এক পরিবহন ব্যবসায়ীর বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার জন্য রিলায়্যান্স জেনারেল ইনশিওরেন্স কোম্পানিকে নির্দেশ দিল বর্ধমানের ক্রেতা সুরক্ষা আদালত। বৃহস্পতিবার বর্ধমান জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের বিচাকর উদয়ন মুখোপাধ্যায় ও দুই সদস্য শিল্পী মজুমদার ও দুর্গাশঙ্কর দাস এই নির্দেশ দিয়েছেন।
রিলায়্যান্স জেনারেল ইনশিওরেন্স সংস্থার দুর্গাপুর শাখার ক্লেইম ম্যানেজার সুখেন সেনগুপ্ত বলেন, “আমরা এখনও আদালতের নির্দেশ হাতে পাইনি। নির্দেশ পেয়ে কী করা যায় তা ভাববো।”
প্রশাসন ও ওই পরিবহন ব্যবসায়ীর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৩ সালের ২৫ জানুয়ারি বর্ধমানের পরিবহন ব্যবসায়ী রাজারাম সাউয়ের মালিকানাধীন একটি ট্রেলার দুর্ঘটনায় পড়ে। ওই ট্রেলারটির রিলায়্যান্স ইনশিওরেন্স সংস্থার কাছে বিমা কারনো ছিল। ওই পরিবহন ব্যবসায়ী বিমা সংস্থাকে দুর্ঘটনার খবর দেওয়ার পরে তারা ট্রেলার সারানোর মোট খরচ লিখিতভাবে জানাতে বলেন। রাজারামবাবু সংস্থাকে জানান, ট্রেলারটিকে সারিয়ে রাস্তায় নামবার উপযুক্ত করার জন্য মোট ৫ লক্ষ ৪১ হাজার ৪২০ টাকা খরচ হবে। বিমা সংস্থার দুর্গাপুর শাখা থেকে ওই টাকা দেওয়া হবে বলে মৌখিকভাবে নিশ্চিত করা হয়েছিল। সংস্থার কর্মীরা ওই দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেলারটি দেখে যান। তারপরে তারা জানান মোট আর্থিক পরিমাণ হল ২ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা। এরপরে রাজারামবাবু সংস্থাকে জানান, নিরপেক্ষ কোনও সার্বেয়ারকে দিয়ে তাঁর ক্ষতির পরিমান পরীক্ষা করানো হয়। কিন্তু বিমা সংস্থা সেই আবেদনে সাড়া না দিয়ে ক্ষতিপূরন হিসেবে আড়াই লক্ষ টাকা পাঠায়। ব্যবসায়ী সংস্থার দুর্গাপুর শাখার ম্যানেজারকে জানান, তিনি বকেয়া ক্ষতিপূরনের জন্য আদালতের দ্বারস্থ হবেন। দুর্গাপুর অফিস থেকে তাঁকে জানানো হয়, ২০ নভেম্বরের মধ্যে বাকী ২ লক্ষ ৯১ হাজার টাকা তাঁকে দিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু নির্ধারিত দিনে তিনি সংস্থার দুর্গাপুর অফিসে যোগাযোগ করার পরে ওই টাকা দিতে অস্বীকার করা হয়। এরপরেই রাজারামবাবু জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ হন।
আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, নথিপত্র পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে বিমা সংস্থার রিপোর্টে সার্ভেয়ারের কোনও সই নেই। এই ঘটনা থেকেই বোঝা যাচ্ছে বিমা সংস্থাটি সচ্ছতার সঙ্গে ওই ক্ষতিপূরনের বিচার করেনি। তাই ওই ব্যবসায়ীকে ২ লক্ষ ৯১ হাজার ৪২০ টাকা বকেয়া ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিতে হবে। এরই পাশাপাশি ক্ষতিপূরন বাবদ আরও ১০,০০০ টাকা ও মামলা চালানোর খরচ হিসেবে ১০০০ টাকা দিতে হবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা না মিটিয়ে দিলে সংশ্লিষ্ট বিমা সংস্থাকে শতকরা ১০ শতাংশ হারে সুদ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।