State News

আজও ঝুলে রইল পঞ্চায়েত মামলা, আগামিকাল ফের শুনানি

মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের এজলাসে এই মামলার শুনানি শুরু হলেও তাতে বেরিয়ে আসেনি কোনও সমাধানসূত্র। বুধবার ফের এই মামলার শুনানি শুরু হয় পূর্বনির্ধারিত সময়, সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৮ ১২:০১
Share:

নিষ্পত্তি হল না পঞ্চায়েত মামলার। বুধবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কলকাতা হাইকোর্টে শুনানি চললেও তা ঝুলেই রইল আপাতত আরও এক দিন। আগামিকাল সকালে ফের এই মামলার শুনানি শুরু হবে। ফলে আপাতত অনিশ্চিত হয়েই রইল পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভবিষ্যৎ।

Advertisement

পঞ্চায়েত নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে জট কি শীঘ্রই কাটবে? তা জানতেই এ দিন সকাল থেকে সমস্ত রাজনৈতিক শিবির-সহ নির্বাচন কমিশনের নজর ছিল কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চে। মামলার নিষ্পত্তি না হওয়ায় নির্বাচনী প্রক্রিয়ার উপর হাইকোর্টের জারি করা অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশের সময়সীমা আরও এক দিন বাড়ল।

এ দিন শুনানির শুরুতেই বিচারপতি সুব্রত তালুকদার সব পক্ষকেই তাদের সওয়াল দীর্ঘায়িত করতে বারণ করেন। তিনি জানান, দ্রুত এই মামলার নিষ্পত্তি করতে হবে। তাই সব পক্ষই তাদের সওয়াল যাতে আইনি যুক্তির উপরেই সীমাবদ্ধ রাখেন, সে ব্যাপারে অনুরোধ করেন।

Advertisement

আরও পড়ুন
কমিশন নির্দেশ পাল্টেছে বলেই হস্তক্ষেপ: কোর্ট

তৃণমূলের তরফে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বিরোধীদের তোলা অভিযোগের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ‘‘বিরোধীরা যে সন্ত্রাস এবং মনোনয়ন জমা দিতে বাধা দেওয়ার কথা বলছেন, সেই বিষয়ে তারা পুলিশে ক’টা অভিযোগ দায়ের করেছেন?’’ সুপ্রিম কোর্ট ৯ এপ্রিলের রায়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকেই সমস্ত অভিযোগ নিষ্পত্তির দায়িত্ব দিয়েছিল। তা বিবেচনা করেই ৯ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন মনোনয়ন জমা দেওয়ার দিন বাড়ায়। পরের দিন সেই বিজ্ঞপ্তি আবার প্রত্যাহারও করে নেয়। তা হলে কমিশন ভুল করলে শুধরে দেবে কে? কল্যাণকে প্রশ্ন করেন বিচারপতি সুব্রত তালুকদার।

সিপিএম নেতা তথা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য অভিযোগ করেন, রাজ্য নির্বাচন কমিশন তৃণমূলের হাতের পুতুলে পরিণত হয়েছে। তিনি জানান, সমস্ত অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য কমিশনকে দায়িত্ব দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তাঁর দাবি, “মনোনয়নের দিন বাড়িয়েও তা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছে নির্বাচন কমিশন।” বিকাশবাবু আরও অভিযোগ, “নিজের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে কমিশন। ফলে রাজ্যবাসীর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে।” তাঁর মতে, কমিশন যদি নিজের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়, তবে এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার অধিকার রয়েছে বিচারব্যবস্থার।

এই মামলায় আইনি লড়াইয়ে জড়িয়েছে শাসক-বিরোধী। প্রথমে কলকাতা হাইকোর্ট, পরে সুপ্রিম কোর্টে উঠেছে এই মামলা। এর পর শীর্ষ আদালতের রায়ে তা ফিরে এসেছে হাইকোর্টে। আইনি লড়াইয়ের এই টানাপড়েনে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে প়ঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়েই। আগামী ১, ৩ এবং ৫ মে এ রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট কি আদৌ হবে? তৈরি হয়েছে সংশয়!

মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের এজলাসে এই মামলার শুনানি শুরু হলেও তাতে বেরিয়ে আসেনি কোনও সমাধানসূত্র। বুধবার ফের এই মামলার শুনানি শুরু হয় পূর্বনির্ধারিত সময়, সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ।

পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার মেয়াদ প্রথমে বাড়িয়ে ফের তা খারিজ করা সংক্রান্ত রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দু’টি নোটিসের পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেছিল বিজেপি। পাশাপাশি, এই নির্বাচনের বিরোধীদের মনোনয়ন জমা দেওয়া নিয়ে শাসক দলের বিরুদ্ধে হিংসার ছবিও তুলে ধরে বিরোধীরা। সেই মামলার শুনানিতে গত ৯ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়, এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না শীর্ষ আদালত। পঞ্চায়েত নির্বাচন সংক্রান্ত যাবতীয় বিতর্কের অবসান করতে ফের কলকাতা হাইকোর্টেই যেতে হবে। ফলে ফের হাইকোর্টে ফিরে আসে এ মামলা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন