রানিগঞ্জ-দুবাই মিলল মাউথ অর্গানে

ররীন্দ্রনাথ ঠাকুর, মান্না দে, সলিল চৌধুরী থেকে নব্বইয়ের হিন্দি গান...মাউথ অর্গানের ভিতর থেকে বেরিয়ে এল একটার পর একটা সুর। কখনও সঙ্গে থাকল সন্তুরের যোগ্য সঙ্গত। যারা সুর তুললেন তাঁদের কেউ শিক্ষক, কেউ ইঞ্জিনিয়ার। কেউ থাকেন ওড়িশা, কেউ অন্ধ্রপ্রদেশ, কেউ আবার দুবাই। শনিবারের সকাল থেকে রাত পর্যন্ত একটি অন্য রকম অনুষ্ঠানের সাক্ষী থাকল রানিগঞ্জের একটি প্রেক্ষাগৃহ।

Advertisement

নীলোৎপল রায়চৌধুরী

রানিগঞ্জ শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৪ ০২:২২
Share:

চলছে অনুষ্ঠান। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ।

ররীন্দ্রনাথ ঠাকুর, মান্না দে, সলিল চৌধুরী থেকে নব্বইয়ের হিন্দি গান...

Advertisement

মাউথ অর্গানের ভিতর থেকে বেরিয়ে এল একটার পর একটা সুর। কখনও সঙ্গে থাকল সন্তুরের যোগ্য সঙ্গত। যারা সুর তুললেন তাঁদের কেউ শিক্ষক, কেউ ইঞ্জিনিয়ার। কেউ থাকেন ওড়িশা, কেউ অন্ধ্রপ্রদেশ, কেউ আবার দুবাই। শনিবারের সকাল থেকে রাত পর্যন্ত একটি অন্য রকম অনুষ্ঠানের সাক্ষী থাকল রানিগঞ্জের একটি প্রেক্ষাগৃহ। যেখানে কথা হল সুরে সুরে।

অনুষ্ঠানটির আয়োজক ছিল মাউথ অর্গান শিল্পীদের সংগঠন আসানসোল হারমোনিকা ক্যাটস। দিন রাত ব্যাপী ওই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজ্য থেকে এসেছিলেন ৭০ জন শিল্পী। সকাল থেকে শুরু হয়ে রাত পর্যন্ত চলা অনুষ্ঠানের বিভিন্ন সময়ে কখনও বেজে উঠল হিন্দি সিনেমা ‘অভিমানে’র সুর, আবার কখনও বাজল গণসঙ্গীত। নানা সুরের কোলাজে তৈরি হল অসামান্য কিছু মুর্হূত। যার রেশ থেকে গেল অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরেও।

Advertisement

হারমোনিকা ক্যাটসের সভাপতি হলেন রানিগঞ্জের বাসিন্দা পেশায় শিক্ষক স্বরূপ মিত্র। ইন্টারনেটের মাধ্যমেই তাঁর আলাপ হয় ভিন রাজ্যের কয়েকজন মাউথ অর্গান শিল্পীদের সঙ্গে। ক্রমে আলাপ ও আলাপচারিতা দু’টোই বাড়ে। শিল্পীরা ঠিক করেন সরাসরি আলাপ করবেন তাঁরা। মাধ্যম হবে মাউথ অর্গান। সেই অনুযায়ী এর আগে ২০১০ সালে দিল্লি ও ২০১২ সালে কলকাতায় বসেছিল সুরের আলাপ। ২০১৪ সালে সেই অনুষ্ঠানটিই হল রানিগঞ্জে।

শনিবারের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর দুবাই থেকে এসেছিলেন রাজীব শুক্লা। পেশায় এয়ারক্র্যাফট ইঞ্জিনিয়ার রাজীববাবুর বাড়ি উত্তরপ্রদেশে। তাঁর কথায়, “দুবাই থেকে ইণ্টারনেটের মাধ্যমে পৃথিবীর অনেক মাউথ অর্গান শিল্পীর সঙ্গে পরিচিত হয়েছি। সে ভাবেই এই সংগঠনটির সঙ্গে পরিচয় ও রানিগঞ্জে আসা। অনুষ্ঠান দেখতে প্রচুর শ্রোতা এসেছিলেন। যেটা খুব ভাল ব্যাপার।” অন্ধপ্রদেশের নেল্লোর থেকে এসেছিলেন সোনা ও হীরা ব্যবসায়ী নরেন জৈন। মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুর থেকে উপস্থিত ছিলেন বিএসএনএলের অবসরপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার সজি হেলকরা। উদ্যোক্তাদের আয়োজন ও শ্রোতাদের স্বতফূর্ততা দেখে তাঁরা সবাই অভিভূত। ছিলেন ফিফা রেফারিদের প্রশিক্ষক অবতার কৃষ্ণা। তিনি বলেন, “ছোট থেকেই ফুটবল আর মাউথ অর্গান আমার প্রিয়। অনেকেই উপযুক্ত প্রশিক্ষক খুঁজে না পেয়ে ইচ্ছা থাকলেও মাউথ অর্গান শিখতে পারে না। সেই কারণেই আমরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে এক হওয়ার চেষ্টা করছি।”

এই অনুষ্ঠানে হাতে কলমে মাউথ অর্গান শিক্ষাও দেওয়া হয়। মাউথ অর্গান শিখতে প্রেক্ষাগৃহে উপস্থিত ছিলেন জামুড়িয়ার কাটাগড়িয়ার বাসিন্দা সঞ্জীব পাণ্ডে, আসানসোলের নিউ আপার চেলিডাঙার মহিতোষ দাশগুপ্তের মত অনেকে। তাঁরা জানান, মাউথ অর্গান শেখার ইচ্ছে তাঁদের অনেক দিনের। কিন্তু প্রশিক্ষক না থাকায় শিখতে পারেননি। এলাকায় প্রশিক্ষণকেন্দ্র হলে তাঁরা এই যন্ত্রটি শিখতে পারবেন।

আয়োজক সংস্থার সভাপতি স্বরূপবাবু বলেন, “আমি ছোটবেলা থেকেই মাউথ অর্গানের ভক্ত। এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে মাউথ অর্গানকে জনপ্রিয় করতেই আমাদের এই উদ্যোগ।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন