তদন্তকারী অফিসারের সাক্ষ্যের সঙ্গে থানায় দায়ের হওয়া জিডির ফারাক দেখাতে জিডিগুলি আদালতে পেশ করার আর্জি জানিয়েছিলেন অভিযুক্তদের আইনজীবী। বৃহস্পতিবার নবদ্বীপের অতিরিক্ত ও সেশন জজ সুধীর কুমারের আদালতে সেগুলিই পেশ করা হয়। শুনানি হলেও কোনও সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি এ দিন।
গত ৯ জুলাই শুনানির শেষে অভিযুক্তদের আইনজীবী প্রতীম সিংহ রায় মামলার প্রয়োজনে ভারতীয় ফৌজদারি কার্যবিধির ৯১ ধারা অনুসারে ঘটনার রাতে ধুবুলিয়া থানার দায়ের হওয়া দুটি এবং নবদ্বীপ থানার দুটি জিডি আদালতে হাজির করাতে আবেদন জানান। সেই আবেদনের ভিত্তিতে এ দিন জিডিগুলি আদালতে হাজির করা হয়। ছিলেন নদিয়ার অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি বিকাশকুমার মুখোপাধ্যায়।
কি আছে ওই জিডিগুলিতে? ওই মামলার অন্যতম অভিযুক্ত তথা বর্ধমানের পারুলিয়ার কুলকামিনী হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সিপিএম নেতা প্রদীপ সাহার আইনজীবী প্রতীম সিংহ রায় এবং সামসুল ইসলাম মোল্লা জানান, সাক্ষ্য দিতে এসে তদন্তকারী অফিসার প্রদীপ সাহাকে গ্রেফতার নিয়ে যা বলেছেন তার সঙ্গে প্রকৃত ঘটনার প্রচুর ফারাক। এই বিষয়টি আদালতের সামনে আমরা তুলে ধরতে চাই। তিনি বলেন, “মামলার তদন্তকারি অফিসার বিভাস সেন আদালতে সাক্ষ্য দিতে এসে বলেছেন, প্রদীপ সাহাকে ০৯-০১-১২ তারিখ রাত ৩.৩৫ মিনিটে গ্রেফতার করা হয়েছিল। অথচ ধুবুলিয়া থানার ৩৭১ নম্বর জিডিতে দেখা যাচ্ছে ওই দিন ২.১৫ মিনিটে বিভাস সেন নিজে প্রদীপ সাহা এবং সন্তু ভৌমিককে ধুবুলিয়া থানায় রেখে এসেছিলেন ‘সেফ কাস্টডি’ হিসেবে। এছাড়া ধুবুলিয়া থানার ৩৮৫ নম্বর জিডিতে দেখা যাচ্ছে পরের দিন, ১০-০১-১২ তারিখ সকাল ৯.১৫ মিনিটে ওই দু’জনকে সেফ কাস্টডি থেকে নবদ্বীপ থানায় ফেরানো হয়েছিল।” সামসুল মোল্লা আরও বলেন, “ওই দিন নবদ্বীপ থানার ৩৯৯ নম্বর জিডি থেকে দেখা যাচ্ছে রাত ১১.৩৫ মিনিটে পূর্বস্থলী থানা নবদ্বীপকে জানায় যে পূর্বস্থলীর বিধায়ক জানিয়েছেন নবদ্বীপ থানায় গুলি চলেছে। এর ভিত্তিতে নবদ্বীপ থানার পুলিশ ১১.৪৫ মিনিটে নবদ্বীপ হাসপাতালে পৌঁছায়। অর্থাৎ ওই রাতের ঘটনার খবর প্রথমে পূর্বস্থলী থানায় পৌঁছয়, নবদ্বীপ থানায় নয়। নবদ্বীপ থানাকে খবরটি কোন ব্যক্তি নন পূর্বস্থলী থানা দিয়েছিল। এইসব বিষয়গুলি আমরা আদালতের সামনে হাজির করতে চেয়ে ওই জিডিগুলি পেশ করার আবেদন করেছিলাম।”
এ দিন আদালতে হাজির ছিলেন প্রদীপ সাহা-সহ সজল ঘোষ হত্যা মামলার পাঁচ অভিযুক্ত।