অশান্তি রুখতে পদক্ষেপ

তিন জেলায় তিন পদস্থ পুলিশকর্তা

নবান্নের এক কর্তার কথায়,‘‘যে দুটি জেলায় মারাত্মক হিংসার অভিযোগ উঠেছে, বিরোধীদের মনোনয়নে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ এসেছে সেখানেই প্রথমে সিনিয়র অফিসারদের পাঠানো হল।

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৪৩
Share:

সব যে ঠিকঠাক চলছে না তা অবশেষে মেনে নিল নবান্ন। তাই মনোনয়নের পর্বের শেষ তিন দিন যাতে শান্তি বজায় থাকে সে জন্য গোলমালের জেলাগুলিতে সিনিয়র পুলিশ অফিসারদের পাঠানো হচ্ছে। প্রথম দফায় বীরভূম, উত্তর দিনাজপুর ও বাঁকুড়ায় যাচ্ছেন তিন উচ্চপদস্থ অফিসার— দুই আইজি জাভেদ শামিম, দেবাশিস বড়াল এবং ডিআইজি বাস্তব বৈদ্য। তাঁরাই মনোনয়ন পর্বে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের কাজ করবেন বলে নবান্ন থেকে জানা গিয়েছে। তবে মুর্শিদাবাদের কথাও প্রশাসনের মাথায় রয়েছে। সরকার মনে করছে, বীরভূম, বাঁকুড়া ও উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করতে সমর্থ হচ্ছে না।

Advertisement

নবান্নের এক কর্তার কথায়,‘‘যে দুটি জেলায় মারাত্মক হিংসার অভিযোগ উঠেছে, বিরোধীদের মনোনয়নে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ এসেছে সেখানেই প্রথমে সিনিয়র অফিসারদের পাঠানো হল। দরকার হলে অন্য জেলাগুলিতেও পাঠানো হবে। সরকার চায়, শান্তিতে মিটুক মনোনয়ন।’’

মনোনয়নই এখন সরকারের অগ্রাধিকারে। সে কারণে আসানসোল-রানিগঞ্জে মোতায়েন হওয়া ১২০০ সশস্ত্র পুলিশ, র‌্যাফ তুলে নিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে জেলায় জেলায়। রামনবমীর মিছিল ঘিরে গোষ্ঠী সংঘর্ষের সময় আশপাশের জেলাগুলি থেকে সশস্ত্র বাহিনী আসানসোলে আনা হয়েছিল। সেই বাহিনী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত মোতায়েন ছিল। মনোনয়নের সময় কেন ব্লক অফিসগুলিতে পর্যাপ্ত পুলিশ নেই, সেই প্রশ্ন তুলেছিল নবান্ন। পুলিশ সুপাররা তখন জানিয়েছিলেন, তাঁদের জেলার রিজার্ভ ফোর্সের বড় অংশ আসানসোলে চলে গিয়েছে। ফলে তাঁদের হাতে পুলিশ নেই। এ কথা শোনার পর আসানসোল থেকে পুলিশ তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। নবান্নের এক শীর্ষ কর্তার কথায়,‘‘আসানসোল-রানিগঞ্জের অবস্থা এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। ফলে বিশাল পুলিশ বাহিনী থাকার প্রয়োজন নেই।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: মনোনয়ন সুষ্ঠু করতে বলল কোর্ট

আসানসোলে মোতায়েন বাহিনী বিভিন্ন জেলায় ফেরত যাওয়ার পর পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে দাবি করেছেন পুলিশ কর্তারা। সেই আসানসোলেও অবশ্য গোষ্ঠী সংঘর্ষ মোকাবিলা করতে স্থানীয় পুলিশ ব্যর্থ হয়েছিল। পাহাড়ে গোলমাল সামলানো কয়েকজন আইপিএস অফিসারকে সেখানে পাঠিয়ে অবস্থা সামাল দেওয়া হয়েছিল। আসানসোলে যাওয়া জাভেদ শামিমকেই এখন আবার বীরভূমে পাঠানো হচ্ছে। জাভেদ এক সময় বোলপুরের এসডিপিও ছিলেন। ফলে বীরভূমের গতিপ্রকৃতি তাঁর জানা। বাস্তব বৈদ্যও জঙ্গলমহল এবং স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স-এ দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় তাঁরও দক্ষতা যথেষ্ট। আর এক অফিসার দেবাশিস বড়ালেরও আইন-শৃঙ্খলা মোকাবিলায় সুনাম রয়েছে। নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময়ে অধিকারীপাড়ায় গুলি চালনার ঘটনায় তাঁর নামে সিবিআই এফআইআর করতে চেয়ে রাজ্যের অনুমতি চেয়েছিল। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটের সময় নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে তিনি যথাযথ ভূমিকা পালন করেছিলেন বলেই তাঁর সতীর্থরা মনে করেন। কিন্তু ‌ভোট মিটতেই তাঁকে কম্পালসারি ওয়েটিংয়ে পাঠায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসন। অভিযোগ ছিল, দেবাশিসবাবু ভোটের সময় অতিসক্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। তাঁকেই পঞ্চায়েত ভোটের আগে ‘অতি সক্রিয়’ হতে উত্তর দিনাজপুরে পাঠাচ্ছে সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement