মন্দির ও গ্রামের ছোঁয়ায় পুজো শুরু আসানসোলে

পুজোর আসানসোল যেন মন্দিরনগরী। কোথাও কোনও মণ্ডপে ফুটে উঠছে বাংলার সাবেক মন্দিরের ধাঁচ, আবার কোথাও দক্ষিণ ভারতের মন্দির। আবার কোথাও দেখা মিলছে বৌদ্ধ প্যাগোডা। চতুর্থীর দুপুরে তেমনই এক ‘বৌদ্ধ প্যাগোডা’য় এলেন আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। কল্যাণপুর আদি সর্বজনীনের মণ্ডপে নিজে হাতে ঢাক বাজিয়ে এই পুজোর উদ্বোধন করলেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:৫৪
Share:

কল্যাণপুর আদি সর্বজনীনে অন্য স্বাদের মণ্ডপ।

পুজোর আসানসোল যেন মন্দিরনগরী। কোথাও কোনও মণ্ডপে ফুটে উঠছে বাংলার সাবেক মন্দিরের ধাঁচ, আবার কোথাও দক্ষিণ ভারতের মন্দির। আবার কোথাও দেখা মিলছে বৌদ্ধ প্যাগোডা।

Advertisement

চতুর্থীর দুপুরে তেমনই এক ‘বৌদ্ধ প্যাগোডা’য় এলেন আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। কল্যাণপুর আদি সর্বজনীনের মণ্ডপে নিজে হাতে ঢাক বাজিয়ে এই পুজোর উদ্বোধন করলেন তিনি। একে চতুর্থীর সন্ধে, তার উপর রবিবার। স্বাভাবিক ভাবেই এ দিন সন্ধে থেকেই দর্শনার্থীর ঢল দেখা গেল আসানসোলের পুজো মণ্ডপগুলিতে।

এ বারের পুজোয় আসানসোলের অনেক পুজো মণ্ডপেই দেখা মিলছে লোকশিল্প। বাংলার বিভিন্ন জেলা তো বটেই, ভিন রাজ্যের বিভিন্ন লোকশিল্পও জায়গা করে নিয়েছে মণ্ডপগুলিতে। আসানসোল কোর্ট রোড পুজো কমিটির এ বারের থিম হল গুজরাতের লক্ষীনারায়ণ মন্দির। পুজোর কার্যকরী সভাপতি সুব্রত দত্ত জানালেন, গত বছরের তুলনায় এ বার তাঁদের বাজেট বেড়েছে। এই পুজোর মণ্ডপসজ্জাতে ব্যবহার করা হয়েছে পিতলের পাত ও বেত। পিতলের পাতে থাকছে পূর্ববঙ্গের লোকশিল্পের ছোঁয়া। উদ্যোক্তাদের দাবি, দর্শককে আকর্ষণ করবে বেতের কাজ। গোপালপুর ইউনাইটেড ক্লাবের পুজো মণ্ডপে এ বার উঠে আসছে চিনের এক বৌদ্ধ মন্দির। উদ্যোক্তাদের দাবি, দেবী দুর্গা যেমন অসুর দমন করে পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, তেমনই গৌতম বুদ্ধ বিশ্ব জুড়ে অহিংসার বাণী প্রচার করেছিলেন। দুই ভাবনার মেল বন্ধনই হল তাঁদের এ বারের পুজোর ভাবনা। এই মণ্ডপ তৈরির জন্য বাঁশ আনা হয়েছে অসম থেকে। উদ্যোক্তাদের দাবি, তাঁদের মণ্ডপ এ বার সাড়া ফেলবে আসানসোলে।

Advertisement

কোর্ট রোডের পুজো।

রাধানগর অ্যাথলেটিক ক্লাবের মণ্ডপের উচ্চতা চোখ টানবে দর্শকদের। এই মণ্ডপের থিম হল ‘ফিরে দেখার পালা’। এই মণ্ডপ তৈরিতে ব্যবহৃত বাঁশ এসেছে অসম থেকে ও বেত এসেছে উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে। আবার সাম্প্রতিক কিছু ঘটনাবলীকে একসূত্রে গেঁথে এ বারের মণ্ডপ তৈরি করেছে রবীন্দ্রনগর সর্বজনীন। আপকার গার্ডেন সর্বজনীনের পুজো এ বার ৭৫ বছরে পড়ল। পুজো মণ্ডপ গড়ে উঠেছে কাল্পনিক মন্দিরের আদলে। এই পুজোর মূল আকর্ষণ হল জমকালো সাংস্কৃতি অনুষ্ঠান।

তবে শুধুই মণ্ডপ নয়, পুজোর ইস্পাত নগরীতে এক টুকরো গ্রামেরও দেখা মিলবে। বার্নপুরের নেতাজী স্পোর্টিং ক্লাবের এ বারের পুজো ভাবনা হল শিকড়ের টান। উদ্যোক্তারা জানান, শিকড় উপড়ে গেলে গাছ যেমন মারা যায়, তেমনই নিজের শিকড় ভুলে কোনও মানুষও সফল হতে পারে না। এই বিষয়টিকেই ফুটিয়ে তোলা হবে তাঁদের মণ্ডপে। এ বার তাঁদের থিম ‘রূপসী বাংলা’। মণ্ডপে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে বাংলার গ্রামের ছবি। থাকছে মেঠো পথ, গরুর গাড়ি। ঝুড়ি নেমে আসা বট গাছের নিচে রয়েছে দেবীর মূর্তি। মেঠো পথের পাশে থাকছে ঝোপে ঘেরা পুরনো বাড়ি, রঙ চটা মন্দির। কল্যাণপুর কে সেক্টর সর্বজনীনের পুজোর থিম এ পার এবং ও পার বাংলার মেলবন্ধন। সব মিলিয়ে আসানসোলে এখন পুজোর মেজাজে।

নিজস্ব চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন