অভিযুক্ত মহম্মদ সেলিম
কখনও কারখানা, কখনও স্কুল শাসকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে দাদাগিরির অভিযোগ উঠেই চলেছে।
ভাতারে ম্যানেজারকে মারধরের জেরে বন্ধ কাগজকল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত খোলেনি। এরই মধ্যে, বর্ধমান শহরের এক তৃণমূল কাউন্সিলরের লোকেদের কাজে না নেওয়ায় স্কুলের মিড-ডে মিল রান্না বন্ধ করানোর অভিযোগ সামনে চলে এল।
বর্ধমান রেলওয়ে বালিকা বিদ্যাপীঠ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা পম্পা সোম প্রায় সপ্তাহ তিনেক আগে মহকুমাশাসকের কাছে লিখিত ভাবে ওই অভিযোগ করেছিলেন। তাতে বলা হয়, স্থানীয় ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সৈয়দ মহম্মদ সেলিম স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর চার মহিলাকে বাদ দিয়ে রান্নার কাজে তাঁর লোকেদের নিতে হবে বলে দাবি করছেন। দলবল নিয়ে স্কুলে এসে রান্নার মহিলাদের হুমকিও দিয়েছেন। ১১ জুলাই থেকে মিড-ডে মিল বন্ধ হয়ে যায়। এ দিন পর্যন্ত তা চালু করা যায়নি। বিপাকে পড়েছে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির প্রায় সাড়ে তিনশো ছাত্রী। বর্ধমান (উত্তর) মহকুমাশাসক স্বপন কুণ্ডুর দাবি, প্রধান শিক্ষিকার চিঠি পেয়েই তিনি বর্ধমানের পুরপ্রধান স্বরূপ দত্তকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলে চিঠি (মেমো নং ২২৪৫/সিএস; তারিখ ১১/৭/২০১৪) লেখেন। কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা জানিয়ে রিপোর্টও দিতে বলেন। এ দিন মহকুমাশাসক বলেন, “পুরসভা থেকে কোনও রিপোর্ট পাইনি।” পুরপ্রধান আবার দাবি করেন, “মহকুমাশাসকের থেকে এমন কোনও চিঠিই পাইনি। পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।”
শহরের খালাসিপাড়া এলাকার ওই স্কুলে গোলমালের সূত্রপাত গত ৩ জুলাই। এক সপ্তাহ পরে প্রধান শিক্ষিকা মহকুমাশাসককে চিঠি দিয়ে অভিযোগ করেন, দলবল নিয়ে স্কুলে এসেছিলেন কাউন্সিলর। তাঁকে বলা হয়েছিল, পুরসভার পাঠানো স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর তালিকা থেকেই চার জনকে নিয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু তিনি তা বুঝতে চাননি। ৯ জুলাই তিনি এসে বলেন, তাঁর নির্দেশ ছাড়া কোনও কাজ করা যাবে না, তাঁর লোকেদেরই রান্নার কাজে বহাল করতে হবে।
স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর চার মহিলা বনশ্রী মাজি, মৌসুমি সাঁতরা, অনু দাস ও রূপালি সর্দার প্রধান শিক্ষিকাকে চিঠি দিয়ে অভিযোগ করেন, “...কাউন্সিলর কয়েক জনকে সঙ্গে নিয়ে এসে আমাদের বলেন, ‘তোমাদের বলে দিচ্ছি, সোমবার থেকে এখানে কাজে এলে নিজেদের দায়িত্বে আসবে।’ ...নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি।” গত ১০ জুলাই নিজের চিঠির সঙ্গে এই চিঠিটিও মহকুমাশাসককে পাঠিয়ে পম্পাদেবী লেখেন, “আমরা প্রত্যেকেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”
সেলিমের দাবি, “স্থানীয় বাসিন্দা ও তৃণমূলের মহিলা কর্মীরা প্রধান শিক্ষিকাকে অনুরোধ করেছিলেন, দরিদ্র মহিলাদের যেন কাজে নেওয়া হয়। কিন্তু অবস্থাপন্নদের নেওয়া হয়েছে। তাই মহিলারা ওঁকে ঘেরাও করেছিলেন। আমিই বরং ওঁকে ঘেরাওমুক্ত করি।”