খনি-শিল্পাঞ্চলে সব থেকে বড় সমস্যা জলের সঙ্কট। এই ক’দিন প্রচারে বেরিয়ে তাঁর এমনটাই ধারণা হয়েছে বলে জানালেন আসানসোলের বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়। বুধবার অন্ডালে প্রচারে গিয়ে তিনি বললেন, “প্রতি দিন প্রচারে বেরিয়ে আমার ধারণা হয়েছে, জলই বড় সমস্যা এই কেন্দ্রে। জিতলে প্রথমে জল সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব।” এত দিন কেন এই সমস্যা মেটানোর ব্যাপারে উদ্যোগ হয়নি, সে নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
বাবুলের এই মন্তব্য প্রসঙ্গে এই কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী তথা সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরীর দাবি, তাঁরা একগুচ্ছ পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। কিন্তু রাজ্যে ক্ষমতা পরিবর্তনের পরে নতুন সরকার আর কোনও কাজ করেনি। তৃণমূল প্রার্থী দোলা সেনের পাল্টা বক্তব্য, “৩৪ বছরের বাম আমলে কোনও কাজ হয়নি। পাণ্ডবেশ্বরে অজয় এবং অন্ডাল-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় দামোদরের জল নিয়ে জলপ্রকল্প নির্মাণের কাজ চলছে। দ্রুত সে সব চালু হবে।”
এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ একটি গাড়িতে চড়ে আসানসোল থেকে অন্ডালে পৌঁছন বাবুল। সেখানে দলীয় কর্মী-সমর্থকেরা তাঁকে মালা পরানোর পরে একটি হুড খোলা পিক-আপ ভ্যানে অন্ডাল স্টেশনের দিকে এগিয়ে যান। পিছনে গাড়ি-মোটরবাইকে চড়ে পিছু নেন দলীয় কর্মীরা। কিছু দূর যেতেই দীর্ঘনালা গ্রাম। ষষ্ঠ শ্রেণির সুস্মিতা পাল অটোগ্রাফ নেওয়ার জন্য মা-বোনের সঙ্গে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়েছিল। হাত বাড়িয়ে তা হাত থেকে নোটবুক নিয়ে সযত্নে অটোগ্রাফ দিলেন বাবুল। এ ভাবে অসংখ্য স্বাক্ষর সংগ্রাহকের আশা মেটালেন তিনি।
প্রায় তিন কিলোমিটার গিয়ে অন্ডাল পোস্টঅফিস মোড়ে যখন পৌঁছালেন বাবুল, তখন ঘড়িতে ১১টা ৪০। ভ্যান থেকে নেমে হাঁটতে শুরু করলেন। কখনও তাঁকে বুকে টেনে নিলেন আশপাশের মানুষ, কখনও তিনি আলিঙ্গন করলেন রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজনকে। বারবার এমন দৃশ্য দেখে, পুলিশকর্মীরা তাঁকে ঘিরে তৈরি করলেন নিরাপত্তা বলয়। তবে তাতে কিছু আটকাল না। সেই বলয় ভেঙে কখনও দোকানে ঢুকে ব্যবসায়ীকে, কখনও বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা উত্সাহী মানুষকে জড়িয়ে ধরে ভোট দেওয়ার আবেদন জানালেন তিনি।
এরই মধ্যে এক ভুট্টা বিক্রেতা একটি ভুট্টা উপহার দিলেন বাবুলকে। কয়েক পা এগিয়েই রাস্তার পাশে টুপির দোকান দেখে ফের থমকে দাঁড়ালেন তিনি। ৪০ টাকা দিয়ে কিনে নিলেন সাদা রঙের একটি টুপি। সামনে লেখা ‘এম’। ভ্যানে চেপে ১৩ নম্বর রেল কলোনি, মদনপুর হয়ে বাসকা, রামপ্রসাদপুর, শ্রীরামপুরে প্রচার চালান বাবুল। দুপুরে এক প্রস্ত বিরতি। বিকেলে গেলেন দুবচুরুরিয়া। সেখান থেকে অন্ডাল মোড় হয়ে কাজোড়ায় শেষ করলেন প্রচার। অন্ডাল পোস্ট অফিস মোড়ের কাছে গায়কের সঙ্গে হাত মেলান নবগ্রাম পঞ্চায়েতের এক প্রাক্তন সিপিএম সদস্য। তিনি বলেন, “আবেগ সামলাতে পারলাম না। জনপ্রিয় গায়ক হিসেবেই হাত মেলালাম ওঁর সঙ্গে, প্রার্থী হিসেবে নয়।