Tarique Rahman

সমালোচক তারেক বিকল্প নয়াদিল্লির

তবে বিএনপি ক্ষমতায় এলেও তা যে শেখ হাসিনার সময়ের 'দ্বিপাক্ষিক সোনালি অধ্যায়' হবে না, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে চাইছে কেন্দ্র। তারেকের বাংলাদেশে ফেরা নিয়ে তাই বাড়তি একটি শব্দও উচ্চারণ করা হয়নি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৭:০৫
Share:

তারেক রহমান। — ফাইল চিত্র।

এক সময় সাউথ ব্লকের অভিযোগ ছিল, সরকারের সমান্তরাল অফিস থেকে ভারত-বিরোধী জিগির তুলছেন তিনি,বাংলাদেশে। তিনি ও তাঁর মা খালেদা জিয়া ছিলেন এল কে আডবাণীর হিন্দুত্ব নীতির কড়া সমালোচক। কুড়ি বছর পর উপায় না থাকায় আজ সেই তারেক রহমানকেই বিকল্প হিসেবে বেছে নিতে হচ্ছে সাউথ ব্লককে।

তবে বিএনপি ক্ষমতায় এলেও তা যে শেখ হাসিনার সময়ের 'দ্বিপাক্ষিক সোনালি অধ্যায়' হবে না, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে চাইছে কেন্দ্র। তারেকের বাংলাদেশে ফেরা নিয়ে তাই বাড়তি একটি শব্দও উচ্চারণ করা হয়নি। বরং যে অবস্থান নয়াদিল্লি নিয়েছে তাকেই পুনর্ব্যক্ত করে বিএনপিকে বার্তা দিতে চেয়েছে বিদেশমন্ত্রক। এই প্রত্যাবর্তনের সঙ্গে সুষ্ঠু, অবাধ এবং সবাইকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনের আয়োজনকে সংযুক্ত করে তারেকের দায়িত্ব স্মরণ করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে ভারতের তরফে।

এটাও খেয়াল রাখা হচ্ছে দেশে ফিরে তাঁর বক্তব্যে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা তোলেননি বিএনপি-র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। বরং ইসলাম ধর্মের কথাই বলেছেন। তাঁর ১২ দলের জোটে তিনটি উগ্র ইসলামপন্থী দল রয়েছে, যারা সংখ্যালঘুর ত্রাসের কারণ হয়ে উঠতে পারে ভবিষ্যতে। তবে এই মুহূর্তে ভারতকে পরিস্থিতি হজম করে নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে উপায় না থাকায়।

নয়াদিল্লির বক্তব্য, একাত্তরের যুদ্ধের সময়েও বাংলাদেশের ২০ শতাংশ মানুষ মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ছিল এবং ভারত-বিরোধিতা করেছিল। বাংলাদেশের মাটিতে সেই ভারত বিরোধিতা প্রবাহিত হয়েছে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, পাশাপাশি ভারত-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক এবং দু'দেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্ক বহাল থেকেছে। এই প্রবল ভারত-বিরোধী হিংসার মধ্যেও সম্পর্কের সেই মূল সুরটিকে ধরে রাখতে চাইছে ভারত। নয়াদিল্লির আশা, তারেক এলে সেটা বজায় রাখাটা অপেক্ষাকৃতভাবে সুবিধাজনক হবে। অন্য দিকে, জামায়াতে ইসলামীর হাত শক্ত হলে বাংলাদেশে যেমন সংখ্যালঘুর উপর নিপীড়ন বাড়বে, তেমনই সীমান্তে অনুপ্রবেশ এবং বিভিন্ন ভারত-বিরোধী স্বার্থগোষ্ঠীর তৎপরতা দুই রাষ্ট্রের মানুষের মধ্যে সম্পর্কের সুতো কেটে দেবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আপাতত দু’টি বার্তা সাউথ ব্লকের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ প্রশ্নে ধারাবাহিক ভাবে দিয়ে যাওয়া হচ্ছে। প্রথমত, 'বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণের' জন্য নয়াদিল্লি সক্রিয়। বর্তমান কূটনৈতিক উথালপাথালের মধ্যেও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য রফতানিতে কোনও ছেদ দেয়নি মোদী সরকার। নতুন দফায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল বাংলাদেশে পাঠানোর ব্যাপারে সম্মত হয়েছে নয়াদিল্লি। দ্বিতীয়ত সুষ্ঠু, অবাধ এবং সবাইকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনের কথা ক্রমাগত বলে যাওয়া। অর্থাৎ আওয়ামী লীগের নাম না করে বুঝিয়ে দেওয়া, একটি রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে দেশের অন্তত চল্লিশ শতাংশ মানুষের সমর্থনকে অগ্রাহ্য যেন করা না হয়। তা হলে তা অবাধ নির্বাচন হিসেবে আন্তর্জাতিক স্তরে গণ্য হবে না। ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে 'সবাইকে সঙ্গে নেওয়া' সংক্রান্ত ভারতের বার্তায় যে কোনও কাজ হবে না, এটা ধরে নিয়েই একই কথা লাগাতার বলে যাওয়ার কূটনীতিকেই অবলম্বন করছে ভারত। তাৎপর্যপূর্ণভাবে দু'দিন আগেই আমেরিকার একাধিক আইন প্রণেতা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তিকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন, একটি দলকে নিষিদ্ধ করে ভোটে যাওয়া ঠিক নয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন