বেনাচিতিতে দীপাবলির রাতে ভস্মীভূত কাঠগোলা

দীপাবলীর রাতে ভয়াবহ আগুনে ভস্মীভূত হয়ে গেল একটি কাঠের গোলা। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে দুর্গাপুরে বেনাচিতির নাচন রোডের ধারে ওই কাঠগোলায় আগুন লাগে। দমকলের ৫টি ইঞ্জিন ঘণ্টা তিনেকের চেষ্টায় আগুন আয়ত্তে আনে। প্রাথমিক ভাবে দীপাবলির প্রদীপ বা আতসবাজি থেকেই আগুন ছড়িয়েছে বলে মনে করছে দমকল। শর্ট সার্কিটের সম্ভাবনাও রয়েছে বলে দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৪ ০১:০৭
Share:

তখন চলছে আগুন নেভানো। নিজস্ব চিত্র।

দীপাবলীর রাতে ভয়াবহ আগুনে ভস্মীভূত হয়ে গেল একটি কাঠের গোলা। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে দুর্গাপুরে বেনাচিতির নাচন রোডের ধারে ওই কাঠগোলায় আগুন লাগে। দমকলের ৫টি ইঞ্জিন ঘণ্টা তিনেকের চেষ্টায় আগুন আয়ত্তে আনে। প্রাথমিক ভাবে দীপাবলির প্রদীপ বা আতসবাজি থেকেই আগুন ছড়িয়েছে বলে মনে করছে দমকল। শর্ট সার্কিটের সম্ভাবনাও রয়েছে বলে দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

নাচন রোডের ধারে ভিড়িঙ্গি কালীমন্দিরের কাছে রয়েছে এই কাঠগোলাটি। কাঠের গুদাম, করাতকল এবং সে সবের পিছনে মালিক গুরুদয়াল সিংহের বাড়ি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দীপাবলি উপলক্ষে বাড়ির মতোই কাঠগোলার বিভিন্ন অংশেও প্রদীপ দেওয়া হয়েছিল। তা ছাড়া, রাতে বাড়ির মধ্যে আতসবাজিও পোড়ানো হয়। ভোর সাড়ে ৩টে নাগাদ বাড়ির লোকজন জানতে পারেন, কাঠগোলায় আগুন লেগেছে। দমকলে খবর দেওয়া হয়। দমকলের ৫টি ইঞ্জিন এক এক করে ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। ইঞ্জিনের জমা জলে আগুন কমলেও পুরোপুরি নেভার আগে জল শেষ হয়ে যায়। রাস্তার উল্টো দিকের একটি পুকুর থেকে ইঞ্জিনের সাহায্যে জল তুলে আগুন নেভানো শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত সকাল ৭টা নাগাদ আগুন পুরোপুরি আয়ত্তে আসে।

দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে প্রদীপ মিলেছে। আতসবাজি পোড়ানোর চিহ্নও পাওয়া গিয়েছে। কোনও ভাবে আগুনের ফুলকি গাদা করে রাখা চেরাই কাঠে লেগে থাকতে পরে। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে ভয়াবহ আগুন লেগে থাকতে পারে। আবার শর্ট সার্কিট থেকেও আগুন লাগার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না দমকল। ঘটনাস্থলে যান দমকলের বিভাগীয় আধিকারিক তুষারকান্তি সেন। তিনি বলেন, “আগুন কী ভাবে লেগেছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।” কাঠগোলার মালিক গুরুদয়াল শর্মা বলেন, “কয়েক লক্ষ টাকার কাঠ পুড়ে গিয়েছে। বড় ক্ষতি হয়ে গেল।”

Advertisement

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, কাঠগোলাটি প্রধান সড়কের ধারে থাকায় দমকলের গাড়ি সহজেই পৌঁছতে পেরেছিল ঘটনাস্থলে। তা ছাড়া রাস্তার অন্য দিকে একটি পুকুর থাকায় ইঞ্জিনের জল শেষ হলেও আগুন নেভানোর কাজে বাধা পড়েনি। কিন্তু, বেনাচিতি বাজারের অধিকাংশ এলাকায় দমকলের গাড়ি ঢোকার রাস্তা নেই। নাচন রোডের দু’ধারে শয়ে-শয়ে দোকান। দোকানের সামনে পলিথিনের ছাউনি দিয়ে বসেন হকারেরা। দোকানের সামনের জেনারেটরের সাইলেন্সর পাইপ থেকে আগুনের ফুলকি বেরোয়। তা থেকে ঝুলিয়ে রাখা জামাকাপড়ে আগুন লাগার সম্ভাবনা থেকেই যায়। আবার গলি দিয়ে ভিতরে ঢুকে বাজার। পর্যাপ্ত জলের কোনও উৎস নেই। এক বার আগুন লাগলে তা ভয়াবহ আকার নিতে পারে বলে আশঙ্কা বেনাচিতির ব্যবসায়ীদের।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১২ সালের ২৭ মার্চ বড় আগুন লেগে ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছিল বেনাচিতির অর্ধশতক পুরনো একটি বেকারি। ঘিঞ্জি এলাকা, তাই আগুন নেভানোর বদলে সে বার দমকলকে গুরুত্ব দিতে হয়েছিল আগুন যাতে না ছড়ায়, তা নজরে রাখতে। ২০১০ সালের নভেম্বরে এখানকার শ্যাম কমপ্লেক্সে আগুন লাগে। পুরনো বাজার এলাকা হওয়ায় দু’টি দোকান বা কমপ্লেক্সের মাঝে আইন অনুযায়ী ফাঁকা জায়গা নেই। ফলে, দমকলের গাড়ি তো দূর, এক সঙ্গে একাধিক মানুষই ঢুকতে পারেন না। ২০০৫ সালের নভেম্বরে আগুন লাগে আনন্দময়ী মার্কেটে। ভস্মীভূত হয় ২৪টি দোকান। ইঞ্জিনের জল শেষ হয়ে যাওয়ায় পুকুর খুঁজে জলের ব্যবস্থা করতেই সময় গড়িয়ে গিয়েছিল অনেকখানি। তা না হলে ক্ষতির পরিমাণ অনেক কমত বলে জানিয়েছিল দমকল দফতর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন