লোকসভার ভোটগ্রহণ মিটেছে, কিন্তু ফল বেরোনো এখনও বাকি। তারই মধ্যে আসানসোলে পুরসভা ভোটের প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। আগামী জুনের শেষ সপ্তাহে আসানসোল ও কুলটিতে ভোট হোক, চাইছে এই দুই পুরসভার বিরোধীরাও। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফে অবশ্য এখনও এ নিয়ে এখনও কিছু জানানো হয়নি। তবে মহকুমা প্রশাসনের তরফে ইতিমধ্যে দুই পুরসভার ওয়ার্ডের সংরক্ষণ তালিকা প্রকাশ করেছে।
আসানসোলে মোট ৫০টি ও কুলটিতে ৩৫টি ওয়ার্ডে ভোট হবে। আসানসোলের মহকুমাশাসক অমিতাভ দাস জানান, ওয়ার্ডের সংরক্ষণের তালিকা সব রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠিয়ে তাদের মতামত চাওয়া হয়েছে। তিনি জানান, আসানসোলে ১৪টি ওয়ার্ড সাধারণ বিভাগের মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়েছে। সেই ওয়ার্ডগুলি হল ১, ৪, ৭, ১০, ১৩, ১৭, ২০, ২৩, ২৬, ২৯, ৩৬, ৩৯, ৪৩ ও ৪৬ নম্বর। তফসিলি জাতির মহিলাদের জন্য ১৫, ৩৩ ও ৪৯ নম্বর এবং। এ ছাড়া তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত ৩১, ৪০ ও ৫০ নম্বর ওয়ার্ড। তফসিলি উপজাতির জন্য সংরক্ষিত হয়েছে ৩২ ও ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড। কুলটি পুরসভায় সাধারণ বিভাগের মহিলাদের জন্য সংরক্ষণ করা হয়েছে ৩, ৬, ১৩, ১৮, ২২, ২৫, ২৮ ও ৩১ নম্বর ওয়ার্ড। তফসিলি জাতির মহিলাদের জন্য ৯ ও ৩৫ নম্বর এবং তফসিলি উপজাতির মহিলাদের জন্য ১ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ড সংরক্ষিত হয়েছে। এ ছাড়াও তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত হয়েছে ২, ৭, ১০, ১২, ১৭ ও ১৯ নম্বর ওয়ার্ড। মহকুমাশাসক বলেন, “এই তালিকার বিষয়ে কেউ কোনও আপত্তি জানায়নি। তাই সংরক্ষণের তালিকাটি গৃহীত হয়েছে।”
আসানসোল ও কুলটি পুরসভায় ২০০৯ সালে ভোট হয়েছিল ২৮ জুন। সে বারও লোকসভা ভোটের ঠিক পরপরই এই দুই পুরসভায় ভোট হয়। ১৭ জুলাই দুই পুরসভায় বোর্ড গঠন হয়েছিল। মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বারও জুনের শেষ সপ্তাহে পুরভোট করার চেষ্টা চলছে। কারণ, ২৯ জুন থেকে রমজান মাস শুরু হয়ে যাবে। সেই সময়ে ভোট হোক, তা চাইছে না কোনও রাজনৈতিক দল। ফলে, সেক্ষেত্রে ভোট পিছিয়ে অগস্টে চলে যেতে পারে। তাতে আবার দুই পুরসভারই মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে প্রায় এক মাস আগে। এই পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয়, সে জন্য রাজনৈতিক দলগুলি, বিশেষত বিরোধীরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ভোট করানোর জন্য প্রশাসনের কাছে আর্জি জানিয়েছে।
আসানসোল পুরসভার বিরোধী নেতা তথা প্রাক্তন মেয়র সিপিএমর তাপস রায়ের দাবি, “আমরা ঠিক সময়ে ভোট চাই। কারণ, দেরি হলেই শাসকপক্ষ নানা রকম জরিজুরি শুরু করতে পারে।” আসানসোলের ডেপুটি মেয়র অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় জানান, ভোট করানো প্রশাসনের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। এ বিষয়ে তাঁরা কোনও মন্তব্য করতে চান না।
মহকুমাশাসক জানান, জেলা প্রশাসনের নির্দেশ মতো ওয়ার্ডগুলির সংরক্ষণ তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। বাকি কাজ নির্বাচন কমিশনের নির্ঘণ্ট মেনেই করা হবে।