আদালতে পেশ করা নথিতে গোলমাল থাকায় শো-কজ করা হল এক এএসআইকে। দীপঙ্কর মুখোপাধ্যায় নামে নাদনঘাট থানার ওই এএসআইকে ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে জবাব জানাতে বলা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বছরের ১২ নভেম্বর পূর্বস্থলী ১ ব্লকের নাদনঘাট কো-অপারেটিভ সোসাইটির অন্তর্গত দক্ষিনবাটী, সিংহজুলি এবং সমুদ্রগড়ের ৫টি সাবমার্সিবল পাম্পে বৈদুতিন সংযোগের কাজে ব্যাবহৃত কিছু কেবল তার চুরি যায়। পরের দিন সকালে ১০টা পাঁচ নাগাদ ওই সংস্থার ম্যানেজার আবদুল হামিদ শেখ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। তাতে অবশ্য সন্দেহভাজন হিসাবে কারও নাম ছিল না। চুরির ঘটনার তদন্তে নেমে সাইদ শেখ এবং সঞ্জয় মাঝি নামে দু’জনকে গ্রেফাতার করে পুলিশ। ২৯ নভেম্বর তাদের আদালতে তোলা হয়। তবে ওই দিনই আদালতের কাছে লিখিত অভিযোগ করে সাইদ শেখের আইনজীবী চঞ্চল রাহা জানান (কেস নম্বর ২৮৪/১৪), পুলিশের পেশ করা তথ্যে অসঙ্গতি রয়েছে। চঞ্চলবাবুর দাবি, পুলিশের গ্রেফতারের মেমোতে লেখা হয়েছে ১৩ তারিখ ভোর তিনটে এবং তিনটে পাঁচ মিনিট নাগাদ ওই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। আইনজীবীর প্রশ্ন, যদি ১৩ তারিখেই ওই দু’জনকে ধরে পুলিশ, তাহলে এত দিন নিজেদের হেফাজতে আটকে রাখল কীভাবে? কারণ নিয়ম অনুযায়ী, গ্রেফতারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধৃতকে আদালতে পেশ করতে হয়। তাঁর আরও প্রশ্ন, পুলিশের কাছে সমবায়ের ম্যানেজার ১৩ তারিখ বেলা ১০টা পাঁচ নাগাদ অভিযোগ করেন। তাহলে সাত ঘণ্টা আগে ভোর ৩টের সময়ে পুলিশ অভিযুক্তদের ধরল কীভাবে? আইনজীবী এই তথ্য পেশ করার পরে ভারপ্রাপ্ত এসিজেএম সৌরভ আদক নির্দেশ দেন, ২ ডিসেম্বর ঘটনার তদন্তকারী অফিসারকে আদালতে হাজির হয়ে অসঙ্গতির ব্যাখ্যা দিতে হবে।
নির্দেশ মেনে মঙ্গলবার দীপঙ্করবাবু আদালতে হাজির হন। চঞ্চলবাবু জানান, আদালতে দীপঙ্করবাবু ভুল হয়েছে বলে দাবি করেন। তবে তাঁর জবাবে বিচারক সন্তুষ্ট হননি বলে জানা গিয়েছে। এসিজেএম আদলতের বিচারক মধুমিতা রায় এ দিন নাদনঘাট থানার ওই এএসআইকে শো-কজের নির্দেশ দেন। সেখানে কেন তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়। ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে ওই জবাব পাঠাতে বলা হয়েছে। ধৃত দু’জনেই জামিন পেয়ে গিয়েছে এ দিন।
পরে দীপঙ্করবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “ভুলবশত অ্যারেস্ট মেমোতে ১৩ তারিখ লেখা হয়ে গিয়েছিল। আদালতকে তা জানানো হবে।”