বাংলায় বদলের ডাক গৌরব-সোমেনদের

দেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বলেছেন, ‘‘পরিবর্তন আনার লড়াইয়ে কংগ্রেসও সামিল ছিল। কিন্তু বদল হল না, বদলার রাজনীতি হল! নতুন শিল্প নেই, ঘুষ ছাড়া চাকরি নেই, পুলিশের মেরুদণ্ড নেই। এই পরিবর্তনের পরিবর্তন আনতে হবে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৫:০৬
Share:

সম্মান: সোমেন মিত্রকে প্রণাম অধীর চৌধুরীর। বুধবার শহরে কংগ্রেসের সমাবেশে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

হিন্দি বলয়ের তিন রাজ্যে সাফল্যের রেশ ধরে উৎসাহিত কংগ্রেস এ বার বাংলায় ‘পরিবর্তনে’র পরিবর্তন আনার জন্য লড়াইয়ে ঝাঁপানোর ডাক দিল। আগামী লোকসভা নির্বাচনে কেন্দ্র থেকে বিজেপিকে উৎখাত এবং রাজ্যে পরের বিধানসভা ভোটে নবান্ন থেকে তৃণমূলকে সরানোর লক্ষ্যে কর্মী-সমথর্কদের পরিশ্রম করার আহ্বান জানালেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। দীর্ঘ দিন বাদে প্রকাশ্য মঞ্চে একসঙ্গে দেখা গেল সোমেন মিত্র, অধীর চৌধুরী, আব্দুল মান্নান, দীপা দাশমুন্সি-সহ প্রদেশ কংগ্রসের গোটা নেতৃত্বকেই।

Advertisement

কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিভাজনের রাজনীতি এবং দুর্নীতির প্রতিবাদে বুধবার রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে কংগ্রেসের সমাবেশ রাতারাতিই বদলে গিয়েছিল ‘বিজয় সমাবেশে’। নানা জেলা থেকে আসা কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের ভিড় রানি রাসমণি থেকে উপচে পড়েছিল চৌরঙ্গির দিকে। আবির, বাজনা নিয়ে এসেছিল কিছু মিছিল। রাজারহাটের জমি আন্দোলনকারী কৃষকেরাও এসেছিলেন মিছিল করে। ভিড় দেখে উজ্জীবিত কংগ্রেস নেতৃত্ব প্রশ্ন তোলেন, আরএসএসের গড় মধ্যপ্রদেশে বিজেপিকে হারানো গেলে বাংলায় কেন বদল সম্ভব নয়? কেন্দ্রীয় এই সমাবেশে ৭ থেকে ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত জেলা ধরে ধরে আইন অমান্য কর্মসূচিও ঘোষণা করা হয়েছে।

বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত এআইসিসি-র নেতা গৌরব গগৈ সমাবেশে সাফ বলেছেন, ‘‘এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দিল্লিতে কংগ্রেস নেতৃত্বকে মিষ্টি খাওয়াচ্ছেন, আর বাংলায় কংগ্রেসকে মারছে তৃণমূল। দিল্লিতে মিষ্টি আর বাংলায় লাঠি— এই রাজনীতি চলবে না! দিল্লির কংগ্রেসও এই রাজনীতির কথা জানে। দিল্লির কংগ্রেস বাংলার পাশেই আছে।’’ বাংলার কংগ্রেস কর্মীদের আন্দোলনে পাশে থেকে তিনিও জেলে যেতে তৈরি বলে জানিয়েছেন গৌরব। স্বয়ং রাহুল গাঁধীর দূত গৌরব যে ভাবে তৃণমূলের ‘দ্বিমুখী নীতি’র বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সরব হয়েছেন এবং বাংলায় সরকার বদলানোর লড়াইয়ে দলের কর্মীদের ঝাঁপাতে বলেন, তার পরে লোকসভা ভোটে তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের সমঝোতার সম্ভাবনা নেই বলেই মত প্রদেশ নেতৃত্বের বড় অংশের।

Advertisement

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বলেছেন, ‘‘পরিবর্তন আনার লড়াইয়ে কংগ্রেসও সামিল ছিল। কিন্তু বদল হল না, বদলার রাজনীতি হল! নতুন শিল্প নেই, ঘুষ ছাড়া চাকরি নেই, পুলিশের মেরুদণ্ড নেই। এই পরিবর্তনের পরিবর্তন আনতে হবে।’’ বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের প্রশ্ন, তৃণমূলের জমানায় সংখ্যালঘুদের সত্যিই উন্নয়ন হয়েছে কি? সংখ্যালঘু সংগঠন থেকে কিছু লোকজন এ দিনের মঞ্চেই কংগ্রেসে যোগ দেন। প্রদেশ কংগ্রেসের প্রচার কমিটির চেয়ারম্যান অধীর চৌধুরী আগামী দিনে ব্রিগেড সমাবেশের ডাক দিয়ে বলেন, ‘‘এ বারের লোকসভা ভোটে মোদী আর দিদির বিরুদ্ধে রাহুল গাঁধীর হাত শক্ত করতে হবে।’’

প্রদীপ ভট্টাচার্য, দীপা, অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়-সহ সব নেতাই সংগঠনকে চাঙ্গা করতে চেয়েছেন। তবে তার মধ্যেই অমিতাভ চক্রবর্তী মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘অন্য রাজ্যে জিতলে আমরা আনন্দ করি, বাজি ফাটাই। কিন্তু অন্য রাজ্যে কর্মীরা যে পরিশ্রম করেন, সেটা করি না!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন