অসন্তোষ দুর্গাপুরে

জলের কর নেওয়ায় বৈষম্য শহরে

কোথাও ৭০ টাকা, কোথাও ৯০, কোথাও আবার দেড়শো। দুর্গাপুর পুরসভার নানা ওয়ার্ডে পানীয় জলের জন্য এমনই ভিন্ন ভিন্ন দাম দিতে হয় বাসিন্দাদের। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ইস্পাত নগরীর ১০টি ওয়ার্ড বাদে শহরের বাকি ওয়ার্ডগুলিতে পুরসভা ছাড়াও জল সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছে দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেড (ডিপিএল) এবং আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এডিডিএ)।

Advertisement

সুব্রত সীট

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:২২
Share:

কোথাও ৭০ টাকা, কোথাও ৯০, কোথাও আবার দেড়শো। দুর্গাপুর পুরসভার নানা ওয়ার্ডে পানীয় জলের জন্য এমনই ভিন্ন ভিন্ন দাম দিতে হয় বাসিন্দাদের।

Advertisement

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ইস্পাত নগরীর ১০টি ওয়ার্ড বাদে শহরের বাকি ওয়ার্ডগুলিতে পুরসভা ছাড়াও জল সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছে দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেড (ডিপিএল) এবং আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এডিডিএ)। নিজস্ব টাউনশিপ ছাড়াও ডিপিএল শহরের ৬টি ওয়ার্ডে জল সরবরাহ করে। বাসিন্দারা জানান, জলের সংযোগ পিছু মাসে প্রায় দেড়শো টাকা নেয় ডিপিএল। আবার বিধাননগরের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের বড় অংশে জল সরবরাহ করে এডিডিএ। তারা সংযোগ পিছু জলের দাম নেয় ৯০ টাকা। আবার ইস্পাত নগরীতে সংযোগ পিছু ১৭২ টাকা নেয় ডিএসপি। বাকি ওয়ার্ড, যেখানে পুরসভা জল সরবরাহ করে সেখানে সংযোগ পিছু বাসিন্দাদের দিত হয় ৭০ টাকা।

কেন এই বৈষম্য জানতে চাইলে মেয়র পারিষদ (জল সরবরাহ) প্রমোদ সরকার বলেন, “জল সরবরাহ করে যে অর্থ আদায় হয় এবং যা খরচ হয়, তার মাঝে বড় ফারাক থাকে। সেই অর্থ ভর্তুকি দেয় পুরসভা। সে জন্যই পুরসভা যে এলাকাগুলিতে জল সরবরাহ করে সেখানকার বাসিন্দাদের কম হারে দাম দিতে হয়।” পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, দামোদর ভ্যালি কপোর্রেশন থেকে জল কিনে সেই জল পরিশোধন করে সরবরাহ করে পুরসভা। ডিভিসি’র কাছ থেকে বছরে গড়ে ২৬ লক্ষ টাকা দিয়ে ১০০ লক্ষ গ্যালন জল কেনে তারা। সেই জল পরিশোধন করতে বিদ্যুৎ খরচ হয় ৩৬ লক্ষ টাকা। এছাড়া রাসায়নিক কেনা, রক্ষণাবেক্ষণ, কর্মীদের বেতন বাবদও বেশ কিছু খরচ হয়। সব মিলিয়ে বছরে প্রায় ৯ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা খরচ হয় বলে পুরসভার দাবি। অথচ জল সরবরাহ করে আদায় হয় ৫ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা। বাকি ৪ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা ভর্তুকি দেয় পুরসভা।

Advertisement

জঞ্জাল সাফাই বাদে ইস্পাত নগরীর যাবতীয় পরিষেবা দেয় ডিএসপি নিজেই। তাই সেখানে পুরসভার জল সরবরাহের সুযোগ নেই। কিন্তু ডিপিএল ও এডিডিএ যে এলাকাগুলিতে জল সরবরাহ করে, সে সব জায়গায় পুরসভা কেন জল সরবরাহ করে না? তাহলে দামে সমন্বয় আসবে বলে বাসিন্দাদের দাবি। তবে মেয়র পারিষদ প্রমোদবাবু জানিয়েছেন, পুরসভার বর্তমানে যা ক্ষমতা তাতে সর্বত্র জল সরবরাহ করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, “এডিডিএ বা ডিপিএল স্বশাসিত সংস্থা। পুরসভার পক্ষে ওই দুই সংস্থাকে জলের দাম নিয়ে কিছু বলার সুযোগ নেই।” তিনি জানান, ১৫ এমজিডি জলপ্রকল্প নির্মাণের কাজ শেষ হলে তখন বহু নতুন জায়গায় জল সরবরাহ করার মতো অবস্থায় পৌঁছবে পুরসভা। ভবিষ্যতে ডিপিএল শুধু তার নিজস্ব টাউনশিপেই জল সরবরাহ করবে। তখন ধাপে ধাপে সেই সব এলাকায় জল সরবরাহের দায়িত্ব নেবে পুরসভা। তিনি আরও বলেন, “আমরাও চাই শহরের সর্বত্র সবাই জলের জন্য সমান দাম দিক। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি আলাদা।” পুরসভার মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায় বলেন, “জলের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। সে কথা মাথায় রেখে নতুন জলপ্রকল্প তৈরি হচ্ছে। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে শহরের আরও কিছু নতুন অংশে জল সরবরাহ করতে পারবে পুরসভা। ধাপে ধাপে এলাকা বাড়ানো হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন