বেতন বাকি থাকায় স্কুলে ঢুকতে না দেওয়ার নালিশ

বেতন বাকি থাকায় ঢুকতে দিচ্ছে না স্কুল, থানায় গিয়ে এমনই অভিযোগ জানাল একাদশ শ্রেণির এক প্রতিবন্ধী ছাত্রী। সোমবার দুপুরে বর্ধমান শহরের মহারানি অধীরানি বালিকা বিদ্যালয়ের বিউটি খাতুন নামে ওই ছাত্রী বর্ধমান থানার আইসি আবদুল গফফ্রের সঙ্গে দেখা করে ওই অভিযোগ জানায়। তাঁর দাবি, ২০১৩ সালের ৭২০ টাকা বেতন বাকি রয়েছে থাকায় স্কুলে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না তাকে। এমনকী এ দিন স্কুলের গেট থেকে তাঁকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও তাঁর দাবি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৪ ০২:০৫
Share:

বেতন বাকি থাকায় ঢুকতে দিচ্ছে না স্কুল, থানায় গিয়ে এমনই অভিযোগ জানাল একাদশ শ্রেণির এক প্রতিবন্ধী ছাত্রী।

Advertisement

সোমবার দুপুরে বর্ধমান শহরের মহারানি অধীরানি বালিকা বিদ্যালয়ের বিউটি খাতুন নামে ওই ছাত্রী বর্ধমান থানার আইসি আবদুল গফফ্রের সঙ্গে দেখা করে ওই অভিযোগ জানায়। তাঁর দাবি, ২০১৩ সালের ৭২০ টাকা বেতন বাকি রয়েছে থাকায় স্কুলে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না তাকে। এমনকী এ দিন স্কুলের গেট থেকে তাঁকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও তাঁর দাবি।

আইসি পরে এক পুলিশকর্মীকে স্কুলে পাঠিয়ে ঘটনার তদন্ত করান। ওই তদন্তকারী পুলিশকর্মী অরুণ সোম জানিয়েছেন, প্রধান শিক্ষিকা অপরাজিতা সরকার জানিয়েছেন, বিউটি ক্লাস করে না। তাঁর একমাত্র উদ্দেশ্য সংখ্যালঘু বৃত্তির টাকা নেওয়া। তাই আগে বিউটিকে ভর্তি হতে বলা হয়েছে। তারপরে বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। তিনি বলেন, “বিউটি স্কুলে গিয়ে আজ অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে এসেছি। প্রধান শিক্ষিকাকে বলা হয়েছে, বিষয়টিতে ছাত্রীর সঙ্গে সহযোগিতা করতে।”

Advertisement

বর্ধমান শহরের পীরবাহারামের ডাঙাপাড়ার বাসিন্দা বিউটি জানায়, ২০১০ সালে মাধ্য্যমিক পাশ করে সে। তারপরে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিও হয়। কিন্তু বাবা শেখ মুস্তাকিনের মৃত্যুর পরে সংসার চালানোয় মুশকিল হয়ে পড়ে তাঁদের। মা খোদেজা বিবি বিড়ি শ্রমিক। ফলে আর লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারেনি সে। তাঁর অভিযোগ, পরে বারবার স্কুলে গিয়ে ভর্তি হতে চাইলেও স্কুলের তরফে সাহায্য করা হয়নি। এমনকী তাকে স্কুলে ঢুকতেও দেওয়া হচ্ছে না। এ দিন প্রতিবন্ধী শংসাপত্র সঙ্গে নিয়েই থানায় যায় বিউটি। তাঁর অভিযোগ, সোমবার রিকশা ভাড়া করে স্কুলে গেলেও গেট থেকে তাঁকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।

তবে মহারানি অধীরানি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা বলেন, “মেয়েটি একটানা চার বছর ধরে প্রতিবন্ধী বলে সহানুভূতি নিতে চাইছে। কিন্তু কোনও দিনই স্কুলে ক্লাস করতে আসে না। সংখ্যালঘু বৃত্তি পাওয়াই ওর একমাত্র লক্ষ্য। ওকে পরপর চার বার ওই বৃত্তি দেওয়া হয়েছে। ক্লাস না করলে আর ওই বৃত্তি দেওয়া হবে না বলে জানিয়েও দেওয়া হয়েছে।” অপরাজিতাদেবী আরও জানান, বিউটি ইতিমধ্যে দ্বাদশ শ্রেণিতে ওঠার পরীক্ষায় ফেল করেছে। ফলে নতুন করে ভর্তি হতে হবে ওকে। তার জন্য চারশো টাকা লাগবে। কিন্তু ও ভর্তি হওয়ার জন্য কোনও আবেদন করেনি।

তবে ওই ছাত্রীকে স্কুলে ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রধান শিক্ষিকা। তাঁর দাবি, পাড়ার লোকেদের সঙ্গে নিয়ে স্কুলে ঢুকে ভাঙচুরও করিয়েছে বিউটি। অন্য নানা ভাবে চাপও সৃষ্টি করেছে। সকলকে বুঝিয়ে বলার পরে তাকে বকুনি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিউটির দাবি, এত অভাবের মধ্যে তার পক্ষে ভর্তি ও বকেয়া বেতনের টাকা জোগাড় করা সম্ভব নয়, একথা বুঝতে পারছেন না বড়দি।

আইসি আব্দুল গফ্ফর বলেন, “আমরা ওই প্রধান শিক্ষিকাকে বলেছি, কত টাকা লাগবে ওর লেখাপড়া নতুন করে শুরু করতে তা উনি যেন আমাদের জানান। আমরা ওই টাকা দিয়ে মেয়েটিকে ভর্তি করিয়ে দেব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন