কর্মী নেই, জেলা জুড়ে ধুঁকছে শতাধিক গ্রন্থাগার

কোথাও প্রয়োজনের তুলনায় কর্মী কম। বেহাল অবস্থা পরিকাঠামোর। আবার কোথাও একই গ্রন্থাগারিক সামলাচ্ছেন একাধিক গ্রন্থাগারের দায়িত্ব। এ ভাবেই চলছে জেলার একাধিক গ্রন্থাগার।

Advertisement

কেদারনাথ ভট্টাচার্য

কালনা শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৪ ০৬:৫২
Share:

কোথাও প্রয়োজনের তুলনায় কর্মী কম। বেহাল অবস্থা পরিকাঠামোর। আবার কোথাও একই গ্রন্থাগারিক সামলাচ্ছেন একাধিক গ্রন্থাগারের দায়িত্ব। এ ভাবেই চলছে জেলার একাধিক গ্রন্থাগার।

Advertisement

শহর থেকে গ্রাম-জেলার প্রায় সব জায়গাতেই রয়েছে গ্রন্থাগার। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা, মহকুমা ও গ্রামীণ পর্যায় মিলিয়ে জেলায় মোট ২১৪টি গ্রন্থাগার রয়েছে। এর মধ্যে জেলা পর্যায়ের গ্রন্থাগার হল তিনটি। এগুলি রয়েছে বর্ধমান সদর, দুর্গাপুর ও আসানসোলে। মহকুমা পর্যায়ের গ্রন্থাগার রয়েছে ২১টি। এছাড়া বাকিগুলি হল গ্রামীণ গ্রন্থাগার।

এর মধ্যে আইনি জটিলতার কারণে ৪টি গ্রন্থাগারের তালা খোলেনি দীর্ঘদিন। বাকি গ্রন্থাগারগুলির মধ্যেও বেশ কয়েকটি ভুগছে কর্মীর অভাবে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার বিভিন্ন গ্রন্থাগারে আধিকারিক ও কর্মী মিলিয়ে প্রায় ১৫০ জন কর্মীর ঘাটতি রয়েছে। সামনেই অবসর নেওয়ার কথা রয়েছে কিছু কর্মীর। ফলে ঘাটতির সংখ্যা আরও বাড়বে। কালনা মহকুমায় রয়েছে প্রায় ৩৪টি গ্রামীণ গ্রন্থাগার। এর মধ্যে কর্মীর অভাবে সমুদ্রগড় বান্ধব সমিতি, শ্রীরামপুর, জাহান্নগর, তেলিনাপাড়া ও নাদনঘাট পঞ্চায়েতের গ্রন্থাগারগুলির তালা খোলাই সমস্যার বিষয় হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

গ্রন্থাগারিকরা জানাচ্ছেন, কর্মী সংখ্যা কম থাকায় গ্রন্থাগারের বই কেনা, নতুন কার্ড ইস্যু করা, কার্ড নবীকরণের মত দৈনন্দিন কাজে তৈরি হচ্ছে সমস্যা। কালনার সুভাষ পাঠাগারের কর্মী তারকচন্দ্র সাহা বলেন, “গ্রন্থাগার চালানোর জন্য বর্তমানে আমি একমাত্র কর্মী। ফলে নিজের হাতেই বই দেওয়া থেকে শুরু করে গ্রন্থাগারের সব কাজ করতে হয়। আমি অসুস্থ হয়ে পড়লে সমস্যা হয়।” কর্মী সংখ্যা কম থাকায় অনেক আধিকারিককেই একাধিক দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। যেমন আসানসোল মহকুমার জামুড়িয়ার টাউন লাইব্রেরির গ্রন্থাগারিক মৌমিতা গঙ্গোপাধ্যায়কে বর্তমানে কালনা মহকুমা গ্রন্থাগারের গ্রন্থাগারিকের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। বর্তমানে তিনি সপ্তাহে তিন দিন জামুড়িয়া টাউন লাইব্রেরি ও তিন দিন কালনা মহকুমা গ্রন্থাগারের দায়িত্ব পালন করেন।

শুধু লোকবল নয়, রয়েছে পরিকাঠামোর সমস্যা। জেলার বেশ কিছু গ্রামীণ গ্রন্থাগারে বই রাখার জায়গা নেই। বর্ষায় বৃষ্টি হলেই অনেক জায়গায় ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ে। গ্রন্থাগারের সমস্যা নিয়ে সম্প্রতি কালনা মহকুমা গ্রন্থাগারে একটি আলোচনা সভা হয়েছিল। সেখানে এই বিষয়গুলি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। ওই আলোচনা সভায় মন্তেশ্বরের একটি গ্রন্থাগারের কর্মীরা জানায়, তারা ভ্রাম্যমাণ গ্রন্থাগার পরিষেবা চালু করলেও অর্থাভাবে সেটি বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

জেলা গ্রন্থাগারগুলি দেখভালের জন্য তৈরি হওয়া লোকাল লেভেল অথরিটির সদস্য কল্পনা বসু বলেন, “কর্মী সংখ্যায় ঘাটতি রয়েছে। তবে তার কারণে গ্রন্থাগার অচল হয়ে যায়নি। সমস্যা মেটাতে একজন আধিকারিককে অন্য জায়গার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি জেলার প্রমোশনাল সাব কমিটির একটি বৈঠক রয়েছে। ওই বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে।” জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিক সুমন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সমস্যাগুলি ঊর্ব্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করি, খুব শীঘ্রই সমস্যা মিটবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন