সালিশি সভা ডেকে পারিবারিক বিবাদ মেটানোর নামে এক যুবককে মারধর ও এলাকা ছাড়া করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে বর্ধমান শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে। এমনকী, তাঁকে তাঁর সেলুনও খুলতে দেওয়া হচ্ছে না বলে পুলিশে অভিযোগে জানিয়েছেন প্রেমশঙ্কর ঠাকুর নামে ওই যুবক। যদিও কাউন্সিলর সৈয়দ মহম্মদ সেলিম বাড়িছাড়া করার কথা মানেননি।
প্রেমশঙ্করের বাড়ি লোকো আমবাগানের সাধনপুর রোডে। তিনি বর্ধমান থানায় অভিযোগে করেছেন, তাঁর সঙ্গে গোলমালের জেরে স্ত্রী অন্নপূর্ণা বাপেরবাড়ি চলে গিয়েছিলেন। স্ত্রীকে ফেরানোর জন্য তিনি পাড়ার কয়েক জনকে একটি বৈঠক ডেকে সমস্যার সমাধান করতে বলেন। গত ৭ জুলাই তাঁকে তৃণমূল ওয়ার্ড কমিটির অফিসে ডেকে পাঠানো হয়। কিন্তু সেই সভায় মীমাংসার বদলে তাঁকে স্থানীয় কাউন্সিলর সৈয়দ মহম্মদ সেলিম হুমকি দেন, স্ত্রীকে নিয়ে শান্তিতে সংসার না করতে পারলে এলাকায় থাকতে দেওয়া হবে না। প্রেমশঙ্কর অভিযোগ করেন, প্রতিবাদ করলে তাঁকে স্থানীয় এক মহিলা চড় মারেন। মারধরে হাত লাগান সেলিম সাহেবও। তার পর থেকে তাঁকে নিজের বাড়িতেও ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। সেলুনও খুলতে দেওয়া হচ্ছে না।
বর্ধমান থানার পুলিশ জানায়, সোমবার এই অভিযোগ হাতে পেয়েছে তারা। ঘটনাটি তদন্ত হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার কিছু বাসিন্দার দাবি, কাউন্সিলরের লোকেরা ওই যুবককের উপরে নানা রকম অত্যাচার চালাচ্ছে। পারিবারিক ব্যাপারে তৃণমূলের কাউন্সিলর কেন মাথা ঘামাচ্ছেন, তা তাঁরা বুঝতে পারছেন না বলে দাবি ওই বাসিন্দাদের।
কাউন্সিলর সৈয়দ মহম্মদ সেলিম অবশ্য অভিযোগে অস্বীকার করেছেন। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “ওই ছেলেটি বারবার স্ত্রীকে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। অন্তত ৪-৫ বার আমরা দু’পক্ষকে ডেকে মীমাংসা করে দিয়েছি। মেয়ের বাড়ির লোকেদেরও বলেছি, ফের মীমাংসা করে দেব। কিন্তু এ বার ছেলেটি তাতেও রাজি নয়। ও তাই আমাদের এড়িয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। যাতে আমরা তার উপরে চাপ না দিতে পারি তাই নানা জায়গায় মিথ্যা অভিযোগ করছে।” এক জন কাউন্সিলর হিসেবে তিনি কী করে নিজের হাতে মীমাংসার দায়িত্ব তুলে নিচ্ছেন, সে প্রশ্নে সৈয়দ মহম্মদ সেলিমের বক্তব্য, “এলাকার মানুষের কথাতেই আমরা এ বিষয়টি মীমাংসা করতে চাইছি। এর মধ্যে অন্যায় কোথায়?”