মনোনয়নে এক বাম ও বিজেপি

সরকারি দফতর সকাল দশটার আগে খোলে না। তাও এ দিন সকাল সাতটাতেই তমলুকে পৌঁছে যান পাঁশকুড়া, শহিদ মাতঙ্গিনী, ময়না ব্লকের বাম ও বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা।

Advertisement

আনন্দ মণ্ডল

তমলুক শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৫৫
Share:

কাঁধে-কাঁধ: তমলুকে মহকুমাশাসকের দফতরে বাম ও বিজেপি কর্মী-সমর্থকদেরদের ভিড়। —নিজস্ব চিত্র

যৌথ প্রতিরোধের ডাক দিয়েছিলেন দু’দলের শীর্ষ নেতারা। সেই কৌশলেই মিলল সাফল্য। পূর্ব মেদিনীপুরের যে সব এলাকার বাম ও বিজেপি প্রার্থীরা এত দিন ব্লক অফিসে মনোনয়নের জন্য ঘেঁষতে পারছিলেন না, শনিবার জোট বেঁধে তাঁরাই মনোনয়ন জমা দিলেন তমলুকে মহকুমাশাসকের দফতরে।

Advertisement

সরকারি দফতর সকাল দশটার আগে খোলে না। তাও এ দিন সকাল সাতটাতেই তমলুকে পৌঁছে যান পাঁশকুড়া, শহিদ মাতঙ্গিনী, ময়না ব্লকের বাম ও বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। স্থানীয় সূত্রের খবর, এলাকার দুই দাপুটে তৃণমূল নেতা পরিস্থিতি দেখতে এসেছিলেন একবার। কিন্তু সাতসকালেই বিরোধীরা কয়েকশো লোক জড়ো করে ফেলেছে দেখে রণে ভঙ্গ দেন তাঁরা। তারপর দিনভর আর শাসকের দাদাগিরি দেখা যায়নি। তমলুকে মহকুমাশাসকের দফতরের সামনের তৃণমূলের শিবিরেও শাসকদলের কর্মীদের তেমন ভিড় ছিল না। যে ক’জন ছিল, তারাও বিরোধীদের মনোনয়নে বাধা দেয়নি।

পরিসংখ্যানও বলছে, পাঁশকুড়ার ২০৮টি, শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের ১৫২টি গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশিরভাগ আসনেই এ দিন মনোনয়ন দিতে পেরেছেন বাম ও বিজেপি প্রার্থীরা। বিরোধী মনোনয়ন জমা পড়েছে ময়না ও তমলুকের কিছু আসনেও। কয়েকটি আসনে মনোনয়ন দিয়েছে কংগ্রেসও।

Advertisement

একজোট হয়ে শাসককে রুখে দেওয়ার ছবি এক দশক আগেও দেখেছিল নন্দীগ্রামের জেলা। ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটের সময় শাসক ছিল সিপিএম। তখন লালপার্টিকে ঠেকাতে তৃণমূলের নেতৃত্বে বাম বিরোধী বাকি দলের কর্মী-সমর্থকেরা জোট বেঁধেছিলেন। তখনও দেখা গিয়েছিল বিরোধীদের সকাল সকাল একসঙ্গে মনোনয়ন এবং জোট বেঁধে ভোটদানের ছবি। এ বার পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়নের প্রথম দিন থেকেই জেলায় জেলায় আক্রান্ত বিরোধীরা। এই অবস্থায় সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র ও বিজেপি নেতা মুকুল রায় যৌথ প্রতিরোধের কথা বলেছেন। তারপরই এ দিন তমলুকে এই ছবি। সিপিএমের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি ও বিজেপি-র তমলুক জেলা সাধারণ সম্পাদক নবারুণ নায়েক মানছেন, ‘‘তৃণমূলের বাধা এড়াতে কর্মী-সমর্থকরা সকাল সকাল চলে এসেছিলেন।’’

বিরোধীদের মনোনয়নে বাধার কথা অবশ্য মানতে নারাজ তৃণমূল। দলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সভাপতি শিশির অধিকারী বলেন, ‘‘জন সমর্থন নেই বলেই এতদিন ব্লক অফিসে মনোনয়ন দিতে আসেনি বাম-বিজেপি। আমরা কোথাও কোনও বাধা দিইনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন