বাঘ-কথা: তৃণমূলের প্রচারে। নারায়ণগড়ে। —নিজস্ব চিত্র
না থেকেও দিব্যি রয়েছে সে। ভোটের জঙ্গলমহলে পুরোদস্তুর হাজির ‘ডোরাকাটা’।
নারায়ণগড়ের মকরামপুরে তৃণমূলের নির্বাচনী হোর্ডিংয়ের বড় বাড় হরফে ‘বাঘের গর্জন’। পাশে বাঘের ছবি, সঙ্গে ছবি মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীরও। এই হোর্ডিং নিয়ে শুরু হয়েছে তৃণমূল-বিজেপি চাপানউতোর। শাসকদলের বক্তব্য, তারাই প্রকৃত বাঘ। আর বিরোধীদের প্রশ্ন, যারা বাঘকে রক্ষা করতে পারে না, তারা মানুষকে রক্ষা করবে কী ভাবে।
বাঘ নিয়ে ইতিমধ্যে একদফা তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক তরজা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মানেকা গাঁধীর সংঘাত প্রকাশ্যে এসেছে। সে সংঘাতের উৎপত্তি অবশ্য নীচুতলায়। ‘বাঘের গর্জন’ সম্বলিত হোর্ডিংয়ে বিজেপির ব্যর্থতার নানা দিক প্রচার করা হচ্ছে। ওই হোর্ডিংয়ে লেখা— ‘২ টাকা দামের প্ল্যাটফর্মের টিকিট ২০ টাকা করল কে? বিজেপি আবার কে?’, ‘২২ শতাংশ রেলের ভাড়া বাড়াল কে? বিজেপি আবার কে?’ ‘মিড ডে মিলের টাকা কাটল কে? বিজেপি আবার কে?’ ‘আইসিডিএসের টাকা বন্ধ করল কে? বিজেপি আবার কে!’ এলাকার এক তৃণমূলকর্মীর কথায়, “আমাদের নেতারা বাঘের মতোই! একবার গর্জন করলে বাকি সকলে ভয়ে পালিয়ে যাবে!” হোর্ডিংয়ের ছবিতে যে নেতা উজ্জ্বল, সেই শুভেন্দুর সঙ্গে অবশ্য এ দি চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। ফোন ধরেননি তিনি।
তৃণমূলের গর্জন কি বাঘের মতোই? তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির জবাব, “কেউ কেউ (ইঙ্গিত বিজেপিকে) নিজেদের বাঘ বলে। তবে তারা বাঘ নয়। বেড়াল!” বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাশের আবার কটাক্ষ, “কে বাঘ আর কে বেড়াল, সেটা মানুষ জানেন।”
শাসক দলের অন্দরের খবর, বাঘ নিয়ে মানুষের মধ্যে কিছুটা হলেও অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। বিজেপি সেই অসন্তোষ কাজে লাগাতে মরিয়া। বিজেপির জেলা সভাপতির কথায়, ‘‘যারা একটা বাঘকে রক্ষা করতে পারেনি, সেই তৃণমূল নাকি মানুষকে রক্ষা করবে! কী ভাবে রক্ষা করবে বুঝে উঠতে পারছি না! নির্বাচনী প্রচারেও আমরা মানুষের কাছে এ কথা বলছি।’’ ভোটব্যাঙ্কে ধস নামতে পারে এই আশঙ্কায় আদিবাসীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।
বাঘ নিয়ে শাসক-বিরোধী তাল ঠোকাঠুকিতে জমে উঠেছে ভোট-রাজনীতি।