হাসপাতালে নিতাইবাবু। —নিজস্ব চিত্র।
গ্রামের এক যুবতীকে খুনের দায়ে পুলিশ তাঁকে বাড়ি থেকে মারতে মারতে তুলে নিয়ে গিয়েছিল। তারপর থেকেই অসুস্থ তিনি। টাকার টানাটানিতে চিকিত্সাও সেভাবে করাতে পারেননি বুধবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি নিতাই দাসকে দেখতে এসে এমনই অভিযোগ করলেন মানবাধিকার সংগঠনের সদস্যরা।
তাঁদের অভিযোগ, বছর তিনেক আগে গ্রামের এক যুবতীকে খুনের অভিযোগে নিতাইবাবুকে ধরে নিয়ে যায় রায়না থানার পুলিশ। লকআপে রেখে চরম অত্যাচার চলে। তিন দিন পরে গ্রেফতার না দেখিয়েই ছেড়ে দেওয়া হয়। তারপর থেকেই গুরুতর অসুস্থ বিশ্বেশ্বরবাটি গ্রামের বাসিন্দা নিতাই দাস। গত বছর ১০ অক্টোবর বিষয়টি নিয়ে রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের কাছে চিঠি পাঠায় বর্ধমানের একটি সংগঠন। ওই সংগঠনের প্রধান কাজী রফিক শেখ অভিযোগ করেন, নিতাই দাস তাঁদের কাছে জানিয়েছেন, পুলিশের অত্যাচারে তিনি পুরোপুরি অকর্মন্য হয়ে পড়েছেন। আর্থিক সমস্যার কারণে গত তিন বছর ধরে তাঁর কোনও চিকিত্সাও হয়নি। যেহেতু পরিবারের একমাত্র রোজগার তিনি করতেন তাই তাঁর অসুস্থতার কারণে পরিবারটিও অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। এই অভিযোগ হাতে পেয়ে রাজ্য মানবাধিকার রক্ষা কমিশনের রেজিষ্ট্রার গত ১৭ ডিসেম্বের একটি চিঠিতে বর্ধমানের তত্কালীন এসপির কাছে রিপোর্ট তলব করেন। ওই রিপোর্ট চার সপ্তাহের মধ্যে দিতে নির্দেশও দেওয়া হয়। তারপরেও পুলিশের তরফে কোনও উদ্যোগ করা হয় নি বলে অভিযোগ।
বর্ধমানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর তরুন হালদার বলেন, “ওই ঘটনারটির কথা মনে পড়ছে না। তা ছাড়া আমি অফিসের বাইরে রয়েছি। তাই মানবাধিকার রক্ষা কমিশনের কাছে কি রিপোর্ট পাঠানো হয়েছিল তা বলতে পারছি না।”
কাজি রফিকেরা এ দিন জানান, সোমবার নিতাই দাস গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বুধবার এমআরআই করানো হয়েছে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার উত্পলকুমার দাঁ বলেন, “যতদূর জানি ওই ব্যক্তি স্নায়ুঘটিত অসুস্থতায় ভুগছেন। লিভারের সমস্যাও রয়েছে। বুধবার আমার সঙ্গে একটি মানবাধিকার সংগঠনের সদস্যেরা দেখা করেছিলেন। ওই ব্যক্তির চিকিত্সা নিয়ে তাঁরা খোঁজখবর করেছেন।”