হাজির পুলিশকর্তা থেকে মন্ত্রী, বিয়ে ধুমধামে

প্রেম মাত্র দিন সাতেকের। আর তার পরেই বিয়ের আসর। বর্ধমানের ঢলদিঘির সরকারি হোমে মানুষ হওয়া মেয়ের বিয়ে রীতিমতো ধুমধাম করে হল শহরের বর্ধমান ভবনে। মঙ্গলবার রাতে সেই বিয়েতে কন্যা সম্প্রদান করলেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। বিয়ের মণ্ডপে রইলেন জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন, পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা। আর সারারাত দৌড়ঝাঁপ করে বিয়ের কাজকর্ম করলেন বর্ধমান চিলড্রেন ওয়েলফেয়ার কমিটির সদস্য শিখা আদিত্য।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৪ ০১:৩০
Share:

চলছে বিয়ের অনুষ্ঠান।—নিজস্ব চিত্র।

প্রেম মাত্র দিন সাতেকের। আর তার পরেই বিয়ের আসর। বর্ধমানের ঢলদিঘির সরকারি হোমে মানুষ হওয়া মেয়ের বিয়ে রীতিমতো ধুমধাম করে হল শহরের বর্ধমান ভবনে। মঙ্গলবার রাতে সেই বিয়েতে কন্যা সম্প্রদান করলেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। বিয়ের মণ্ডপে রইলেন জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন, পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা। আর সারারাত দৌড়ঝাঁপ করে বিয়ের কাজকর্ম করলেন বর্ধমান চিলড্রেন ওয়েলফেয়ার কমিটির সদস্য শিখা আদিত্য।

Advertisement

পাত্রীর নাম মমতা মাহাতো। পাত্র উজ্জ্বল ঘোষ। বাড়ি গুসকরার দিঘে গ্রামে। দিনে সাতেকের আলাপের পরেই বিয়ে, এ কথা জানিয়ে উজ্জ্বল বলেন, “ওকে দেখে ভাল লেগে গেল। তাই বিয়েটা সেরেই ফেললাম।” তাঁর আত্মীয় সঞ্জীবকুমার নায়েক বলেন, “মমতা তো আমাদের আউশগ্রামের একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে চাকরি করতেন। কাছেই বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন। এক দিন উজ্জ্বল এসে আমাকে বলল, ওই মেয়েকেই বিয়ে করব।”

শিখাদেবী জানান, বয়স যখন আড়াই, তখনই মমতাকে উদ্ধার করে এই সরকারি হোমে পৌঁছে দেয় পুলিশ। তার পরে সেটাই তাঁর ঘরবাড়ি। শেষে মাধ্যমিক পাশ মমতা সমাজকল্যাণ দফতরের সুপারিশে আউশগ্রাম ২ ব্লকে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে চাকরি পায়। আর সেই চাকরি করতে গিয়েই গুসকরার মুদিখানার মালিক ২৯ বছরের উজ্জ্বলের সঙ্গে দেখা বছর তেইশের মমতার।

Advertisement

চলতি বছরে এ নিয়ে হোমের তিনটি মেয়ের বিয়ে দিলেন শিখাদেবী। হাসতে-হাসতে তিনি বলেন, “আমার হোমের মেয়েরা বিয়ের পরে পরিবার নিয়ে সুখেই রয়েছে।” বিয়ের খরচের সিংহভাগ জোগাড় হয়েছে চাঁদা তুলে। সমাজকল্যাণ দফতর দিয়েছ ৭৫ হাজার টাকার অনুদান। সব মিলিয়ে মঙ্গলবার মমতা-উজ্জ্বলের বিয়েতে খরচ হয়েছে এক লক্ষ টাকা।

মন্ত্রী স্বপনবাবু বলেন, “এই বিয়েতে উপস্থিত থাকতে পেরে আমি খুব খুশি।” জেলাশাসক সৌমিত্র মোহনও বলেন, “সরকারি হোমে থাকা মেয়েরা বড় হলে তাদের চাকরি দেওয়ার চেষ্টা করি আমরা। তার পরে তাদের যাতে ভাল পরিবারে বিয়ে হয়, সেদিকেও লক্ষ থাকে। আনন্দের কথা, এই অনাথ মেয়েদের স্ত্রীর মর্যাদা দিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন অনেকেই। আমি তাঁদের অভিনন্দন জানাচ্ছি।” অনুষ্ঠানে উপস্থিত পুলিশ সুপার ও তাঁর স্ত্রী সাবা মির্জা বলেন, “এই অনুষ্ঠানে থাকতে পেরে আমরাও গর্বিত।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন