বালিঘাট বন্ধের নির্দেশ, ধৃত সাত

বেআইনি বালির ট্রাক আটকাতে সেচ দফতর ও পুলিশের প্রহৃত হওয়ার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মোট সাত জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতেরা প্রত্যেকেই কাটোয়ার নতুনগ্রামের বাসিন্দা। শনিবার ধৃতদের আদালতে তোলা হলে গ্রামবাসীদের একাংশ যদিও দাবি করেন, যাদের ধরা হয়েছে, তাদের সঙ্গে ঘটনার কোনও যোগ নেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাটোয়া শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৫ ০২:১৩
Share:

আদালতে ধৃতেরা। নিজস্ব চিত্র।

বেআইনি বালির ট্রাক আটকাতে সেচ দফতর ও পুলিশের প্রহৃত হওয়ার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মোট সাত জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতেরা প্রত্যেকেই কাটোয়ার নতুনগ্রামের বাসিন্দা। শনিবার ধৃতদের আদালতে তোলা হলে গ্রামবাসীদের একাংশ যদিও দাবি করেন, যাদের ধরা হয়েছে, তাদের সঙ্গে ঘটনার কোনও যোগ নেই।

Advertisement

বৃহস্পতিবার রাতে সেচ দফতরের রেভিনিউ অফিসার মনসিজ গঙ্গোপাধ্যায় ও অমিতাভ চৌধুরীর নেতৃত্বে দফতরের ১৫ জন কর্মী ও চার জন পুলিশকর্মী যৌথ ভাবে প্রথমে কৈচরে অভিযান চালান। পরে শুক্রবার ভোরে কাটোয়ার নতুনগ্রামে একের পরে এক ট্রাক আটকায় সেচ দফতর। আধিকারিকেরা জানান, নতুনগ্রামে ট্রাক আটকানোর কিছুক্ষণের মধ্যেই মহিলা-সহ প্রায় জনা চল্লিশ ঘিরে ধরে তাঁদের উপর চড়াও হয়। বাঁচাতে গিয়ে পুলিশের কপালেও জোটে রড-লাঠির বাড়ি।

সরকারি কাজে বাধা ও মারধরের ঘটনায় জড়িতদের সন্ধানে শুক্রবার দিনভর অভিযান চালিয়ে মোট ৭ জনকে গ্রেফতার করে কাটোয়া থানার পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম, কবীর হোসেন, ইয়াসিন মণ্ডল, মহসিন মণ্ডল, কামাল শেখ, হারাই মল্লিক, আসকর শেখ ও ফজলু শেখ। এ দিন আদালতে তোলা হলে প্রথম তিন জনের ৫ দিনের পুলিশি হেফাজত ও বাকিদের ৫ দিনের জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।

Advertisement

এ দিন আদালত চত্বরেই গ্রামবাসীদের একাংশ এই গ্রেফতারির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। তাঁদের দাবি, পুলিশ নির্দোষদের ধরেছে। নতুনগ্রামের বাসিন্দা আব্দুল রফিক মল্লিকের দাবি, ধৃত ইয়াসিনের ট্রাক স্থানীয় বিশ্বরম্ভা গ্রামে দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়। আপাতত মেরামতির জন্য তা গ্যারাজে রয়েছে। অথচ শুধুমাত্র ট্রাক থাকার কারণেই ইয়াসিন ও তার ভাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি। আরও এক গ্রামবাসীরা দাবি, ধৃতেরা সকলেই প্রায় চাষাবাদ করে দিন গুজরান করেন। ওই ঘটনার সঙ্গে তাঁরা যুক্ত নয়। যদিও পুলিশের দাবি, প্রাথমিক তদন্তের পর ধৃতেরা যে ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তার প্রমাণ মিলেছে।

নিরাপত্তার স্বার্থে শনিবার থেকে ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাটোয়া বালি খাদান বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছেন ইজারা নেওয়া বালি ঘাটগুলির ব্যবসায়ীরা। এ দিন জালাল শেখ, হোসেন মণ্ডল নামে বালি ঘাটের দু’জন ইজারাদার মহকুমাশাসক ও বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে ঘাট বন্ধের প্রতিবাদ জানান। তাঁদের অভিযোগ, এর জেরে বালি ব্যবসায় ক্ষতির হবে। কাজ পাবেন না বহু শ্রমিক। মহকুমাশাসক মৃদুল হালদারের যদিও আশ্বাস, গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। বিষয়টি নিয়ে সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলার আশ্বাস দেন রবীন্দ্রনাথবাবু। ঘাট বন্ধের ফলে সরকারি রাজস্ব মার খাবে বলে প্রশাসনের একটি অংশের আশঙ্কা। শনিবার রাত পর্যন্ত কাটোয়ার জাজিগ্রাম চেক পোস্টে মাত্র ২৪ হাজার টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। শুক্রবার বালি ঘাট চালু থাকায় তা ছিল দেড় লাখেরও বেশি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন