মানহানির মামলায় মুকুলকে সমন আসানসোল কোর্টের

নিহত সিপিএম নেতা দিলীপ সরকার নারী পাচারে যুক্ত ছিলেন বলে মন্তব্য করার অভিযোগে মানহানির মামলায় তৃণমূলের মুকুল রায়কে সমন পাঠাল আসানসোল আদালত। প্রাক্তন বিধায়ক দিলীপবাবুর স্ত্রী শেফালি সরকার ওই মামলা দায়ের করেছিলেন। সোমবার আসানসোল আদালতের দ্বিতীয় বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট অনমিত্রা ভট্টাচার্য আগামী ১১ সেপ্টেম্বর মুকুলবাবুকে সশরীরে অথবা আইনজীবী মারফত তাঁকে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৪ ০২:১১
Share:

নিহত সিপিএম নেতা দিলীপ সরকার নারী পাচারে যুক্ত ছিলেন বলে মন্তব্য করার অভিযোগে মানহানির মামলায় তৃণমূলের মুকুল রায়কে সমন পাঠাল আসানসোল আদালত।

Advertisement

প্রাক্তন বিধায়ক দিলীপবাবুর স্ত্রী শেফালি সরকার ওই মামলা দায়ের করেছিলেন। সোমবার আসানসোল আদালতের দ্বিতীয় বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট অনমিত্রা ভট্টাচার্য আগামী ১১ সেপ্টেম্বর মুকুলবাবুকে সশরীরে অথবা আইনজীবী মারফত তাঁকে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেন। রাতে মুকুলবাবু বলেন, “এখনও আমি কোনও শমন হাতে পাইনি। তা পেলে আইন অনুযায়ীই চলব।”

২০১৩ সালের ৯ জুন বার্নপুরে প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়ে বাড়ির কাছেই দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন বারাবনির প্রাক্তন বিধায়ক তথা সিপিএমের বর্ধমান জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য, বছর আটষট্টির দিলীপ সরকার। আততায়ীরা এসেছিল মোটরবাইকে করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছিলেন, চালকের পিছনে বসে থাকা সালোয়ার কামিজ পরা, ওড়নায় মুখ ঢাকা এক মহিলা পরপর গুলি ছোড়ে। দু’টি গুলি লাগে তাঁর পেটে। ওই অবস্থাতেই দিলীপবাবু পালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু খানিকটা দৌড়ে ইস্কোর একটি আবাসনের সামনে মুখ থুবড়ে পড়ে যান। পিছন থেকে তাঁকে তাড়া করে আসছিল আততায়ীরা। তিনি পড়তেই তাঁরা ফের তাঁর পিঠেও দু’টি গুলি করে দুষ্কৃতীরা চম্পট দেয়। স্থানীয় লোকজন ভ্যানরিকশায় চাপিয়ে তাঁকে ইস্কো হাসপাতালে নিয়ে গেলেও অস্ত্রোপচারের আগে তিনি মারা যান।

Advertisement

হত্যাকাণ্ডের পরেই কয়েক হাজার মানুষ মিছিল করে হিরাপুর থানায় গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। পরের দিন আসানসোলে ১২ ঘণ্টা বন্ধ ডাকে সিপিএম। পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই খুনে তৃণমূলের দিকে অভিযোগের আঙুলও তোলে তারা। যদিও ঘটনার দিনেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় ও আসানসোলের তৃণমূল বিধায়ক মলয় ঘটক দাবি করেছিলেন, সিপিএমের অন্তর্দ্বন্দ্বের ফলে এই খুন। ঘটনার পরে পুলিশ দাবি করেছিল, দেশি আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি ছোড়া হয়েছে। কিন্তু তার পরে এক বছর পেরিয়ে গেলেও এর বেশি তারা প্রায় কিছুই জানাতে পারেনি। খুনের কোনও কিনারা হয়নি, কেউ ধরাও পড়েনি।

দিলীপবাবু খুনের পরেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় দাবি করেছিলেন, “স্থানীয় সূত্রে জেনেছি, চার বছর আগে এই ভদ্রলোকের বিরুদ্ধে নারী পাচারের ঘটনায় অভিযোগ দায়ের হয়েছিল।” যদিও তৎকালীন এডিসিপি (পশ্চিম) সুব্রত গঙ্গোপাধ্যায় জানান, এমন কোনও অভিযোগ দিলীপবাবুর বিরুদ্ধে নেই। তৎকালীন সিপিএম সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরী সে দিনই বলে দেন, “আমরা মুকুলবাবুর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করব।” শেফালিদেবীর আইনজীবী অমিতাভ মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, একটি বৈদুতিন চ্যানেলে করা ওই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতেই মামলা করা হয়েছিল। সে প্রসঙ্গে মলয় ঘটক বলেন, “আদালত যদি কোনও নির্দেশ দিয়ে থাকে, আমাদের আইনজীবী হাজির থাকবেন।” বংশগোপালবাবু বলেন, “মুকুল কুরুচিকর মন্তব্য করেছিলেন, যার সঙ্গে বাস্তবের কোনও সম্পর্ক নেই। বিচারালয় যথাযথ ন্যায় দেবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন