বিধানসভার উপ নির্বাচনে গলসিতে সন্ত্রাসের পরিকল্পনা করেছে তৃণমূল। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে এই অভিযোগ করল বামফ্রন্ট। একই সঙ্গে, গলসি থানার ওসিকে বদলির দাবিও তুলল বামেরা। কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গলসি বিধানসভায় দীর্ঘদিন ধরেই জিতে আসছে বামেরা। ২০১১ সালে পরিবর্তনের হাওয়ার মধ্যেও এই বিধানসভায় জিতেছিলেন ফরোয়ার্ড ব্লক প্রার্থী সুনীল মণ্ডল। সম্প্রতি রাজ্যসভা ভোটের আগে তিনি দল বদলে তৃণমূলে যোগ দেন। তিনি এ বার বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী। লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গে এই গলসি বিধানসভা কেন্দ্রেও উপনির্বাচন হচ্ছে।
ফরোয়ার্ড ব্লকের রাজ্য কমিটির সদস্য দেবব্রত দাস বলেন, “গত ১৯ এপ্রিল গলসিতে সিপিএম নেতা গৌতম দেবের সভায় ভিড় দেখেই ভয় পেতে শুরু করেছে তৃণমূল। ৫৫টি এলাকায় তৃণমূল হুমকি দিয়ে বুথ দখলের ছক করেছে। আমরা
আমাদের অভিযোগ মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সুধীরকুমার রাকেশের হাতে তুলে দিয়েছি।”
অভিযোগ জানানো হয়েছে জেলা নির্বাচন দফতরেও। শনিবার গলসি বিধানসভা ভোটে ফরওয়ার্ড ব্লকের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা পিনাকী সেন দুর্গাপুর হাউসে গিয়ে গলসি বিধানসভার পর্যবেক্ষক সতীশকুমারের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁর অভিযোগ, “গলসি ১ ও ২ ব্লক ও কাঁকসা এই তিন ব্লকের ৪৩টি বুথের এজেন্ট বসতে না দেওয়া ও বাম সমর্থক ভোটারদের বুথে যেতে না দেওয়ার জন্য তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের চারটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এরা আগামী কাল থেকেই ওই তিন ব্লকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেওয়া শুরু করবে বলে আমাদের কাছে খবর।” তাঁদের দাবি, ওই ৪৩টি বুথ এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দিয়ে ফ্ল্যাগ মার্চ করাতে হবে। গলসি থানার ওসিকে বদলি করতে হবে। জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক সিপিএমের বর্ধমান জেলা কমিটির সম্পাদক অমল হালদারের দাবি, “কেবল তিনটি ব্লকেই হুমকি দেওয়া হচ্ছে তাই নয়, জেলার সব ক’টি বুথ এলাকাতেই হুমকি দিচ্ছে তৃণমূল।”
যদিও হুমকির সব অভিযোগই অস্বীকার করেছে তৃণমূল। বর্ধমান-দুর্গাপুরের তৃণমূল প্রার্থী ও গলসির প্রাক্তন বিধায়ক সুনীল মণ্ডল বলেন, “আমি এখন বাইরে রয়েছি। বিষয়টি শুনিনি।” তাঁর পাল্টা দাবি, “আমাদের সভায় লোক হচ্ছে দেখে ভয় পেয়ে গিয়ে সিপিএমই এ সব করাচ্ছে।”
রাজ্যের কৃষি মন্ত্রী ও বর্ধমান জেলা (শিল্পাঞ্চল) তৃণমূলের নেতা মলয় ঘটক বলেন, “মুকুল রায়ের সভায় মানুষের সাড়া দেখে ফরোয়ার্ড ব্লক বুঝতে পেরেছে, গলসি বিধানসভায় তাঁদের হার নিশ্চিত। হারের ধাক্কা সামলাতেই মিথ্যা অভিযোগ করছে ওরা।” গলসি বিধানসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূল নেতা পুলক চক্রবর্তীর দাবি, “এই অভিযোগ মিথ্যা। গলসিতে বাম বিরোধী কোনও দল প্রায় জেতেইনি। গলসি বিধানসভা জেতা আমাদের চ্যালেঞ্জ।”