ধৃত বিএসএফ কর্মী আদালতে। —নিজস্ব চিত্র।
সিআইডি-র নাম ভাঁড়িয়ে মাঝরাতে রাস্তায় লরি চালকদের কাছ থেকে তোলা আদায়ের অভিযোগে চার জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে কাঁকসার পানাগড়-মোরগ্রাম রাজ্য সড়কে ১১ মাইল এলাকা থেকে ধৃতদের মধ্যে এক জন বিএসএফ কর্মী। আটক করা হয়েছে ‘পুলিশ’ স্টিকার সাঁটানো একটি ছোট গাড়িও। বুধবার ধৃতদের আদালতে তোলা হলে বিএসএফ কর্মীকে পাঁচ দিন পুলিশি হেফাজত ও বাকিদের ১৪ দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত আড়াইটে নাগাদ খবর মেলে, জনা চারেক ব্যক্তি ১১ মাইলের কাছে পানাগড়-মোরগ্রাম রাজ্য সড়কে লরি আটকে টাকা আদায় করছে। পুলিশের টহলদার গাড়ি ওই এলাকায় গিয়ে দেখে, একটি ছোট গাড়ি রাস্তার পাশে রাখা আছে। কয়েক জন যুবক গাড়ি আটকে টাকা আদায় করছে। তাদের হাতেনাতে ধরে ফেলা হয়। পুলিশ জানায়, প্রাথমিক ভাবে সেখানেই ওই যুবকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সামনের কাচে ‘পুলিশ’ লেখা স্টিকার সাঁটানো ছোট গাড়িটি-সহ চার জনকে আটক করে কাঁকসা থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
পুলিশ জানায়, ধৃতদের মধ্যে পঙ্কজচন্দ্র দে বিএসএফের কর্মী। সে ওড়িশায় কর্মরত। বাড়ি দুর্গাপুর ইস্পাতনগরীর এ-জোন এলাকায়। ছুটিতে সে বাড়ি এসেছিল। বাকি তিন জনের মধ্যে চঞ্চল মল্লিক ও মিষ্টু বাউড়ি এ-জোনের এবং আনন্দ পাসোয়ান অন্ডালের বাসিন্দা।
পুলিশের দাবি, রাতে জেরায় ধৃতেরা জানায়, ওই ছোট গাড়িটি নিয়ে ঘুরতে বেরিয়ে রাস্তায় লরি থেকে তোলা আদায় শুরু করে তারা। রাতে ওই এলাকা এমনিতেই সুনসান থাকে। তারা ভেবেছিল, বিষয়টি বেশি জানাজানি হবে না। ‘পুলিশ’ লেখা গাড়ি থাকলেও কেউই পুলিশের পোশাকে ছিল না। তাই তারা নিজেদের সিআইডি হিসেবে পরিচয় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই মতো রাস্তার পাশে গাড়ি দাঁড় করিয়ে লরি আটকানো শুরু করে তারা। পুলিশের আরও দাবি, জেরায় জানা গিয়েছে, ওই বিএসএফ কর্মী নিজেকে গোয়েন্দা দফতরের আধিকারিক পরিচয় দিয়ে লরি চালকদের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় শুরু করে। বেশ কয়েকটি লরির কাছ থেকে টাকা আদায়ের পরই খবর যায় পুলিশের কাছে।
পুলিশ জানায়, ধৃত বিএসএফ কর্মীকে জেরা করে এ ধরনের ঘটনা তারা আগে ঘটিয়েছে কি না, আর কেউ জড়িত আছে কি না, সে সব জানার চেষ্টা হবে। গাড়িটি কার, সেটিতে ‘পুলিশ’ স্টিকার সাঁটানো কেন, তা-ও দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ জানায়।