বাড়ি পৌঁছল রাজকুমারের মৃতদেহ, সিবিআই দাবি
State News

হাউহাউ করে কান্না মা-বাবার

রায়গঞ্জ পুরসভার শববাহী গাড়িতে ফাঁসিদেওয়ার করণগছে এসে পৌঁছল মৃত ভোটকর্মী রাজকুমার রায়ের দেহ। গাড়ি দেখেই কান্নার রোল পড়ে যায় গোটা এলাকায়। ছেলের মৃত্যুর খবর শুনেই শয্যা নিয়েছিলেন অন্নদা রায়। এ দিন তাঁকে সামলাতে সামলাতে কান্নায় ভেঙে পড়েন রাজকুমারের বাবা প্রিয়নাথও।

Advertisement

স্নেহাশিস সরকার

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৮ ০২:১৭
Share:

শোক: বাড়িতে দেহ পৌঁছনোর পরে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন রাজকুমার রায়ের বাবা-মা। ফাঁসিদেওয়ার করণগছে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন বাড়ির লোকজন, কখন শেষবারের মতো দেখা যাবে। সোমাবর থেকেই বাড়িতে লেগে ছিল আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুদের ভিড়। শুক্রবার ঘড়িতে তখন রাত ৮টা বেজে ১০ মিনিট। রায়গঞ্জ পুরসভার শববাহী গাড়িতে ফাঁসিদেওয়ার করণগছে এসে পৌঁছল মৃত ভোটকর্মী রাজকুমার রায়ের দেহ। গাড়ি দেখেই কান্নার রোল পড়ে যায় গোটা এলাকায়। ছেলের মৃত্যুর খবর শুনেই শয্যা নিয়েছিলেন অন্নদা রায়। এ দিন তাঁকে সামলাতে সামলাতে কান্নায় ভেঙে পড়েন রাজকুমারের বাবা প্রিয়নাথও।

Advertisement

দেহ কান্তিভিটা মোড়ে পৌঁছতেই সেখান থেকে মোমবাতি নিয়ে মিছিল শুরু করেন বাসিন্দারা। মোমবাতি হাতে হওয়া ওই মিছিলে মৃত্যুর জন্য দায়ী যারা তাদের শাস্তির দাবিও তোলেন গ্রামবাসীরা। মিছিল থেকে কেউ কেউ মৃত্যুর কারণ খুঁজে বের করতে সিবিআই তদন্তের দাবিও তোলেন। প্রায় আড়াই কিলোমিটার পথ মিছিলের সঙ্গেই আসে গাড়ি। বাড়িতে এসে পৌঁছয় যখন তখন রাত ন’টা বেজে গিয়েছে। কফিনে মোড়া দেহ ধরে ডুকরে কেঁদে ওঠেন উপস্থিত আত্মীয়রা। করণগছে তখন হাজার হাজার কালো মাথার ভিড়।

যে গাড়িতে রাজকুমারের দেহ নিয়ে আসা হয়, তাতে ছিলেন তাঁর স্ত্রী অর্পিতা, ছেলে প্রীতীশ, মেয়ে সৃজা। ছিলেন রাজকুমারের ভাই হেমন্তও। স্বামীর মৃত্যুর শোকে কথা বলার মতো শক্তিও হারিয়েছেন অর্পিতা। রাজকুমারের পরিবার সিদ্ধান্ত নেন, বাড়ির পিছনেই সমাধিস্থ করা হবে তাঁর দেহ। সেভাবেই তাঁর দেহ সমাধিস্থ করা হয়।

Advertisement

এ দিন দুপুরে সিআইডি অফিসার রাজকুমারের বাবা প্রিয়নাথবাবু এবং মা অন্নদাদেবীর সাথে কথা বলেন। তার আগেই পরিবারকে সমবেদনা জানাতে আসেন এলাকার বিধায়ক কংগ্রেসের সুনীল তিরকে। বিকেলে রাজকুমারের বাড়ি আসেন শিলিগুড়ির বিধায়ক তথা পুরসভার মেয়র অশোক ভট্টাচার্য, সিপিএমের জেলা সম্পাদক আসেন। অশোকবাবু বলেন, ‘‘মৃত্যুর সঠিক তদন্তের দাবিতে প্রয়োজনে আমরা হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট যাব।’’ তদন্তের আগেই কীভাবে বলা হচ্ছে রাজকুমারবাবু আত্মহত্যা করেছেন সে নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

সিআইডি অফিসার মনসুরউদ্দিন বলেন, ‘‘কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এসেছি। সিনিয়র সুপারিটেন্ডেন্ট (সিআইডি) অজয় প্রাসাদের সাথে রাজকুমার বাবুর বাবা মায়ের কথা হয়েছে।’’ সিআইডি কর্তার সঙ্গে ফোনে কথা বলতে গিয়েও বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন রাজকুমারের বাবা মা। তারা ওই কর্তার কাছে ক্ষতিপূরণের দাবি জানান।

মৃতদেহ আসার আগে থেকেই করণগছ যাওয়ার মূল রাস্তা কান্তিভিটা মোড়ে পুলিশ মোতায়েন করা ছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন