বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে গিয়ে গোষ্ঠীকোন্দল নিয়ে বার্তা মন্ত্রীর

দলের বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে গিয়েও গোষ্ঠী-কোন্দল নিয়ে কড়া বার্তা দিতে হল মন্ত্রীকে। শনিবার বিকেলে পূর্বস্থলীর থানার মাঠে বিজয়ী সম্মিলনীর আয়োজন করে ব্লক তৃণমূল। সেখানেই বিধায়কের অভিযোগ পেয়ে জেলা সভাপতি (গ্রামীণ) তথা মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, “কাউকে অসম্মানিত করে দল করা যাবে না। কারও অভিযোগ থাকতে পারে। তবে তা শোনার সহনশীলতা দলের আছে।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পূর্বস্থলী শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৪ ০০:৪৭
Share:

পূর্বস্থলী থানার মাঠে চলছে অনুষ্ঠান। নিজস্ব চিত্র।

দলের বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে গিয়েও গোষ্ঠী-কোন্দল নিয়ে কড়া বার্তা দিতে হল মন্ত্রীকে।

Advertisement

শনিবার বিকেলে পূর্বস্থলীর থানার মাঠে বিজয়ী সম্মিলনীর আয়োজন করে ব্লক তৃণমূল। সেখানেই বিধায়কের অভিযোগ পেয়ে জেলা সভাপতি (গ্রামীণ) তথা মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, “কাউকে অসম্মানিত করে দল করা যাবে না। কারও অভিযোগ থাকতে পারে। তবে তা শোনার সহনশীলতা দলের আছে।”

পূর্বস্থলী ২ ব্লকে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব এর আগেও প্রকাশ্যে এসেছে। একদিকে পূর্বস্থলী উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়, আরেক দিকে জেলা পরিষদের সদস্য বিপুল দাসের মধ্যে মতভেদ, তিক্ততা দলের নানা কর্মসূচি, অনুষ্ঠানেও প্রকাশ হয়ে পড়ছে বলে দলেরই একাংশের মত। শনিবারের বিজয়া সম্মিলনীর মূল উদোক্তা ছিলেন তপনবাবু। বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের ১৫টি পঞ্চায়েত এলাকা থেকে ট্রাক্টর, ভ্যান-সহ নানা যানবাহনে কয়েক হাজার মানুষ জমা হতে থাকেন থানার মাঠে। বিজয়া সম্মিলনী কার্যত জনসভার চেহারা নেয়। অনেকেই বলাবলি শুরু করেন, বিধায়ক নিজের ক্ষমতা জাহির করতেই এমন বন্দোবস্ত করছেন। অনুষ্ঠানে স্বপনবাবু ছাড়াও ব্লক পর্যায়ের বিভিন্ন নেতাও হাজির ছিলেন। স্থানীয় নেতাদের বক্তব্য শেষে স্বপনবাবুকে বক্তব্য রাখার অনুরোধ করা হয়। মন্ত্রী মাইক হাতে নিতেই মঞ্চের নীচ থেকে তপনবাবুর গলা ভেসে আসে। সামনে বসা দলীয় কর্মী সমর্থকদের উদ্দেশ্যে করি তিনি বলেন, “আমরা তো সাধারণ তৃণমূল কংগ্রেস। এখানে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস রয়েছে। যাঁরা পূর্বস্থলীতে দলীয় পতাকা ব্যবহার করে নানা অসামাজিক কাজকর্ম করছে, আমাদের লোকজনের উপর হামলা চালাচ্ছে।” শনিবারও সভায় আসার পথেও হাপানিয়া-সহ কয়েক জায়গায় দলীয় কর্মীদের আসতে বাধা দেওয়া হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। শেষে জেলা সভাপতিকে পুরো বিষয়টি দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন তিনি।

Advertisement

তপনবাবুর মন্তব্য শেষ হতেই ফিসফাস শুরু হয়, যে বিরুদ্ধে গোষ্ঠীকে তোপ দাগছেন তিনি। এরপরেই নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্য করে স্বপনবাবু বলেন, “সবাই কান খুলে শুনে রাখুন, এই ব্লকের দলীয় ব্লক সভাপতি বদরুল আলম এবং দলীয় বিধায়ক তপনকে অসম্মানিত করে কেউ দল করতে পারবেন না। কারও কিছু অভিযোগ থাকতে পারে, তা শোনার মতো সহনশীলতা রয়েছে।” তাঁর দাবি, অন্য দল থেকে আসা লোকজনদের সম্মান দেয় তৃণমূল। সভায় জনসমাগম দেখে তপনবাবুর প্রশংসা করেন তিনি। আরও জানান, লোকসভা নির্বাচনে দলের মধ্যেই অনেকে বলেছিলেন যে পূর্বস্থলী উত্তর কেন্দ্রে ভরাডুবি হবে। অথচ ফল বেরোতে দেখা যায় জয়ের ব্যবধান ১৫ হাজারেরও বেশি। মন্ত্রীর দাবি, সভায় আসা লোকজনই বলে দিচ্ছে, মানুষ এখানকার বিধায়কের পাশে রয়েছে। কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলার প্রসঙ্গ তুলে পুলিশকেও দ্রুত ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন তিনি।

পরে রবিবার সকালে বিপুলবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমাকে যে শনিবারের সভা থেকে হুমকি দেওয়া হয়েছে তা শুনেছি। এ ব্যাপারে আমি যা জানানোর উচ্চ নেতৃত্বকে জানাব।” তাঁর দাবি, রক্তদান অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে পূর্বস্থলীতে যা করা হয়েছে সবই দলের উচ্চ নেতৃত্বের অনুমতিতেই হয়েছে। হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে তাঁর গোষ্ঠীর কয়েকজনকেই মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগও করেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন