কলেজ ঘুরে দেখছেন মন্ত্রীরা। —নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যের শস্যগোলা হিসেবে পরিচিত বর্ধমান জেলায় সরকারি ভাবে যাত্রা শুরু করল কৃষি কলেজ। গত ৯ জুলাই বর্ধমানের ঝিঙুটির সরকারি সভা থেকে বর্ধমানের কৃষি খামারে তৈরি হওয়া এই কলেজটির উদ্বোধন করেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার এই কলেজের শিক্ষা বিভাগের উদ্বোধন করেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু। ইতিমধ্যেই গত ২২ জুলাই খেকে ওই কলেজের প্রথম সেমেষ্টারের ক্লাস শুরু হয়ে গিয়েছে। এই কলেজ চালু হওয়ার ফলে বর্ধমানের মত কৃষি নির্ভর জেলা উপকৃত হবে বলেই মনে করছেন সরকারি কৃষি কর্তারা।
জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই কলেজটি হল নদিয়ার বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্প্রসারিত ক্যাম্পাস। আপাতত এখানে স্মাতক স্তরে চার বছরের পাঠক্রম পড়ানো হবে। রয়েছে ৩৩টি আসন। বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য বিশ্বপতি মণ্ডল বলেন, “পরে এই কলেজে আসন বাড়িয়ে ৬০টি করা হবে।” এর আগে রাজ্যে তিনটি নতুন কৃষি কলেজ তৈরির কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বর্ধমান জেলার কলেজটি তৈরি হলেও পূর্ব মেদিনীপুর ও বাঁকুড়ায় অন্য দু’টি কলেজ কবে চালু হবে, সে নিয়ে অবশ্য কিছু জানানো হয়নি। সহ উপাচার্য জানান, কলেজটি তৈরি করতে পাঁচ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। সময় লেগেছে ছ’মাস। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার বিজ্ঞান শাখায় যারা কমপক্ষে ৮৭.৭৫ শতাংশ নম্বর পাবেন, তারাই এই কলেজে ভর্তি হওয়ার আবেদন করতে পারবেন। আপাতত বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা এসে এই কলেজে ক্লাস করছেন। পরে নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ করা হবে।
মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার বলেন, “কৃষকের অবদানকে অস্বীকার করে কৃষি কলেজ চালানো সম্ভব নয়। মনে রাখতে হবে, এই কলেজ আসলে কৃষকের জন্য। এখানে যাঁরা পড়তে আসবেন, তাঁরা যাতে শুধু ডিগ্রি নিয়ে বসে না থেকে মাঠে নামেন সে দিকে নজর রাখতে হবে।”
বুধবারের অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু বলেন, “চাষিদের রোজগার বাড়ানোর জন্যও উদ্যোগী হতে হবে। উৎপাদন বা বাজারই বড় নয়। চাষি না বাঁচলে আমরা কেউই বাঁচতে পারব না।” পূর্ণেন্দুবাবু জানান, রাজ্যে ধানের সঙ্গে গম, পাট ও চা চাষের দিকেও জোর দেওয়া উচিত। কেন্দ্রীয় কৃষি প্রকল্পগুলিকে রাজ্যর পরিকাঠামো অনুসারে কাজে লাগালে কৃষিতে রাজ্য উৎপাদন বাড়বে বলেও জানান তিনি। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলার মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ ও কৃষি প্রতিমন্ত্রী বেচারাম মান্না। চাষিদের ছেলেমেয়েরা যাতে এই কলেজে পড়ার সুযোগ পায় তার জন্য আবেদন করেন স্বপনবাবু। বেচারামবাবু অভিযোগ করেন, “আগে বামফ্রন্ট সরকার আলু বীজ তৈরির দিকে নজর দেয়নি। ফলে প্রতি বছরই পঞ্জাব থেকে আলুর বীজ কিনতে হয়।” তাঁর দাবি, রাজ্যে আলু বীজ তৈরি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই কাজে সহযোগিতা করছে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।