পুরভোটের আগে সক্রিয় সদস্যের খোঁজ সিপিএমে

সম্প্রতি হয়ে যাওয়া জেলা সিটু সম্মেলনে নেতারা বারবার জোর দিয়েছিলেন নতুন মুখ তুলে আনার উপর। তার আগে সিপিএমের জেলা কমিটিও একই ভাবে আত্মসমালোচনা করেছিল। ঝুঁকি নেওয়ার কথা বলেছিল নেতা-কর্মীদের। ফলে বলা যায়, পুরভোটের আগে জেলা জুড়ে সব স্তরের সংগঠনকে চাঙ্গা করতে নতুন মুখ, নতুন চিন্তা চাইছে সিপিএম।

Advertisement

রানা সেনগুপ্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৫ ০১:৪৬
Share:

সম্প্রতি হয়ে যাওয়া জেলা সিটু সম্মেলনে নেতারা বারবার জোর দিয়েছিলেন নতুন মুখ তুলে আনার উপর। তার আগে সিপিএমের জেলা কমিটিও একই ভাবে আত্মসমালোচনা করেছিল। ঝুঁকি নেওয়ার কথা বলেছিল নেতা-কর্মীদের। ফলে বলা যায়, পুরভোটের আগে জেলা জুড়ে সব স্তরের সংগঠনকে চাঙ্গা করতে নতুন মুখ, নতুন চিন্তা চাইছে সিপিএম। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মেমারিতে আসন্ন পুরভোটে সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপাবে দল। প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে জোর দেওয়া হবে নতুন মুখের উপরেও।

Advertisement

মাসখানেক আগে সিপিএমের ২৩ তম খসড়া রাজনৈতিক সাংগঠনিক রিপোর্টে স্বীকার করে নেওয়া হয় যে ঝুঁকি নিতে চাইছেন না অনেক প্রবীণ নেতা। বলা হয়, “আক্ষেপের সুরে বলতে হয়, সাধারণ জনগণ যে ঝুঁকি নিয়ে এগিয়ে যেতে চান, সাহস ও আত্মবিশ্বাস দেখান, অনেক জোনাল কমিটির সদস্য সুখ-স্বাচ্ছন্দে বসবাস করবার মানসিকতা থেকেই হোক কিংবা অন্য কারণেই হোক এই ঝুঁকি নিতে সাহস দেখাচ্ছেন না। জোনাল কমিটির সদস্যরা অনেক বেশি সক্রিয়তা দেখাতে না পারলে লোকাল কমিটিকে সচল রাখা যায় না।” দলের শাখা সংগঠনের অনেক সদস্য যে আগের তুলনায় সংগঠনকে শক্তিশালী করার দিকে নজর দিচ্ছেন না, বরং অনেকেই গয়ংগচ্ছ ভাবে চলছেন সে কথাও কবুল করা হয়।

রিপোর্টে উষ্মা প্রকাশ করা হয় মহিলা পার্টি সদস্যর সংখ্যা ও হার বৃদ্ধি না পাওয়া নিয়েও। বলা হয়, “মহিলা গনফ্রন্টটি বর্তমান ভয়ভীতি ও প্রতিকূল অবস্থায় যেভাবে যোগ দিচ্ছে (তাঁদের) পার্টির অভ্যন্তরে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে তার প্রতিফলন ঘটছে না।” যুবদের ক্ষেত্রে নতুন প্রজন্মের এক বড় অংশ যে আগ্রহ হারাচ্ছেন সিপিএমে সে কথাও বলা হয়েছে। রিপোর্টে সিপিএম জোর দিয়েছে নতুন কর্মী খুঁজে বের করার কাজে। অসংখ্য মানুষ যে দলের কর্মসূচিতে নীরবে যোগদান করেও উপেক্ষিত রয়ে যাচ্ছেন, তা-ও স্বীকার করা হয়েছে ওই রিপোর্টে।

Advertisement

বলা হয়েছে, “বেশ কিছু কর্মসূচিতে নজরে আসছে উল্লেখযোগ্য পার্টি সদস্য কর্মসূচিতে অংশ গ্রহন করছেন না, অথচ হাজার হাজার মানুষ মিছিল-সমাবেশে অংশ গ্রহন করছেন, তাহলে কারা কুশীলবের ভূমিকা নিয়ে নতুন ভাবে সংগঠনের ভিত্তি রচনা করছে তা যদি গভীর ভাবে খুঁজে না দেখি, তাদের এই ঝুঁকিপূর্ণ ভূমিকাকে নথিভূক্ত না করি, তাহলে এক ঝাঁক নতুন কর্মীকে আমরা হারাব।” সম্প্রতি ব্রিগেডে হয়ে যাওয়া সিপিএমের রাজ্য্য সম্মেলনেও বহু কর্মী-সমর্থককে মাঠে দেখআ গিয়েছে। বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছেন, ভোটে এই ভিড়ের ছাপ কোথায়?

তবে এই নতুন কর্মীদের খোঁজার দায়িত্ব দলের সেই অংশের হাতে ছেড়ে দেওয়া যাবে না, যাঁরা অংশ পার্টির নিজ স্তরে কমিটি সভায় যোগদান করেন, উচ্চতর কমিটির সাথে যোগাযোগ রাখেন কিন্তু জনগনের সাথে বা সাধারণ কর্মী সমর্থকদের সাথে কোনও সম্পর্ক রাখেন না এমনটাও বলা হয়েছে রিপোর্টে।

সিপিএমের নতুন জেলা কমিটির সম্পাদক অচিন্ত্য মল্লিকের দাবি, “এই সময়ের মধ্যে আমাদের দলে অনেক নতুন সদস্য যোগ দিয়েছেন। সমস্ত গনফ্রন্টেও সদস্য সংখ্য বাড়ছে। এ বার আমাদের কাজ তাঁদের তুলে আনা। দলের সব সদস্য তো আর নিষ্ক্রিয় নন। বরং তাঁদের সংখ্যা কম। সক্রিয় সদস্যের সংখ্যাই বেশি। সেই সক্রিয় সদস্যদেরই খুঁজে বের করতে হবে নতুন কর্মীদের। এটা তাঁদেরই দায়িত্ব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন