একশো দিনের কাজের বকেয়া মজুরি চেয়ে পঞ্চায়েত দফতরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন শ্রমিকেরা। করেছিলেন অবরোধও। অভিযোগ, অবরোধ তুলতে গিয়ে হেনস্থা হন বিডিও। আবার অবরোধকারীদের উপরে পাল্টা বোমাবাজি করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার বিকেলে বর্ধমানের মঙ্গলকোটের গোতিষ্ঠা গ্রামে বোমার ঘায়ে জখম হন চার জন। তৃণমূল অবশ্য বোমাবাজির অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের পাল্টা দাবি, বকেয়া মজুরি চাওয়ার নাম করে এ দিন ওই এলাকায় তাণ্ডব চালিয়েছে সিপিএম। তাদের হাতে বিডিও ছাড়াও গোতিষ্ঠা পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান আক্রান্ত হয়েছেন। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সিপিএমের বক্তব্য, বকেয়া মজুরির সমস্যা থেকে নজর ঘুরিয়ে দিতে চাইছে শাসক দল। পুলিশের দাবি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গ্রামে গেলে তারা স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভের মুখে পড়ে। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, কাশিয়াড়া, কাশেমনগর ও দীর্ঘসোঁয়া গ্রামের প্রায় শ’দুয়েক বাসিন্দা এ দিন বেলা ১১টা থেকে গোতিষ্ঠা গ্রাম পঞ্চায়েত দফতরে ১০০ দিনের প্রকল্পে বকেয়া মজুরি চেয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁদের অভিযোগ, আট মাস আগে কাজ করলেও ৪৫০ জন শ্রমিক ২৫ দিনের মজুরি পাননি এখনও। মাস দুয়েক আগে ব্লক প্রশাসন তাদের সাত দিনের মধ্যে মজুরি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু প্রতিশ্রুতি পূরণ না হওয়ায় শ্রমিকেরা এ দিন ফের আন্দোলনে নামেন। পঞ্চায়েত দফতরে বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি তাঁদের একাংশ নতুনহাট-গুসকরা রাস্তায় বসে পড়েন। থেমে যায় যান চলাচল।
পুলিশ সূত্রের দাবি, বেলা ১২টা নাগাদ পুলিশ অবরোধ তুলতে গেলে অবরোধকারীরা দাবি করেন বিডিও-কে ঘটনাস্থলে এসে বকেয়া মজুরি কবে মিলবে সে ব্যাপারে জানাতে হবে। বেলা ২টো নাগাদ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন মঙ্গলকোটের বিডিও সুশান্ত মণ্ডল। সুশান্তবাবুর দাবি, “এখন অন-লাইনে মজুরি দেওয়ার পদ্ধতি চালু হয়েছে। সে জন্য টাকা দিতে সময় লাগছে। এ কথা বোঝানোর সময় পুলিশের সামনেই অবরোধকারীদের হাতে আমাকে হেনস্থা হতে হয়।” পুলিশের দাবি, কয়েকজন বিডিও-র জামার কলার ধরে টানেন।
সিপিএমের বর্ধমান জেলা কমিটির সদস্য মহম্মদ বদরুদ্দোজ্জার অভিযোগ, “দীর্ঘ দিন মজুরি না পেয়ে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলন করছিলেন শ্রমিকেরা। বিডিও ফিরে যেতে তৃণমূল বহিরাগত দুষ্কৃতীদের নিয়ে শ্রমিকদের উপরে বোমাবাজি করে।” তৃণমূল নেতা দীনবন্ধু দাসের দাবি, “সিপিএমের লোকেরা পঞ্চায়েত প্রধান ভাগ্যধর দাসকে মারধর করে। আমাদের এক পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়িতে হামলা চালায়। কিছু পঞ্চায়েত কর্মীর সাইকেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। গণ্ডগোল তো ওরাই পাকিয়েছে।”