Panchayat Poll 2018

শ্যালক-জামাই এক দলেরই, তবু ‘লড়াই’

মাসখানেক আগে দু’জন পরস্পরের বিরুদ্ধে ভাড়াটে খুনি লাগিয়ে খুনের চক্রান্তের অভিযোগ পর্যন্ত দায়ের করেছেন থানায়। সম্পর্কটা পুরো ‘সাপে-নেউলে’! এক জন অন্যকে বলছেন, ‘‘দুর্নীতিগ্রস্ত।’’ অন্য জনের পাল্টা তোপ, ‘‘ও তো দুষ্কৃতী।’’

Advertisement

পীযূষ নন্দী

খানাকুল শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৮ ০৩:২১
Share:

প্রতীকী ছবি।

দু’জনে একই দলের। একই পরিবারেরও। কিন্তু দু’জনের কথা নেই। বাড়ি কাছাকাছি হলেও যাতায়াত নেই অন্তত দু’বছর। মাসখানেক
আগে দু’জন পরস্পরের বিরুদ্ধে ভাড়াটে খুনি লাগিয়ে খুনের চক্রান্তের অভিযোগ পর্যন্ত দায়ের করেছেন থানায়। সম্পর্কটা পুরো ‘সাপে-নেউলে’! এক জন অন্যকে বলছেন, ‘‘দুর্নীতিগ্রস্ত।’’ অন্য জনের পাল্টা তোপ, ‘‘ও তো দুষ্কৃতী।’’

Advertisement

খানাকুলের চিংড়া পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখল নিয়ে রীতিমতো ‘লড়াই’ বেঁধেছে সেখানকার বিদায়ী প্রধান কার্তিক ইশর এবং তাঁর শ্যালক, জেলা পরিষদের বিদায়ী সদস্য বিভাস মালিকের। পঞ্চায়েত বিরোধীশূন্য হলেও শ্যালক-জামাইবাবুর কাজিয়ায় তেতে আছে এলাকা। বিভাসের সাফ কথা, ‘‘জামাইবাবুর দুর্নীতির প্রতিবাদেই আমার লড়াই। কার্তিক ছাড়া প্রধান হওয়ার কি আর কেউ নেই!’’ কার্তিকের পাল্টা জবাব, ‘‘বিভাস তো দুষ্কৃতী। পঞ্চায়েতের কাজে ও মাথা গলাতে চাইছে কেন? আগের বার পঞ্চায়েত তো দিব্যি চলেছে। আমার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ ওঠেনি। ও দলের ক্ষতি করতে চাইছে।’’

ওই পঞ্চায়েতের আসন সংখ্যা ১৫। পঞ্চায়েত সমিতির আসন রয়েছে তিনটি। সেখানেও বিরোধী নেই। কার্তিক ভোটে দাঁড়ালেও বিভাস দাঁড়াননি। তৃণমূলের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বার পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের পর থেকেই বিভাস-কার্তিক বিবাদ শুরু। এলাকা উন্নয়ন প্রকল্পে কর্তৃত্ব বজায় রাখতে চান দু’জনেই।
তা নিয়ে দু’জনের অনুগামীদের সংঘর্ষও হয়েছে। গত বছর অগস্টে বিভাসকে গাছে বেঁধে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল কার্তিক ও তাঁর লোকজনের বিরুদ্ধে। এ বার দু’পক্ষই পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিতে প্রার্থী দেয়। পরে অবশ্য বিধায়ক দু’পক্ষের মধ্যে আসন বণ্টন করে দেন। সেই মতো পঞ্চায়েতের আটটি আসন কার্তিক গোষ্ঠী এবং সাতটি আসন বিভাস গোষ্ঠী পায়। পঞ্চায়েত সমিতির তিনটি আসনের মধ্যে একটি পেয়েছে কার্তিক গোষ্ঠী, দু’টি বিভাস গোষ্ঠী।

Advertisement

বিধায়ক ইকবাল আহমেদের দাবি, ‘‘দলে আর কোনও সমস্যা নেই। ছোটখাটো বিরোধগুলো মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রধান কে হবেন, তা এখনও স্থির হয়নি।” দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন কার্তিক। তিনি বলেন, ‘‘দল যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটাই হবে।’’ একই বক্তব্য বিভাসেরও।

তবু গ্রামবাসী বলছেন, শ্যালক-জামাইয়ের লড়াই ফের শুরু হল বলে। দু’দিনও কেউ চুপচাপ থাকতে পারেন না। পুলিশ জানিয়েছে, খুনের চক্রান্তের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আর দু’জনের বাড়ির লোক মনে করছেন, রাজনীতির জন্যেই সম্পর্কটা বিষিয়ে গেল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন