চীন মেলা, নানা মন্দির চেনার টানেই জমে ভিড়

মন্দিরের আদলে মণ্ডপ কোনও জায়গায়। কোথাও আবার পুজো উপলক্ষে মেলা বসে আসছে প্রায় অর্ধশতাব্দী ধরে। বেনাচিতি এবং ডিপিএল কলোনির এই সব পুজোগুলি বছরের পর বছর ধরে শহরে চর্চার কেন্দ্রে রয়েছে। উদ্যোক্তারা মনে করছেন, এ বারও সে ভাবেই ভিড় টানতে পারবেন তাঁরা। ভিড়িঙ্গি নবারুণ সর্বজনীনের এ বার ৪৭তম বর্ষ। ঐতিহ্য আর আভিজাত্য নিয়ে বেঁচে থাকা দুর্গাপুরের পুরনো পুজোর মধ্যে সেটি অন্যতম।

Advertisement

সুব্রত সীট

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৪ ০২:২৪
Share:

ডিপিএল বি-জোন আদিবেদীর মণ্ডপে প্রতিমা। নিজস্ব চিত্র।

মন্দিরের আদলে মণ্ডপ কোনও জায়গায়। কোথাও আবার পুজো উপলক্ষে মেলা বসে আসছে প্রায় অর্ধশতাব্দী ধরে। বেনাচিতি এবং ডিপিএল কলোনির এই সব পুজোগুলি বছরের পর বছর ধরে শহরে চর্চার কেন্দ্রে রয়েছে। উদ্যোক্তারা মনে করছেন, এ বারও সে ভাবেই ভিড় টানতে পারবেন তাঁরা।

Advertisement

ভিড়িঙ্গি নবারুণ সর্বজনীনের এ বার ৪৭তম বর্ষ। ঐতিহ্য আর আভিজাত্য নিয়ে বেঁচে থাকা দুর্গাপুরের পুরনো পুজোর মধ্যে সেটি অন্যতম। গত বছর কাল্পনিক মন্দিরের আদলে বিশাল সোনালি রঙের মন্ডপ গড়েছিলেন উদ্যোক্তারা। সঙ্গে একচালার ডাকের সাজের প্রতিমা দর্শকদের প্রশংসা কুড়িয়েছিল। এ বারও কাল্পনিক মন্দিরের আদলেই মণ্ডপ গড়া হয়েছে। ৪৭ জন কারিগর দু’মাস ধরে বাঁশ এবং প্লাইউড দিয়ে মণ্ডপ গড়েছেন। মণ্ডপের সামনে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ভগীরথের গঙ্গা আনার দৃশ্য। স্বামী বিবেকানন্দকে রাখা হয়েছে মণ্ডপের সামনে। সভাপতি অচ্যুৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের কোনও প্রতিযোগিতা নেই। একটাই লক্ষ্য, উৎকর্ষ ধরে রাখা।” প্রতি বছরের মতো এ বারও মণ্ডপের সামনে মাঠ জুড়ে বিশাল গ্রামীণ মেলা বসেছে। পুজো দেখতে এসে অনেকে মেলায় কেনাকাটাও সেরে নেন।

বেনাচিতির সবচেয়ে বড় পুজো ‘অগ্রণী সাংস্কৃতিক পরিষদ সর্বজনীন’। এই পুজো এ বার ৪৩ বছরে পা দিল। বরাবর উদ্যোক্তারা দৃশ্যাঙ্কন ও আলোকসজ্জা দিয়ে বাজিমাত করতেন। ২০১২ সালে প্রথম থিম পুজোয় মন দেন তাঁরা। সে বার তারজালির মণ্ডপ গড়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন তাঁরা। এ বার মণ্ডপ গড়া হয়েছে ভেলোরের ‘গোল্ডেন টেম্পল’-এর অনুকরণে। সভাপতি রথীন্দ্রনাথ চন্দ্রের দাবি, থিম পুজোর ময়দানে তাঁরা নতুন হলেও অল্প সময়েই শহরবাসীর মনে দাগ কেটেছেন। জনবহুল বেনাচিতির মাঝে হঠাৎ মাথা তুলে থাকা বিশাল মণ্ডপ দেখতে এ বারও ভিড় জমবে বলে আশা তাঁর। কিন্তু অনেক দর্শনার্থীরই ক্ষোভ, পুজো মণ্ডপের আশপাশে বড় বাড়ি উঠেছে। ঘিঞ্জি হয়ে গিয়েছে এলাকা। তাই পুজোর জায়গা যদি উদ্যোক্তারা বদলে দেন, তাহলে ভাল হয়। উদ্যোক্তারা অবশ্য মনে করছেন, বহু দিনের ঐতিহ্য বহন করে যে জায়গায় পুজো হচ্ছে, তা সহজে বদলানো মুশকিল।

Advertisement

নবারুণ সঙ্ঘের মণ্ডপ। নিজস্ব চিত্র।

তুলনায় পুরনো ডিপিএল কলোনির ‘ডিপিএল বি-জোন আদিবেদী’র পুজো। ৫৭ বছর ধরে পুজোর আয়োজন হচ্ছে। কয়েক বছর আগে স্ক্র্যাপ দিয়ে মণ্ডপ গড়ে শহরবাসীকে চমকে দিয়েছিলেন উদ্যোক্তারা। গত দু’বছর মন্দিরের আদলে মণ্ডপ গড়ছেন তাঁরা। ২০১২ সালে নেপালের পশুপতিনাথের মন্দির এবং গত বছর তিরুপতিনাথ মন্দিরের আদলে মণ্ডপ গড়া হয়। সঙ্গে ছিল মাটির সাজে অলঙ্কৃত মূর্তি। সেই একই ধারা অনুসরণ করে এ বার মণ্ডপ গড়া হয়েছে মায়াপুরের ইসকন মন্দিরের আদলে। সভাপতি উমাপদ দাস বলেন, “নানা বছর নানা মন্দিরের আদল গড়ে স্থানীয় মানুষজনকে সেই মন্দির সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আশা করি এ বারও দর্শনার্থীরা আগের মতোই আমাদের মণ্ডপে এসে উপভোগ করবেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন