ধান কাটা নিয়ে বিবাদ, পুড়ল বাড়ি

ভোট মিটতে না মিটতেই ধান কাটা নিয়ে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ বাধল মন্তেশ্বরে। সঙ্গে বোমাবাজি ও প্রায় ৩০টি বাড়িতে আগুন লাগানোর ঘটনাও ঘটেছে। শুক্রবার সকালে মন্তেশ্বরের বাঘনাপাড়া পঞ্চায়েতের তেঁতুলিয়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। পরে বর্ধমান সদর থেকে থেকে দুটি ও ভাতার থেকে একটি দমকলের ইঞ্জিন এসে আগুন নেভায়। পুলিশ জানায়, ওই গ্রামে টহলদারি চলছে। কয়েকজনকে আটকও করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মন্তেশ্বর শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৪ ০০:৫৮
Share:

পোড়া বাড়ি দেখছে পুলিশ।—নিজস্ব চিত্র।

ভোট মিটতে না মিটতেই ধান কাটা নিয়ে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ বাধল মন্তেশ্বরে। সঙ্গে বোমাবাজি ও প্রায় ৩০টি বাড়িতে আগুন লাগানোর ঘটনাও ঘটেছে।

Advertisement

শুক্রবার সকালে মন্তেশ্বরের বাঘনাপাড়া পঞ্চায়েতের তেঁতুলিয়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। পরে বর্ধমান সদর থেকে থেকে দুটি ও ভাতার থেকে একটি দমকলের ইঞ্জিন এসে আগুন নেভায়। পুলিশ জানায়, ওই গ্রামে টহলদারি চলছে। কয়েকজনকে আটকও করা হয়েছে।

তেঁতুলিয়া গ্রামে বোমাবাজি বা দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য কোনওটাই নতুন নয়। বছর খানেক আগেও কইসর শেখ নামে এক যুবক খুন হন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই যুবকের কাকা ফটিক শেখ ও তার গোষ্ঠীর ২৫ জন তারপর থেকেই গ্রামছাড়া ছিলেন। অভিযোগ তাদের গ্রামছাড়া করেন আরেক গোষ্ঠী কাশেম শেখ ও তার অনুগামীরা। তবে পঞ্চায়েত ভোটের প্রায় ২৫ দিন আগে গ্রামে ফেরেন ফটিক শেখ। এ দিকে, কাশেমের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকায় ভোটের আগে কাশেমকেও গ্রেফতার করে পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ফটিক ও তার দল সিপিএম সমর্থিত। আর তার পাল্টা গোষ্ঠী কাশেম তৃণমূলের হয়েই কাজ করে।

Advertisement

ব্লক তৃণমূলের অভিযোগ, এ দিন সকালে কাশেমের জনাকয়েক অনুগামী বিঘেখানেক জমিতে ধান কাটতে যায়। তখন ফটিক শেখের নেতৃত্বে পূর্বস্থলী, নদিয়া জেলার বেশ কিছু দুষ্কৃতী তাদের বাধা দেয়। বোমাবাজিও করে। মন্তেশ্বরের তৃণমূল ব্লক সভাপতি সজল পাঁজার দাবি, “সিপিএম কর্মী ফটিকের দলবল এলাকার নির্বাচারে বোমাবাজি করেছে। কাশেমের আত্মীয়-সহ প্রায় ৩০টি বাড়িতে আগুনও লাগিয়ে দিয়েছে।” তাঁর অভিযোগ, “আমি গ্রামে ঢুকতে গেলে আমার গাড়িতেও ফটিকের লোকজন ইট-পাটকেল ছোড়ে। তবে বাধা সরিয়ে গ্রামে গিয়েছিলাম। পরে পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দেয়।” এলাকাবাসীরা জানান, সকাল ৮টা থেকে ঘণ্টা দুয়েক বোমাবাজি চলে। শুধু ফটিকের লোকেরাই নয়, কাশেম গোষ্ঠীও বোমাবাজি করেছে বলে তাঁদের দাবি।

গ্রামে উত্তেজনার খবর পেয়ে বেশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন কালনার এসডিপিও ইন্দ্রজিৎ সরকার, সিআই রাকেশ মিশ্র ও মন্তেশ্বর থানার ওসি। তবে পুলিশ আসার খবর পেয়েই গোটা গ্রাম কার্যত পুরুষ-শূন্য হয়ে পড়ে। মহিলাদের ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে কান্নাকাটি করলেও মুখ খুলতে চাননি কেউই। সিপিএম অবশ্য তেঁতুলিয়া গ্রামে তাঁদের কর্মী থাকার কথা অস্বীকার করেছে। মন্তেশ্বরের সিপিএম বিধায়ক মহম্মদ চৌধুরী হেদায়তুল্লা বলেন, “বহু বছর ধরে তেঁতুলিয়ায় দু’গোষ্ঠীর লড়াইয়ের কথা শুনছি। শুক্রবার একটি জমিতে ধান কাটা নিয়ে উত্তেজনা হয়েছিল। তবে ওই গ্রামে আমাদের কোনও কর্মী নেই। ঘটনাটি অরাজনৈতিক।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন