আদালতের নির্দেশে থমকে গিয়েছে ভোট-প্রক্রিয়া। মনোনয়ন প্রত্যাহার পর্ব কার্যত শুরুই হয়নি। কিন্তু এখনই প্রায় ২৭ শতাংশ আসনে শাসক দলের বিরুদ্ধে কোনও প্রার্থীই নেই। এ রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোটের সাম্প্রতিক ইতিহাসে যা নজিরবিহীন।
২০০৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে ৬,৮০০ আসনে কোনও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি। অঙ্কের নিরিখে যা প্রায় ১১ শতাংশ। সে বার বিনা ভোটে জেতাদের বেশির ভাগই ছিলেন বাম প্রার্থী। রাজ্যে পালা বদলের পরে ২০১৩ সালে ভোট করার দরকার হয়নি ৬,২৭৪টি আসনে। সেই সাড়ে দশ শতাংশ আসনের অধিকাংশই জিতেছিল তৃণমূল।
কিন্তু এ বার পঞ্চায়েতের তিনটি স্তর মিলিয়ে মোট ৫৮,৬৯২টি আসনের মধ্যে এক জন প্রার্থী থাকা আসনের সংখ্যা ১৬ হাজারের বেশি। তাঁদের প্রায় সবাই-ই তৃণমূলের।
নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, মনোনয়নপত্র পরীক্ষার পরে গ্রাম পঞ্চায়েতের ৪৮,৬৫০ আসনের মধ্যে প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার আসনে এক জন প্রার্থী রয়েছেন।
পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষেত্রে ৯,২১৭টি আসনের মধ্যে আড়াই হাজারের মতো আসনে প্রার্থীর সংখ্যা এক। আর জেলা পরিষদের ৮২৫টি আসনের মধ্যে ১৩০টি আসনে কোনও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে না। ফলে এখনকার হিসেবমতো অন্তত দুটি জেলা পরিষদ, বীরভূম ও বাঁকুড়া জিতে গিয়েছে তৃণমূল।
এখানেই শেষ নয়। গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির স্তরে নির্দল প্রার্থী রয়েছেন ১২ হাজারের বেশি। এমন অনেক আসন রয়েছে, যেখানে শাসক দলের বিরুদ্ধে শুধু নির্দল প্রার্থীই রয়েছেন। সূত্রের খবর, তাঁদের অনেকে আবার তৃণমূলেরই লোক। ফলে শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেবেন। ফলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা আরও কমবে।
এর পর মনোনয়ন প্রত্যাহার পর্ব শুরু হলে শাসক দল ভয় দেখিয়ে, চাপ দিয়ে তাদের প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারে বাধ্য করাবে বলে আশঙ্কা বিরোধীদের। সে ক্ষেত্রে বিনা ভোটে জয়-পরাজয় নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়া আসনের সংখ্যা আরও বাড়বে বলেই অভিমত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। তবে শাসক দলের বক্তব্য, তারা কাউকেই চাপ দিয়ে মনোনয়ন তোলায়নি।