এল প্রতিনিধি দল, ক্লাস চালুর সিদ্ধান্ত কলেজে

ক্লাস বয়কট উঠল বিবেকানন্দ কলেজে। বৃহস্পতিবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকার ও কলেজসমূহের পরিদর্শক দেবকুমার পাঁজার অনুরোধে ওই বন্ধ ওঠে। এ দিন উপাচার্যের নির্দেশে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ সদস্যের একটি দল বিবেকানন্দ কলেজে আসেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৪ ০১:১৯
Share:

বিবেকানন্দ কলেজে চলছে প্রতিনিধি দলের বৈঠক। —নিজস্ব চিত্র।

ক্লাস বয়কট উঠল বিবেকানন্দ কলেজে। বৃহস্পতিবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকার ও কলেজসমূহের পরিদর্শক দেবকুমার পাঁজার অনুরোধে ওই বন্ধ ওঠে।

Advertisement

এ দিন উপাচার্যের নির্দেশে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ সদস্যের একটি দল বিবেকানন্দ কলেজে আসেন। ওই দলে ছিলেন কলেজসমূহের পরিদর্শক দেবকুমার পাঁজা, উপ-পরিদর্শক সুজিত চৌধুরী, কর্মসমিতির সদস্য তথা গুসকরা কলেজের অধ্যক্ষ স্বপনকুমার পান ও দুই প্রবীণ শিক্ষক জয়ন্ত দত্ত ও চিত্তরঞ্জন সরকার। সাড়ে ১১টা নাগাদ কলেজে পৌঁছে সমস্ত হাজিরা খাতা চেয়ে পাঠান তাঁরা। অধ্যক্ষের ঘরে বসে হাজিরা খাতাগুলি পরীক্ষাও করেন। তাতে দেখা যায় ৪০ জন স্থায়ী শিক্ষকের মধ্যে ১১জন উপস্থিত। অথচ ওই ক্লাস বয়কটের ব্যাপারে যে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল, তাতে সমস্ত শিক্ষককে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছিল। দেবকুমারবাবু প্রশ্ন তোলেন, “এত শিক্ষক অনুপস্থিত কেন? কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষই বা এখনও কলেজে আসেননি কেন?” কার নির্দেশে ওই ক্লাস বয়কট করা হয়েছে এবং আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি নেওয়া হয়েছিল কি না, সে প্রশ্নও ওঠে।

ইতিমধ্যেই কলেজে আসেন টিচার-ইন-চার্জ জাহাঙ্গীর হোসেন। প্রায় সঙ্গেসঙ্গেই তাঁকে ও পরিচালন সমিতির সভাপতি ভূদেবচন্দ্র ঘোষকে ডেকে পাঠান ওই প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা। তাঁরা অধ্যক্ষকে সই করে দিতে বলেন যে কলেজে ২৭জন স্থায়ী শিক্ষক অনুপস্থিত রয়েছেন। এরপরে তাঁরা জাহাঙ্গীর হোসেনকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে ক্লাস বয়কট তুলে নেওয়ার কথাও বলেন। তাঁদের কথামতো ওই বিজ্ঞপ্তি জারি করেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। শিক্ষাকর্মীদের ডেকে কলেজ বন্ধ থাকার ব্যাপারে তাঁদের মতামত দিতেও বলা হয়। ডাকা হয় পরিচালন সমিতির সদস্য সৌমেন চক্রবর্তী ও সঞ্জিত ভট্টাচার্যকেও। শিক্ষাকর্মীরা স্পষ্ট জানান, তাঁরা এভাবে কলেজ বন্ধের বিরোধী ছিলেন। কারণ এভাবে কলেজ বন্ধ করে কোনও কিছুর সুরাহা করা সম্ভব বলে মনে করেন না তাঁরা।

Advertisement

ছাত্র সংসদের প্রতিনিধিদের ডেকেও মতামত শুনতে চায় প্রতিনিধি দল। সংসদের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ হাজরা ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক সন্দীপ দে বলেন, “তদন্ত করে দোষিদের সাজা দেওয়া হোক, এটাই আমাদের মত। কিন্তু তার জন্য গোটা কলেজের ছাত্রছাত্রীদের বিড়ম্বনায় ফেলা হবে কেন?”

এরপরে কলেজের স্টাফরুমে গিয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠকে বসে প্রতিনিধি দলটি। সেখানে শিক্ষক সুমন জানা, জ্যোতির্ময় গোস্বামী ও অসীম মুখোপাধ্যায় তাঁদের বলেন, “একজন ছাত্রকে যদি ২০ জন মিলে মারধর করে এবং সে ক্ষেত্রে যদি কোনও দুর্ঘটনা ঘটে যায় তাহলে তার দায় কে নেবে? কলেজের পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ। তাই ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই আমরা ওই ক্লাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।”

ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অবশ্য পরে বলেন, “কলেজে মোটেই ২৭জন শিক্ষক অনুপস্থিত ছিলেন না। তাঁরা নানা কলেজের কাজে ব্যস্ত থাকায় হাজিরা খাতায় সই করতে পারেননি। মাত্র ৪ জন অনুপস্থিত ছিলেন।” তিনি আরও বলেন, “আমরা দেবকুমারবাবুর অনুরোধে শুক্রবার থেকেই কলেজের পঠনপাঠন শুরু করে দিচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাও যথারীতি চলবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন