মাসখানেক পরেই পুরভোট। তার আগে কাটোয়ার কংগ্রেস বিধায়ককে মোবাইলে খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল। সোমবার দুপুরে ওই অচেনা মোবাইল নম্বর-সহ কাটোয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এ ধরনের কাজ করেছে। যদিও অভিযোগ মানতে চায়নি তৃণমূল।
বছর দেড়েক আগেও, একটি অজানা নম্বর থেকে বিধায়ককে খুনের হুমকি দিয়েছিল এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি। সেই ঘটনার কোনও কিনারা করতে পারেনি পুলিশ। সোমবার রবীন্দ্রনাথবাবু পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, রবিবার রাত ১১টা নাগাদ ওই অচেনা নম্বর থেকে একটি ফোন আসে। ধরার পরেই পুরুষ কণ্ঠে বিধায়ককে ‘শান্তিনিকেতনের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর’ সম্বোধন করে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয় বলে অভিযোগ। বিধায়ক পরিচয় জানতে চাইলে প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। পরে সোমবার সকালে ১০টা নাগাদ এবং ফের ১১টা নাগাদ ফোন করে হুমকি দেওয়া হয়। এরপরেই দুপুর পৌনে ১২টা নাগাদ কাটোয়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেন রবীন্দ্রনাথবাবু। তিনি জানিয়েছেন, এই হুমকির জেরে তিনি ‘ভীত ও সন্ত্রস্ত’।
২০১৩ সালের ১৩ নভেম্বরেও এ ভাবে ‘হুমকি’ দিয়ে ফোন করেছিল দুষ্কৃতীরা। পুলিশ সেই ঘটনার কোনও কিনারা করতে পারেনি। বিধায়কের অভিযোগ, ফোনের অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে পুলিশকে জানানোর কথা বলা হলে সে বলে, ‘পুলিশ আমার কিছুই করতে পারবে না’। কাটোয়া থানায় অভিযোগ করার পরেও বারবার ওই নম্বর থেকে ফোন আসছে বলে রবীন্দ্রনাথবাবু জানিয়েছেন। বিষয়টি তিনি জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপারকেও। পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলেন, “রবীন্দ্রনাথবাবু কাটোয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। তদন্ত শুরু হয়েছে। আশা করছি, অভিযুক্তকে খুব দ্রুত চিহ্নিত করে ফেলব।”
সবকিছু ঠিকঠাক চললে এপ্রিলেই রাজ্যের ৯০টি পুরসভার সঙ্গে কাটোয়াতেও নির্বাচন হওয়ার কথা। রবীন্দ্রনাথবাবুর নেতৃত্বে ১৯৯৫ সাল থেকে কাটোয়া পুরসভা দখলে রেখেছে কংগ্রেস। সেখানে পুরভোটের আগে কংগ্রেস বিধায়ক ও কাটোয়া পুরসভার কাউন্সিলর রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মোবাইলে হুমকি ঘটনাকে ঘিরে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়ে গিয়েছে।
রবীন্দ্রনাথবাবুর দাবি, “আমার ধারণা, পুর নির্বাচনের আগে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এ ধরনের হুমকি দিচ্ছে।” যদিও রবীন্দ্রনাথবাবুর ধারনার সঙ্গে একমত নন কাটোয়া শহর তৃণমূলের সভাপতি অমর রাম। তাঁর কথায়, “পুলিশ খুঁজে বের করুক কে বিধায়ককে হুমকি দিয়েছে। তবে আমার মনে হয়, কাটোয়াতে কংগ্রেসের রাজনৈতিক অবস্থা কী তা উনি বুঝতে পারছেন, সে কারণে নির্বাচনের আগে সহানুভূতি পাওয়ার জন্য এ সব চমক দিচ্ছেন।” ঘটনার নিন্দা করে সিপিএমের কাটোয়া জোনাল কমিটির সম্পাদক তপন কোনার বলেন, “যে বা যারা এ ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে, তাদের বের করে পুলিশ উপযুক্ত শাস্তি দিক।”
বিজেপির তরফেও পুলিশকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।