পূর্ব বর্ধমানের দাঁইহাটে সিপিএমের পার্টি অফিসে হামলা হয়েছে জেনে খবর সংগ্রহ করতে গিয়েছিলাম। আচমকা মোবাইলে ফোন এল, কাটোয়ার পানুহাটে নাকি ব্যাপক গোলমাল হচ্ছে।
কিছু ক্ষণের মধ্যেই সঙ্গী চিত্রসাংবাদিক অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়, আর অন্য একটি কাগজের সাংবাদিক প্রণব দেবনাথের সঙ্গে ওই এলাকায় যাই। দেখি, ইঁদারাপাড় মোড়ের একটি চায়ের দোকানের সামনে ২০-২৫ জন যুবকের জটলা। তাদের সঙ্গে বিজেপির পতাকা। প্রায় প্রত্যেকের মুখে রুমাল বাঁধা। এগোতেই চোখে পড়ল, এলাকায় বিজেপির নেত্রী বলে পরিচিত এক মহিলার উপস্থিতিতে দোকানদারের কলার চেপে গালিগালাজ করা হচ্ছে। সঙ্গে চলছে জেরা, ‘তোর মতলবটা কী?’
স্থানীয় সূত্রে তত ক্ষণে অভিযোগ শুনেছি, বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা এ দিন সকালে কাটোয়া ১ ব্লক অফিসে মনোনয়ন জমা দিতে গেলে তাঁদের মারধর করা হয়েছে। বিজেপি প্রতিবাদে ধর্নায় বসে পড়ে ইঁদারাপাড় মোড়ে। সেই সময় ধর্নায় হাজির থাকা কিছু লোকের ধারণা হয়, স্থানীয় চায়ের দোকানদার নিশ্চয় তাঁদের উপরে ‘নজরদারি’ করছেন।
মোবাইল বার করে ঘটনার ভিডিয়ো এবং ছবি তোলা শুরু করতেই ‘রে রে’ করে তেড়ে এসে যুবকেরা ঘিরে ধরে আমাদের। প্রণবদাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় কয়েক জন। কিছু বোঝার আগেই আমার বুকে ঘুসি মারে এক জন। ছিটকে পড়ি রাস্তায়। মোবাইলটা হাতছাড়়া হয়ে যায়। তখন চলছে শাসানি আর গালিগালাজ। জানতে চাওয়া হচ্ছে, ‘কেন ছবি তুললি’? ঘটনার আকস্মিকতায় আমি কথা বলতে পারছিলাম না। অসিতদা, প্রণবদা চিৎকার করে ওঠেন, ‘গায়ে হাত দিচ্ছেন কেন?’
গোলমাল দেখে এত ক্ষণ দূরে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েক জন এগিয়ে আসেন। আমাকে উঠে দাঁড়াতে সাহায্য করে তাঁদেরই দু’-এক জন বলেন, ‘দিদি, ক্ষমা করে দিন!’ এর পরেও ওখানে ছিলাম বেশ কিছু ক্ষণ। দেখি, যে যুবক ঘুসি মেরেছিল, তার মুখের রুমাল খুলে গিয়েছে। মুখ চেনা। নাম জানি না।