প্রশাসনের উদ্যোগে দু’বছর পরে শিকল খুলল সুকুমারের

ভরদুপুরে হাত ও পায়ে শিকল বাঁধা অবস্থায় খান্দরা-বিশ্বেশ্বরী এলাকায় ঘোরাফেরা করছিল বছর পঁচিশের এক যুবক। পরে বিডিওর হস্তক্ষেপে তাঁর হাত-পায়ের বাঁধন খুলে দেয় পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ওই যুবকের নাম সুকুমার বাউরি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

অন্ডাল শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৪ ০৭:০৩
Share:

শিকল বাঁধা সুকুমারের সঙ্গে কথা বলছেন এক যুবক। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ।

ভরদুপুরে হাত ও পায়ে শিকল বাঁধা অবস্থায় খান্দরা-বিশ্বেশ্বরী এলাকায় ঘোরাফেরা করছিল বছর পঁচিশের এক যুবক। পরে বিডিওর হস্তক্ষেপে তাঁর হাত-পায়ের বাঁধন খুলে দেয় পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, ওই যুবকের নাম সুকুমার বাউরি। তাঁর বাড়ি লাউদোহার পানশিউলি এলাকায়। তাঁর মা ফেলাদাসী বাউড়ি কয়েক বছর আগে মারা যান। বাবা হারু বাউড়ি পেশায় দিনমজুর। কয়েক বছর আগেই সুকুমারের আচরণে অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল। মা মারা যাওয়ার পরে তাঁর মামা চন্দু বাউড়ি তাকে নিয়ে চলে আসেন। তারপর থেকে সে পাণ্ডবেশ্বরের জোয়ালভাঙার মামার বাড়িতেই থাকত। প্রায় বছর দু’য়েক ধরে তাঁর হাতে-পায়ে শিকল বাঁধা রয়েছে। এই অবস্থাতেই বাড়ির বাইরে ঘোরাফেরা করত সে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এ দিন সকালে প্রথমে ওই যুবককে নতুন জামা কিনে দেওয়া হয়। তারপরে খবর দেওয়া হয় অন্ডালের বিডিও মানস পাণ্ডেকে। মানসবাবু অন্ডাল থানাকে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখতে বলেন। মানসবাবু বলেন, “আমরা বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিতে দেখছি। ওই যুবকের পুরো চিকিৎসা প্রশাসনের পক্ষ থেকে করা হবে।”

অন্ডাল থানার ওসি তাপস পাল জানান, এ দিন একটি কামারশালে নিয়ে গিয়ে সুকুমারের হাত ও পায়ের শিকল কাটানো হয়। তারপরে অন্ডালের খান্দরা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে তাঁর চিকিৎসা করানো হয়। পরে সেখান থেকেই সুকুমারের মামা তাঁকে বাড়ি নিয়ে যান। ব্লক প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রের বিএমওএইচ ধীমান মণ্ডল বলেন, “সুকুমার বাউরি সম্পূর্ণ মানসিক রোগীতে পরিণত হয়েছেন। এই সময়ে বাড়ির মানুষের সহানুভূতি খুব প্রয়োজন।”

Advertisement

এলাকার জেলা পরিষদ সদস্য নরেন চক্রবর্তী জানান, সুকুমারের বাবা এবং মামা দু’জনেই দিনমজুরের কাজ করেন। তিনি বলেন, “প্রয়োজনে ঊর্ব্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে ওই যুবককে রাঁচিতে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানোর আবেদন করব।” সুকুমারের মামা চন্দু বাউড়ির দাবি, “অর্থের অভাবে আমরা সুকুমারের ভাল চিকিৎসা করাতে পারিনি। ও অস্বাভাবিক আচরণ করাই জন্য আমি শিকল বেঁধে রাখা হয়েছিল।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন