তৃণমূলের উচ্চ নেতৃত্ব যতই দলের কর্মীদের এক হয়ে কাজ করতে বলুক, নিচু তলায় সেই নির্দেশে এখনও কাজ হচ্ছে না। বর্ধমান-২ ব্লকের বড়শূল-১ পঞ্চায়েতে দলের প্রধানের বিরুদ্ধেই অনাস্থা এনেছেন তৃণমূল সদস্যদের একাংশ। বিক্ষুদ্ধ সদস্যদের দাবি, প্রধানের কাজে তাঁরা সন্তুষ্ট নন।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৮ ডিসেম্বর বর্ধমান-২ ব্লকের বিডিওর কাছে অনাস্থা আনতে চেয়ে চিঠি জমা পড়েছে। বিডিও কমলিকা মুখোপাধ্যায় বলেছেন, “এমন একটি চিঠি পেয়েছি। তবে কত জন সদস্য বা সদস্যা তাতে সই করেছেন, সেটা বলতে পারবো না। সব দিক খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ১১টি আসন বিশিষ্ট ওই পঞ্চায়েতে গত নির্বাচনে ১০টিতেই জিতেছিল তৃণমূল। একটি আসন পায় সিপিএম সমর্থিত নির্দল প্রার্থী। এই অনাস্থায় ৭জন তৃণমূল সদস্য সই করেছেন বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। এই চিঠিতে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের সাত সদস্য জনিয়েছেন, তাঁরা প্রধানের কাজে অনাস্থা প্রকাশ করছেন। প্রধান নানা উন্নয়নের কাজ বন্ধ করিয়ে দিচ্ছেন। এমনকী গ্রাম পঞ্চায়েতের অফিসে তিনি নিয়মিত আসেন না। এতে স্থানীয় জনগনের সমস্যা হচ্ছে। যদিও প্রধান সুতপাদেবী বলেছেন, “ওই চিঠিটির কোনও বাস্তব ভিত্তি নেই। বেশিরভাগ পঞ্চায়েত সদস্যই আমার দিকে রয়েছেন। অনাস্থাতেই তা প্রমানিত হবে।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন পঞ্চায়েত সদস্যের দাবি, প্রধানের কাজের সচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তিনি দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়ছেন। অভিযোগ, তাঁর নিজের গ্রামের এক ঠিকেদারকে বিধি ভেঙে ২৫ বস্থা সিমেন্ট পাইয়ে দিয়েছেন। কিন্তু তার পরেও ওই ঠিকেদার কাজ না করে পালিয়ে যায়। এছাড়াও টেন্ডার সংক্রান্ত গড়মিলের অভিযোগও উঠেছে প্রধানের বিরুদ্ধে। স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা বর্ধমান জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ গোলাম জার্জিস অবশ্য এই অনাস্থার বিরোধিতা করেননি। তিনি বলেন, “দলের সদস্য-সদস্যারাই চিঠিতে সই করেছেন, তাঁদের জোর করে আমরা ওই চিঠি প্রত্যাহার করতে বলবো না। গ্রাম পঞ্চায়েত চালানোর ব্যাপারে ওঁদেরও দায়ভাগ রয়েছে। তাই ওঁরা যা চেয়েছেন দল তাতে বাধা দেবেনা। ওই পঞ্চায়েতের প্রধানের কাজ চালানোর মত অন্য সদস্যা রয়েছেন। ফলে এই প্রধান সরে গেলেও সমস্যা নেই।”