ঘাটে পৌঁছেই ভাঙনের নালিশ শুনলেন সুনীল

কখনও পায়ে হেঁটে, কখনও মোটরবাইকে আবার কখনও নৌকা চড়ে প্রচার সারলেন লোকসভা নির্বাচনে বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সুনীল মণ্ডল। রবিবার সকাল হতে না হতেই কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডুর বাড়িতে পৌঁছে দলীয় কর্মীদের নিয়ে প্রচার সংক্রান্ত একটি বৈঠক করেন সুনীলবাবু।

Advertisement

কেদারনাথ ভট্টাচার্য

কালনা শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৪ ০০:৩৪
Share:

কালনায় নৌকায় চড়ে প্রচারে তৃণমূল প্রার্থী সুনীল মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র।

কখনও পায়ে হেঁটে, কখনও মোটরবাইকে আবার কখনও নৌকা চড়ে প্রচার সারলেন লোকসভা নির্বাচনে বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সুনীল মণ্ডল।

Advertisement

রবিবার সকাল হতে না হতেই কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডুর বাড়িতে পৌঁছে দলীয় কর্মীদের নিয়ে প্রচার সংক্রান্ত একটি বৈঠক করেন সুনীলবাবু। ঠিক হয় প্রচার শুরু হবে চকবাজার দিয়ে। রাজবাড়ি কমপ্লেক্স হয়ে হাঁটাপথেই বাজারে পৌঁছন তিনি। বাজার ততক্ষণে সরগরম। বর্ধমান তো বটেই নদিয়ার বিভিন্ন জায়গা থেকেও মাছ, সব্জির পসরা নিয়ে এসে গিয়েছেন বিক্রেতারা। তার মধ্যেই প্রার্থী প্রচার শুরু করে দেন। বাজারের হৈ হট্টগোলে অবশ্য তাঁর গলা অনেকেরই বিশেষ বোধগম্য হয় না। দ্রুত ব্যবস্থা করা হয় হাত মাইকের। গলায় মাইক ঝুলিয়ে আড়াই বছরে সোনার বাংলা গড়ার প্রতিশ্রুতি দেন সুনীলবাবু।

তবে প্রচার শুরু হতেই অনেকেই আশপাশ থেকে ফিসফাস শুরু করেন দেন। চকবাজারের এক ব্যবসায়ী সুনীল মণ্ডল তো বলেই ফেললেন, ভোটের সময় তো অনেকেই আসেন। অনেক প্রতিশ্রুতিও দেন। কিন্তু ভোট ফুরোলেই সব হাওয়া। এক সুনীলের প্রশ্ন শুনে প্রার্থী সুনীলের আশ্বাস, “এ বার তেমন হবে না। উন্নয়নের জোয়ার বইয়ে দেব।” কাউকে মাথায় হাত বুলিয়ে, কারও হাত ধরে আবার কাউকে বুকে টেনে বাজারে ঘুরে প্রচার শেষ করেন সুনীলবাবু। পথচলতি লোকজনের কাছ থেকেও বেশ কিছু টুকরো মন্তব্য উড়ে আসে। কেউ ফিসফিস করে তার দল বদলানোর কথা বলেন তো কেউ স্পষ্ট বলেন, সবে পাল্টি মেরেছে তো তাই ভোটে জান লড়িয়ে দিচ্ছে।

Advertisement

বাজার থেকে বেরিয়ে দলবল নিয়ে সুনীলবাবু হাজির হন ১০৮ শিবমন্দিরে। মন্দিরে মাথা ঠেকিয়ে প্রণাম করে পুরোহিতের কাছ থেকে আর্শীবাদ নিয়ে পৌঁছে যান নিভুজিবাজার দলীয় কার্যালয়ে। সেখানে চা বিস্কুট খেয়ে ভাগীরথী পেরিয়ে যান কলডাঙা ও নতুন চর এলাকায়। ঘাটে নৌকা থামাতেই প্রার্থীকে ভাঙন সমস্যার কথা বলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। একাধিকবার জমি, ঘর বাড়ি তলিয়ে যাওয়ার কথাও বলেন। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ভাগীরথীর ঘাট থেকে নতুনচর ও কলডাঙার দিকে যে দু’টি কাঁচা রাস্তা গিয়েছে তাতে মোটরবাইক ছাড়া কোনও যানবাহন চলে না। জঞ্জাল ভরা নর্দমা, দরমার বাড়ি এসব নিয়েও অভিযোগ করেন তাঁরা। গ্রামের বৃদ্ধ দোকানদার নজর আলি বলেন, “বর্ষায় গ্রামের রাস্তায় হাঁটাটাই দুস্কর হয়ে পড়ে। পরিবার বেশি হলেও সরকারি বাড়ি মেলে না।” তবে বিশ্বজিৎবাবুর দাবি, এলাকার বেশিরভাগ মানুষেরই বিপিএল তালিকায় নাম নেই। তবে আমার ঠিকানা প্রকল্পে বাড়ি তৈরির জন্য কিছু পরিবারের নাম পাঠানো হয়েছে। নতুনচর থেকে বেরিয়ে কলডাঙা গ্রামে ঢোকার মুখেও দেখা যায় রাস্তার হাল খারাপ। কাদা জমে রয়েছে। গ্রামে ঢোকার পরে প্রচারকর্মীদের জল বাতাসা দেন গ্রামবাসীরাই।

সুনীল মণ্ডল বলেন, “আগের সিপিএম সাংসদের অনেক টাকাই ফেরত গিয়েছে। সে সব কাজে লাগালে গ্রামদুটির এত দুদর্শা হত না।” ভোটে জিতলে গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনা করে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। তবে সুনীলবাবুর অভিযোগের উত্তরে সিপিএমের জোনাল কমিটির সদস্য স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সাংসদ কোটার টাকা জেলাশাসক মারফত খরচ হয়। তৃণমূল যদি অনুন্নয়নের জন্য সাংসদ কোটার টাকা খরচ না হওয়াকে দায়ি করে তা হাস্যকর।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন