ঘেরাও তুলতে কর্মচারীদের লাঠিপেটা, অভিযুক্ত পুলিশ

বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত অবস্থায় মৃতের পোষ্যের চাকরির দাবিতে আন্দোলনকারী কর্মীদের উপর লাঠি চালানোর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। বুধবার সন্ধ্যায় বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজবাটি চত্বরের ঘটনা। তবে পুলিশের দাবি, উপাচার্য-সহ অন্য আধিকারিকদের ঘেরাও মুক্ত করতে ন্যূনতম বলপ্রয়োগ করেছেন তাঁরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৪ ০২:০৩
Share:

চলছে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।

বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত অবস্থায় মৃতের পোষ্যের চাকরির দাবিতে আন্দোলনকারী কর্মীদের উপর লাঠি চালানোর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। বুধবার সন্ধ্যায় বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজবাটি চত্বরের ঘটনা। তবে পুলিশের দাবি, উপাচার্য-সহ অন্য আধিকারিকদের ঘেরাও মুক্ত করতে ন্যূনতম বলপ্রয়োগ করেছেন তাঁরা।

Advertisement

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন চাকরির দাবি তুলে দুপুর ১টা থেকে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কমর্চারী সমিতির নেতৃত্বে বিক্ষোভ শুরু হয়। ধর্ণায় বসেন সমিতির নেতারা। তাঁদের দাবি ছিল, উপাচার্য স্মারকলিপি না নেওয়া পর্যন্ত তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়বেন না। উপাচার্যের দফতরে তালা ঝুলিয়ে আধিকারিকদের আটকেও রাখেন তাঁরা। কিন্তু উপাচার্য তাঁদের সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি নিতে না চাওয়ায় উত্তেজনা বাড়ে। খবর পেয়ে বিশাল বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন বর্ধমানের এসডিপিও অম্লানকুসুম ঘোষ ও বর্ধমান থানার আইসি আব্দুল গফ্ফর।

বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, দুই পুলিশ আধিকারিক গিয়ে উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকারকে বলেন, ‘আপনাদের বের করে বাড়িতে পৌছে দেবার নির্দেশ এসেছে উপর থেকে। আপনারা আসুন’। এরপরেই কর্মচারীদের উপর লাঠি হাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে পুলিশ। তৃণমূল সমর্থক বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী সমিতির নেতা শ্যামাপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় ও শৈল ঘোষ বলেন, “শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের উপর পুলিশ লাঠি চালিয়েছে। ১০ জন মহিলা-সহ আমাদের অন্তত ৫০জন সমর্থক আহত হয়েছেন। আমরা এর প্রতিবাদে আন্দোলনে নামব।” উপাচার্যের পদত্যাগও দাবি করেন তাঁরা। পুলিশকে ঘিরে ধরেও দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ দেখান তাঁরা।

Advertisement

তবে লাঠি চালানোর কথা অস্বীকার করেছে পুলিশ। বর্ধমান থানার আইসি আব্দুল গফ্ফর বলেন, “ন্যূনতম বল প্রয়োগ করে উপাচার্য-সহ আধিকারিকদের ঘেরাও মুক্ত করা হয়েছে।”

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সময়ে কর্মরত অবস্থায় মৃত কর্মচারীর পোষ্যকে চাকরিতে বহাল করার নিয়ম চালু ছিল। কিন্তু স্মৃতিকুমার সরকার উপাচার্য হয়ে আসার পরেই ওই নিয়মটি রদ করে দেওয়া হয়েছে বলে বর্ধমান ইউনির্ভাসিটি কর্মচারী সমিতির নেতাদের দাবি। এরই প্রতিবাদে আন্দোলনে নামেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, আন্দোলন সত্ত্বেও উপাচার্য তাঁর সিদ্ধান্তে অটল রয়েছেন। উপাচার্য অবশ্য বলেন, “ওই নিয়ম আগে যেভাবে মানা হয়েছে সেভাবে আর হবে না, এটা ঠিক। তবে নিয়মটি রদ হয়ে যায়নি। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ভাবে মৃতের পোষ্যের চাকরি হচ্ছে, সেভাবেই, প্রত্যেকটি ঘটনা বিবেচনা করে ওই নিয়োগ করা হবে।”

কিন্তু এ দিন তিনি অন্দোনকারীদের স্মারকলিপি নিলেন না কেন জানতে চাওয়া হলে উপাচার্য বলেন, “এই বিষয়টিকে আমি কোনও ইস্যু বলেই মনে করিনা। তাই দেখা করিনি। তা ছাড়া আমি কর্মসমিতির বৈঠকে ব্যস্ত ছিলাম।” তাঁর অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের নেহাতই সংখ্যালঘু একটিমাত্র কর্মচারী ইউনিয়ন নানা গোলমাল পাকাচ্ছে। এর আগেও এক মৃতের পোষ্যের চাকরি নিয়ে তাঁরা গোলমাল করেছিল বলে উপাচার্যের অভিযোগ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন