(বাঁ দিকে) মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার এবং বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার। তৃণমূল যে দিন দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের দফতরে গিয়ে জ্ঞানেশের বিরুদ্ধে তোপ দাগল, সে দিনই কলকাতায় সাংবাদিক বৈঠক ডেকে জ্ঞানেশের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি শোনালেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। পশ্চিমবঙ্গে ভীতিপ্রদর্শন এবং আতঙ্কের আবহে এসআইআর (ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন) প্রক্রিয়া চলছে বলে শমীক অভিযোগ করলেন। বিএলও (বুথস্তরীয় আধিকারিক) হিসাবে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁরা তৃণমূলের চাপের মুখে ভুল তথ্য আপলোড করতে বাধ্য হচ্ছেন দাবি করলেন তিনি। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে দায় মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকেই নিতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করলেন।
শমীকের অভিযোগ, বিজেপির বিএলএ-২ (বুথস্তরীয় প্রতিনিধি) হিসাবে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁরা বিভিন্ন এলাকায় আক্রান্ত হচ্ছেন, রক্তাক্ত হচ্ছেন, খুনের হুমকি পাচ্ছেন। আর বিএলওদের পঞ্চায়েত দফতরে, তৃণমূলের দলীয় দফতরে বা বিভিন্ন ক্লাবে তুলে নিয়ে গিয়ে ভুল তথ্য কমিশনের ওয়েবসাইটে আপলোড করত বাধ্য করা হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। শমীকের কথায়, ‘‘এর পরে যখন ওই তথ্য যাচাই হবে, তখন বিএলও হিসাবে কাজ করা এই স্কুল শিক্ষকেরা বা এই সরকারি কর্মীরা বিপদে পড়বেন। ভুল তথ্য আপলোড করার দায়ে এঁদের চাকরি যাবে, এঁদের এক বছর জেল খাটতে হবে।’’
এই পরিস্থিতির দায় মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশকেই নিতে হবে বলে রাজ্য বিজেপির সভাপতি শুক্রবার মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘‘বিএলওদের যে পরিস্থিতির শিকার হতে হচ্ছে, তার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনকে নিতে হবে। দিল্লিতে জ্ঞানেশ কুমার বসে থাকবেন, দু’তিনটে জ্ঞানগর্ভ কথা বলবেন আর পশ্চিমবঙ্গের স্থিতি অন্য রকম হবে, এটা হতে পারে না।’’ শমীকের কথায়, ‘‘জ্ঞানেশ কুমারকে এখানে আসতে হবে। কী অবস্থায় বিএলওরা রয়েছেন, দেখতে হবে। দু’জন প্রতিনিধি পাঠিয়ে দিলে চলবে না।’’ শমীকের দাবি, মুখ্য নির্বাচন কমিশনার প্রয়োজনে কলকাতায় আসুন, কলকাতার অফিসে বসে এসআইআর প্রক্রিয়ার তদারকি করুন। দরকার হলে বর্ধমানে বা ডায়মন্ড হারবারে যান। সেখানে কী পরিস্থিতিতে কাজ হচ্ছে দেখে আসুন।
গত বুধবার দিল্লিতে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দফতরে গিয়েছিলেন শমীকেরা। পশ্চিমবঙ্গে এসআইআর প্রক্রিয়ায় যে সব সমস্যা হচ্ছে বলে বিজেপি মনে করছে, তা নিয়ে চিঠিও দিয়ে এসেছিলেন জ্ঞানেশকে। শুক্রবার জ্ঞানেশের উদ্দেশে শমীক বলেন, ‘‘আপনি যদি মনে করেন যে, দিল্লিতে বসে থাকবেন, মাঝেমধ্যে কয়েকটা স্মারকলিপি জমা নেবেন আর ওখান থেকে নজরদারি চালিয়েই পশ্চিমবঙ্গে এসআইআর করে ফেলবেন, তা হলে ভুল করছেন।’’ আগামী সপ্তাহে বিজেপির প্রতিনিধি দল আবার কমিশনের দিল্লি দফতরে যাবে বলে শমীক জানিয়েছেন।