সমস্যা মেটাতে গড়া হল কমিটি, তবু পড়ুয়াদের বিক্ষোভ কলেজে

কলেজ কর্তৃপক্ষ-পড়ুয়া সমস্যা মেটাতে প্রশাসন কমিটি গড়ে দেওয়া সত্ত্বেও ফের বিক্ষোভের রাস্তায় হাঁটলেন ছাত্রছাত্রীদের একাংশ। দুর্গাপুরের ফুলঝোড়ে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ওই পড়ুয়ারা শুক্রবার আটকে দেন শিক্ষকদের। এর জেরে নির্দিষ্ট সময়ে কলেজ থেকে বেরোতে না পারার ক্ষোভে শিক্ষকেরাও অবস্থান শুরু করেন কলেজে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৪ ০১:৫৯
Share:

শুক্রবার সন্ধ্যায় ফুলঝোড়ের কলেজে বিশ্বনাথ মশানের তোলা ছবি।

কলেজ কর্তৃপক্ষ-পড়ুয়া সমস্যা মেটাতে প্রশাসন কমিটি গড়ে দেওয়া সত্ত্বেও ফের বিক্ষোভের রাস্তায় হাঁটলেন ছাত্রছাত্রীদের একাংশ। দুর্গাপুরের ফুলঝোড়ে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ওই পড়ুয়ারা শুক্রবার আটকে দেন শিক্ষকদের। এর জেরে নির্দিষ্ট সময়ে কলেজ থেকে বেরোতে না পারার ক্ষোভে শিক্ষকেরাও অবস্থান শুরু করেন কলেজে। শেষে মহকুমা প্রশাসনের এক ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের মধ্যস্থতায় রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ কলেজ থেকে বেরিয়ে যান শিক্ষকেরা।

Advertisement

কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভব্য আচরণ, স্বৈরাচারী মনোভাবের অভিযোগ তুলে তাঁর অপসারণ চেয়ে ২০ অগস্ট বিক্ষোভ শুরু করে পড়ুয়ারা। তিন দিন বিক্ষোভ চলার পরে কলেজ কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্ট কালের জন্য পঠন-পাঠন বন্ধের কথা ঘোষণা করেন। সোমবার পড়ুয়া ও কলেজ কর্তৃপক্ষকে নিয়ে বৈঠক করেন মহকুমাশাসক কস্তুরী সেনগুপ্ত। তিনি কর্তৃপক্ষ, ছাত্র প্রতিনিধি, পুলিশ ও এক জন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটকে নিয়ে কমিটি গঠনের পরামর্শ দেন। মঙ্গলবার সেই কমিটি বৈঠক করে। বৈঠকে পড়ুয়াদের তরফে সময় চাওয়া হয়। তার মাঝেই শুক্রবার ফের বিক্ষোভ শুরু করে দেন কিছু পড়ুয়া।

কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বিক্ষোভে দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়ারাই সামিল হয়েছিলেন। তাঁদের ফের দাবি, অধ্যক্ষকে অবিলম্বে সরাতে হবে। কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন, অচলাবস্থা কাটাতে কমিটি গড়ে দিয়েছে প্রশাসন। সেই কমিটি ফের বৈঠকে বসবে। তা ছাড়া, এ ভাবে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললেই তাঁকে সরানো যায় না। অভিযোগ খতিয়ে দেখে তবেই সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়, যা সময়সাপেক্ষ।

Advertisement

কিন্তু পড়ুয়ারা অনড় থেকে বিক্ষোভ চালিয়ে যান। বিকেলে ছুটির পরে শিক্ষকেরা বেরোতে গেলে তাঁদের আটকে দেওয়া হয়। বেশ কিছুক্ষণ আটক থাকার পরে প্রতিবাদ জানাতে কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান শুরু করে দেন শিক্ষকেরা। বেগতিক দেখে কলেজ কর্তৃপক্ষ পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ পৌঁছয়। খবর পেয়ে পৌঁছন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সুমন বসু। তিনি দু’পক্ষকেই আপাতত শান্ত হতে আহ্বান জানান। কিন্তু তাতে খুব একটা কাজ হয়নি। সুমনবাবু শিক্ষকদের সঙ্গে কথাবার্তা বলতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ শিক্ষকেরা একে-একে কলেজ ছেড়ে যান। আজ, শনিবার ফের কমিটি বৈঠকে বসতে পারে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।

শিক্ষকদের পক্ষে কৌশিক সেনাপতি বলেন, “যে ভাবে প্রশাসনের গড়ে দেওয়া কমিটি এড়িয়ে আন্দোলনের রাশ নিজেদের হাতে তুলে নিচ্ছে পড়ুয়ারা, তা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। তা ছাড়া, এ ভাবে শিক্ষকদের আটকে রাখাও বেআইনি।” কলেজের চেয়ারম্যান দুলাল মিত্র বলেন, “আমরা দ্রুত কলেজ চালু করতে চাই। কিন্তু খুবই দুর্ভাগ্যের বিষয়, ওই পড়ুয়ারা নিয়ম-কানুন কিছুই মানছে না। এ ভাবে সমাধানে পৌঁছনো কঠিন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন