দুর্গাপুরে বিক্ষোভ

নিয়মিত সাফাই হয় না শহরে, ক্ষোভ

পানীয় জল, নিকাশি-সহ নাগরিক পরিষেবাগুলি সংস্কারের আর্জি জানিয়ে দুর্গাপুর পুরসভার ডেপুটি মেয়রের কাছে মঙ্গলবার দাবিপত্র দিল পশ্চিমবঙ্গ বস্তি উন্নয়ন সমিতির দুর্গাপুর শহর কমিটি (২ পূর্ব)। ১৯৯৭ সালে ৪৩টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত হয় দুর্গাপুর পুরসভা। এর আগে দুর্গাপুরকে ‘নোটিফায়েড এরিয়া’ হিসাবে চিহ্নিত করা হত। পুরসভায় সিটি সেন্টার, বিধাননগরের মতো অভিজাত এলাকার পাশাপাশি রয়েছে রাতুড়িয়া-অঙ্গদপুরের মতো শিল্পতালুক। সঙ্গে রয়েছে পলাশডিহা, গোপালমাঠ, বীরভানপুরের মতো আদি গ্রাম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৪ ০০:১৫
Share:

বস্তি উন্নয়ন সমিতির অবস্থান। নিজস্ব চিত্র।

পানীয় জল, নিকাশি-সহ নাগরিক পরিষেবাগুলি সংস্কারের আর্জি জানিয়ে দুর্গাপুর পুরসভার ডেপুটি মেয়রের কাছে মঙ্গলবার দাবিপত্র দিল পশ্চিমবঙ্গ বস্তি উন্নয়ন সমিতির দুর্গাপুর শহর কমিটি (২ পূর্ব)।

Advertisement

১৯৯৭ সালে ৪৩টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত হয় দুর্গাপুর পুরসভা। এর আগে দুর্গাপুরকে ‘নোটিফায়েড এরিয়া’ হিসাবে চিহ্নিত করা হত। পুরসভায় সিটি সেন্টার, বিধাননগরের মতো অভিজাত এলাকার পাশাপাশি রয়েছে রাতুড়িয়া-অঙ্গদপুরের মতো শিল্পতালুক। সঙ্গে রয়েছে পলাশডিহা, গোপালমাঠ, বীরভানপুরের মতো আদি গ্রাম। আবার শহরের লেবারহাট, পলাশতলা, জেসি বোস-আইনস্টাইন এলাকায় রয়েছে বস্তির মতো এলাকাও। ওই এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, কোথাও নিয়মিত পানীয় জল মেলে না, আবার কোথাও শৌচাগারের সংখ্যা কম। কোথাও বা নিয়মিত সাফাই না হওয়ায় নিকাশি ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।

দুর্গাপুর পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত আইনস্টাইন জেসি বোস বস্তি এলাকা। বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেল, ওই এলাকায় পানীয় জলের জন্য ভরসা করতে হয় কুয়োর উপর। এলাকার বাসিন্দা প্রদীপ ভট্টাচার্য জানান, “পুরসভার তরফে বেশ কয়েকটি কুয়ো তৈরি করা হলেও অধিকাংশই ব্যবহার করা যায় না।” কয়েকটি এলাকায় আবার জলের পাইপলাইন থাকলেও রাস্তার কলের সংখ্যা খুবই কম থাকায় সমস্যায় পড়েন বাসিন্দারা। বাসিন্দারা জানান, দিনে মাত্র দু’বার জল আসে। তাতে ঘরের দৈনন্দিন কাজই করা যায় না। তাঁরা দ্রুত কুয়ো বা নলকূপ তৈরির দাবি করেছেন।

Advertisement

অনেক বস্তি এলাকাতেই আবার কমিউনিটি শৌচাগারের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম। এর জেরে সমস্যায় পড়ছেন বাসিন্দারা। লাইটপোস্ট থাকলেও বহু এলাকায় আলো জ্বলে না বলে অভিযোগ।

কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, সড়ক সম্প্রসারণের জন্য জাতীয় সড়কের পাশে বসবাসকারী বিভিন্ন এলাকায় উচ্ছেদের নোটিশ দিয়েছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। কমিটির দাবি, দুর্গাপুর পুরসভা জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নিক। কমিটির সভাপতি আয়ুব আনসারি জানান, নিজস্ব মালিকানাধীনরা ক্ষতিপূরণ পাবেন। কিন্তু বস্তিবাসীদের কোথাও যাওয়ার থাকবে না, তাই পুনর্বাসনের আর্জি জানানো হয়েছে। বস্তিবাসীদের তরফে অভিযোগ, সরকার ইকনমিক্যাল সার্ভে করলেও, বস্তি এলাকার মানুষ সেই শুনানিতে অংশ নিতে পারেন নি। ওই এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, পুরসভা বিভিন্ন এলাকায় শুনানির ব্যবস্থা করে প্রকৃত বিপিএল তালিকা তৈরি করুক। কমিটির আরও দাবি, পুরসভা বাজেটের ২৫ শতাংশ অর্থ বস্তিবাসীদের উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ করতে হবে। এছাড়া বিভিন্ন বস্তি এলাকায় পরিবারের সংখ্যা বিচার করে শৌচাগারের ব্যবস্থা, পানীয় জলের সমস্যা সমাধান, উপযুক্ত আলোর ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্রগুলির পরিকাঠামোগত উন্নয়নের দাবিও জানানো হয়েছে। বিভিন্ন বস্তিতে লাইটপোস্টে আলোর ব্যবস্থা করতে হবে।

এ দিন বিকেলে পুরসভার সামনে একটি সভাও করা হয়। ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক সুখরঞ্জন দে, জেলা সম্পাদক মহাব্রত কুণ্ডু প্রমুখ। মেয়র উপস্থিত না থাকায় দাবিপত্রটি ডেপুটি মেয়রের কাছে দাবিপত্র দেওয়া হয়। দুর্গাপুর পুরসভার ডেপুটি মেয়র অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, পুনর্বাসনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। বাকি দাবিগুলিও খতিয়ে দেখা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন