বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ কর্মচারী নেতার পদোন্নতি খারিজ

বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল সমর্থিত পাঁচ কর্মচারী নেতার পদোন্নতি খারিজ করল কলকাতা হাইকোর্ট। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূলেরই আরেক কর্মচারী সংগঠন, বর্ধমান ইউনির্ভাসিটি কর্মচারী সমিতির তিন নেতা আইন ভেঙে ওই পাঁচজনকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে বলে হাইকোর্টে মামলা করেন। তারপরেই গত ২৫ এপ্রিল হাইকোর্টের বিচারপতি অশোককুমার দাস অধিকারীর এজলাসে ওই পদোন্নতিকে অবৈধ ঘোষনা করে তা বাতিল বলে রায় দেওয়া হয়। নতুন করে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সঠিক প্রক্রিয়ায় উপযুক্তদের পদোন্নতির নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৪ ০০:৪৯
Share:

বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল সমর্থিত পাঁচ কর্মচারী নেতার পদোন্নতি খারিজ করল কলকাতা হাইকোর্ট। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূলেরই আরেক কর্মচারী সংগঠন, বর্ধমান ইউনির্ভাসিটি কর্মচারী সমিতির তিন নেতা আইন ভেঙে ওই পাঁচজনকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে বলে হাইকোর্টে মামলা করেন। তারপরেই গত ২৫ এপ্রিল হাইকোর্টের বিচারপতি অশোককুমার দাস অধিকারীর এজলাসে ওই পদোন্নতিকে অবৈধ ঘোষনা করে তা বাতিল বলে রায় দেওয়া হয়। নতুন করে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সঠিক প্রক্রিয়ায় উপযুক্তদের পদোন্নতির নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

২০১২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের অশিক্ষক কর্মচারীদের জুনিয়র সুপারিন্টেন্ডেন্ট হিসেবে পদোন্নতির জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তাতে বলে হয়,সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট, সিনিয়ার টাইপিস্ট কাম অফিস অ্যাসিস্ট্যান্ট, অ্যাসিস্ট্যান্ট লাইব্রেরিয়ান গ্রেড-১, সিনিয়র স্টুয়ার্ড প্রমুখ পদে কমর্রত যে কর্মীদের ৪ অক্টোবর পর্যন্ত সাত বছরের কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে, তাঁরাই ওই পদে পদোন্নতির জন্য আবেদন করতে পারবেন। শর্ত পূরণ করে বেশ কিছু আবেদনও জমা পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে। কিন্তু উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকার, কর্মসমিতিতে তাঁর বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও ২০১২ সালের ১৬ নভেম্বর ওই পাঁচ নেতাকে পদোন্নতি সংক্রান্ত পরীক্ষায় বসার সুযোগ করে দেন বলে অভিযোগ। পরীক্ষায় বসার পরে ওই পাঁচ নেতাকে পদোন্নতিও দিয়ে দেওয়া হয়। ওই পাঁচ নেতা হলেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাবন্ধু সমিতির সাধারণ সম্পাদক সীতারাম মুখোপাধ্যায়, শঙ্কর দেব, সুব্রত কোনার, গৌতম ঘোষ ও অশোক আইচ। এঁদের মধ্যে এমন কর্মচারী নেতাও ছিলেন যাঁকে পিয়নের পদ থেকে সরাসরি দু’ধাপ উপরের জুনিয়র সুপারিন্টেন্ডেন্ট পদে উন্নীত করা হয়। এরপরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের মধ্যে আলোড়ন দেখা যায়। উপাচার্যকে স্মারকলিপি দেন, বিক্ষোভ দেখান বর্ধমান ইউনির্ভাসিটি কর্মচারি সমিতির নেতারা। কিন্তু প্রতিকার না পেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তাঁরা।

ইউনির্ভাসিটি কর্মচারী সমিতির নেতা হারাধন মান্না বলেন, “বর্তমান উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের সীমাহীন দুর্নীতি, স্বজনপোষন, স্বেচ্ছাচারিতা ও বেআইনি কাজের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে সুবিধা করতে পারিনি। বাধ্য হয়ে হাইকোর্টের শরণাপন্ন হই। আদালতের রায়ে আমরা খুশি।” আরেক নেতা আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “এ ধরণের দুর্নীতি সিপিএমের আমলে প্রচুর ঘটেছে। এমন কর্মী অফিসার পদে চাকরি করেছেন, যাঁর শিক্ষাগত যোগাতা বলতে প্রায় কিছুই নেই। কিন্তু সিপিএমের আমলের দুর্নীতি এ আমলেও হবে কেন? এটাই ছিল আমাদের প্রতিবাদ।” ওই সংগঠনের নেতাদের তরফের আইনজীবী অশোক নন্দী বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফের আইনজীবী ওই রায়ের উপর স্থগিতাদেশ চেয়েছিলেন। কিন্তু বিচারপতি অশোককুমার দাস অধিকারী আবেদন খরিজ করে দেন।”

Advertisement

তবে অভিযুক্ত সংগঠন, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাবন্ধু সমিতির সাধারণ সম্পাদক সীতারাম মুখোপাধ্যায়ের জবাব, “বিশ্ববিদ্যালয় তার নিয়ম মেনেই আমাদের পদোন্নতি দিয়েছিল। আসলে যাঁরা অযোগ্য বলে পদোন্নতির জন্য বিবেচিত হননি, তাঁরাই আদালতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ও তৃণমূল সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন।”

কিন্তু পদোন্নতি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠল কেন? বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শ্রীপতি মুখোপাধ্যায় বলেন, “এ বিষয়ে যা বলার উপাচার্য বলবেন।” উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকার বলেন, “এই বিষয়ে রেজিস্ট্রারের সঙ্গে কথা বলুন।” পরে রেজিস্ট্রারের মন্তব্য শুনে বলেন, “আমি দিল্লিতে রয়েছি। ফিরে গিয়ে যা বলার বলব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন