আহতদের একজন। নিজস্ব চিত্র।
দিঘায় বর্ষবরণের পিকনিক করে ফেরার পথে গাড়ি উল্টে মৃত্যু হল চারজনের। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে হুগলির গুড়াপের কাছে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনাটি ঘটে। মৃত চারজনেই বর্ধমান শহর ও মেমারির বাসিন্দা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনটি পরিবারের দশ জন মিলে দিঘায় বেড়াতে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে দ্রুত গতিতে আসা গাড়িটির সঙ্গে একটি ট্রাকের ধাক্কা লাগে। তাতেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায় গাড়িটি। পরে ভোরের দিকে স্থানীয় বাসিন্দারা আহতদের কোনওরকমে ভোর নাগাদ বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকেরা ছোটনীলপুরের আমবাগান কলোনির বাসিন্দা রামপ্রসাদ বিশ্বাস (৫২) ও তনুশ্রী বিশ্বাস (৪৪) এবং মেমারির রক্ষাকালীতলার বাসিন্দা মা-মেয়ে, মালবিকা সরকার (৩৮) ও মৌসুমী সরকারকে (১৯) মৃত বলে জানান। বাকিদের আঘাত অবশ্য গুরুতর নয়। আহতদের মধ্যে দুর্গাপুরের অরবিন্দ থানা এলাকার বাসিন্দা দু’জনকে মিশন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সকালে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বসে মৃত মালবিকাদেবীর স্বামী শিশিরবাবু জানান, তিনি ও রামপ্রসাদবাবু প্রাক্তন সেনাকর্মী এবং পুরনো বন্ধু। বর্তমানে বর্ধমানের রাজবাটিতে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে কাজ করতেন তাঁরা। তিনি বলেন, “সবাই মিলে নতুন বছর একসঙ্গে কাটাতে গিয়েছিলাম। পথে রামপ্রসাদবাবুর ছেলে কাঁথিতে নেমে যায়। এ ভাবে স্ত্রী ও মেয়েকে হারিয়ে ফেলব ভাবিনি।” তাঁর দাবি, দীর্ঘক্ষণ আমাদের সকলে রাস্তায় পড়েছিলেন। সময়ে চিকিৎসা হলে হয়তো ওই চারজনকেও বাঁচানো যেত।
মোটরবাইকের সঙ্গে ট্রাকের ধাক্কা গেলে মারা গিয়েছেন শুভদীপ ঘোষাল (১৬) নামে এক যুবকও। ওই দিনই সন্ধ্যায় গলসি থানার রাকোনা মোড়ের কাছে দুর্ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, শুভদীপ তাঁর দুই ভাই জয়দীপ ও বুদ্ধদেবের সঙ্গে মোটরবাইকে চড়ে মানকরের বাড়ি থেকে গলসি যাচ্ছিলেন। পথে একটি ট্রাক তাদের বাইকে ধাক্কা মেরে পালায়। ওই অবস্থায় দীর্ঘক্ষন জিটি রোডে পড়েছিলেন তাঁরা। পুলিশ পরে ওই তিনজনকে উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিকাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে শুভদীপকে মৃত বলে জানানো হয়। শুভদীপ মানকর হাইস্কুলের উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষার্থী।