বিকাশ বিশ্বাস। নিজস্ব চিত্র
গামছায় মুখ ঢেকে স্কুলে ঢুকে জেলা পরিষদের এক বিজেপি প্রার্থী তথা শিক্ষককে পড়ুয়াদের সামনেই মারধর করার অভিযোগ উঠল পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসায়। পঞ্চায়েত ভোটের প্রথম পর্ব মেটার পর দিন, মঙ্গলবার তেমনই ঘটেছে বলে অযোধ্যা হাইস্কুলের ওই শিক্ষক বিকাশ বিশ্বাস মহকুমাশাসকের (দুর্গাপুর) কাছে জানান। তাঁর অভিযোগ, ‘তৃণমূল-আশ্রিত দুষ্কৃতীরা’ ওই হামলা চালিয়েছে। তৃণমূলের পশ্চিম বর্ধমান জেলা কার্যকরী সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘রাজনীতি নয়, অন্য আক্রোশে এমন হতে পারে।’’ মহকুমাশাসক শঙ্খ বিশ্বাস বলেন, ‘‘পুলিশকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’’ সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে তদন্ত করছে পুলিশ।
ভোটের আঁচ স্কুল চত্বরে পড়বে কেন, সে প্রশ্ন তুলে বামপন্থী শিক্ষক সংগঠন এবিটিএ-র জেলা নেতা সিদ্ধার্থ বসু বলেন, ‘‘এক সময় স্কুলে ঢুকে শিক্ষকদের উপরে মাওবাদীরা হামলা করেছে, বলে শোনা যেত। সেই অরাজকতা মনে করাচ্ছে এই ঘটনা!’’
স্কুলে ঢুকে হামলা দল সমর্থন করে না জানিয়ে ‘তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি’র সভাপতি (দুর্গাপুর) কলিমুল হক বলেন, ‘‘ওই শিক্ষক স্কুলে অনুপস্থিত থাকেন। পরীক্ষার খাতাও দেখেননি। তাই এলাকাবাসীর ক্ষোভ আছে। তার জেরে এমনটা ঘটেছে কি না, খতিয়ে দেখা উচিত।’’
আরও পড়ুন:
হিংসা চলছেই, রাজ্যে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২১
‘অশান্ত বাংলায় নিহত গণতন্ত্র’, পঞ্চায়েত নিয়ে চড়া আক্রমণে মোদী
১৯ জেলায় ৫৭৩ বুথে আজ ভোট
বিকাশবাবু কাঁকসায় জেলা পরিষদের ১ নম্বর আসনের প্রার্থী। তাঁর অভিযোগ, ‘‘মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য চাপ দিচ্ছিল তৃণমূল। তবে মাথা নোয়াইনি।’’ তাঁর দাবি, আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় ভোটের আগে বিশেষ প্রকাশ্যে আসেননি। সে জন্যই স্কুলে অনুপস্থিত ছিলেন। এ দিন স্কুলে আসেন। বিকাশবাবুর অভিযোগ, ‘‘দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ গামছায় মুখ ঢাকা জনা কুড়ি লোক স্কুলে ঢুকে স্টাফরুম থেকে বার করে মাটিতে ফেলে মারধর করে। ভোটে কেন লড়েছি, সেই প্রশ্ন করে গালি দিচ্ছিল ওরা। সহকর্মীরা ছুটে আসার আগেই লোকগুলো পালায়।’’ পুলিশে অভিযোগ করলে খুনের হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে দাবি তাঁর। কাঁকসা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তাঁর চিকিৎসা হয়।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্বপন গাঁধীকে বহু বার ফোন করেও যোগাযোগ করা যায়নি। উত্তর আসেনি এসএমএস-এর। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিকাশবাবুর একাধিক সহকর্মী বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীরা স্থানীয় লোক বলে ধারণা। তাই ওরা মুখ ঢেকে এসেছিল। স্কুলের স্টাফরুম কোথায়, তা-ও জানত।’’