দলনেত্রীর বিশেষ সুপারিশে রাতারাতি প্রার্থী হয়ে ছিলেন তিনি। তবে, মুখ রাখতে পারলেন না, হেরে গেলেন।
ইরাকের মসুলের গণকবর থেকে তুলে আনা নদিয়ার ইলশেমারির দুই যুবকের দেহ গ্রামে ফেরানোর পরে তাঁদের পরিবারের সঙ্গে তিনি ছিলেন ছায়ার মতো।
দিন কয়েক পরে, নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাঁর হাত ধরেই গিয়েছিলেন মৃত দুই যুবকের পরিজনেরা। আর, সেখানেই সুযোগ বুঝে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ঠুকে এসেছিলেন নালিশ— ‘দিদি আমাকে এ বার প্রার্থী করল না দল!’
তিনি সুমনা বিশ্বাস। চাপড়ার মহেশপুর পঞ্চায়েতের বিদায়ী প্রধান। দলীয় সূত্র বলছে, সুমনার তৎপরতায় ‘মুগ্ধ’ মুখ্যমন্ত্রী নালিশ শুনেই দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ডেকে জানিয়ে দিয়েছিলেন মহেশপুরে অন্য কেউ নয়, সুমনাকেই প্রার্থী করতে হবে। যেমন কথা তেমনই কাজ। ঝর্ণা বিশ্বাস নামে যাঁকে প্রার্থী করা হয়েছিল, দেড় ঘণ্টার নোটিশে তাঁর জায়গায় ফের প্রতীক পেয়ে গিয়েছিলেন সুমনা।
তবে, প্রতীক কেড়ে নেওয়ার ‘অপমান’টা মেনে নিতে পারেননি তিনি। কাঁঠাল প্রতীক নিয়ে নির্দল হয়ে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন ওই আসনেই। ফল বেরোলে দেখা গেল, অনেকটাই পিছনে ফেলে ১৬০ ভোটে সুমনাকে হারিয়ে দিয়েছেন তিনি। প্রাপ্ত ভোটের নিরিখি ঝর্ণা পেয়েছেন ৪৫১ ভোট আর সুমনা ২৯১টি ভোট।
তৃণমূলের এক স্থানীয় নেতা বলছেন, ‘‘সুমনাকে প্রার্থী না করার সিদ্ধান্তের মূল কারণ ছিল, ওঁর বিজেপি’র দিকে পা বাড়িয়ে থাকা। নেত্রী সে কথা জানতেই পারলেন না, জোর করে প্রার্থী করলেন বটে, যা হওয়ার তাই হল!’’
সুমনা একা নন, গোঁজের ধাক্কায় দলীয় প্রতীকে প্রার্থী হয়েও হেরে গিয়েছেন এমন অনেক তৃণমূল প্রার্থী।