম্বা লাইন পড়ছিল হিমঘরগুলির সামনে। কিন্তু এত আলু হিমঘরে রাখা নিয়েও সমস্যা দেখা দেওয়ায় ক্ষোভ-বিক্ষোভ শুরু হয়। বেশ কয়েক জন চাষি আত্মঘাতী হওয়ার পরে আলু চাষে বিপর্যয়ের দিকেই আঙুল ওঠে। এই পরিস্থিতিতে দিন কয়েক আগে সরকারের তরফে সহায়ক মূল্যে আলু কেনার কথা ঘোষণা করা হয়। মঙ্গলবার থেকে বর্ধমান জেলায় চাষিদের কাছ থেকে আলু কেনা শুরুও হয়েছে।

কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, গরিব চাষিদের বেশির ভাগই ইতিমধ্যে কিছু না কিছু ব্যবস্থা করে ফেলেছেন। কেউ মহাজনের কাছে আলু বিক্রি করে দিয়েছেন জলের দরে। সুদিনের আশায় অনেকে আবার ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইন দিয়ে হিমঘরে আলু রেখেছেন। কালনার আলু চাষি গোবিন্দ ঘোষ দাবি করেন, এখন পাঁচ শতাংশ চাষির কাছেও আলু নেই। এই পরিস্থিতিতে সাড়ে পাঁচ টাকা কেজি দরে দরে আলু কেনা শুরু করেছে সরকার। ফলে বেশির ভাগ চাষিই এর সুবিধা পাবেন না। অথচ, দিন কয়েক আগে এই উদ্যোগ শুরু হলে তাঁদের সমস্যার অনেকটা সুরাহা হত।

Advertisement

মেমারির চাষি অলোক মাঝির আবার প্রশ্ন, “এক একটি ব্লক থেকে প্রথম পর্যায়ে ৮০০-১০০০ বস্তা আলু কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে শুনেছি। সেই অনুযায়ী পঞ্চায়েতগুলির ভাগে পড়েছে গড়ে একশো বস্তার কাছাকাছি। এতে আর কতটা সুরাহা হবে?” তাঁর অভিযোগ, “কৌশলেই দেরিতে আলু কেনা শুরু করেছে প্রশাসন। আলু হিমঘরে পাঠিয়ে দেওয়ায় এখন ইচ্ছে থাকলেও বিক্রি করার উপায় নেই চাষিদের।” মেমারি আর এক চাষি সঞ্জিত মজুমদারের বক্তব্য, “আসলে প্রচার হল সরকার আলু কিনল। অথচ, চাষিদের কার্যত কোনও লাভ হল না।”

যদিও আলু কেনা নিয়ে জেলা প্রশাসনের ব্যাখ্যা, অঙ্গনওয়াড়ি, শিশুশিক্ষা কেন্দ্র, স্কুলে শিশু এবং ছাত্রদের এক সপ্তাহ খেতে দেওয়ার মতো মাথা পিছু এক কেজি করে হিসেবে আলু কেনা শুরু হয়েছে। পরবর্তী ধাপে চাহিদা বুঝে ফের আলু কেনার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “আলু কেনার পরে শিশুশিক্ষা কেন্দ্র, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে তা পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। এক বারে বেশি আলু কেনা হলে পচে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন