দুর্নীতিতে থাকব না, প্রার্থী হতে মুচলেকা

এ বার প্রথম থেকেই তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব স্বচ্ছ ভাবমূর্তির প্রার্থী বাছাইয়ে জোর দেন। গোঘাটের দলীয় বিধায়ক মানস মজুমদারের তত্ত্বাবধানে সেখানকার দু’টি ব্লকের ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ভোটে মুচলেকা বা অঙ্গীকারপত্র দাখিল করে তবেই মিলেছে মনোনয়নের ছাড়পত্র।

Advertisement

পীযূষ নন্দী

গোঘাট শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৪৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

তৃণমূল প্রার্থীদের এ বার বজ্র আঁটুনি গোঘাটে!

Advertisement

শুধু স্বচ্ছ ভাবমূর্তিতেই মনোনয়ন জমা নয়, এ বার তাঁদের মুচলেকাও দিতে হয়েছে নেতৃত্বের কাছে। যে মুচলেকার মোদ্দা কথা, ‘দুর্নীতিতে থাকব না’।

গত পাঁচ বছরে গোঘাটেরই দু’টি ব্লকের ১৫টি পঞ্চায়েত এবং দু’টি পঞ্চায়েত সমিতির অনেক তৃণমূল সদস্যের বিরুদ্ধে গাছ কেটে বিক্রি, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্প-সহ বিভিন্ন প্রকল্পে উপভোক্তাদের কাছ থেকে অন্যায় ভাবে টাকা নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। এ ছাড়াও বালিখাদের বেআইনি ব্যবসায় জড়িত থাকা, বেনামে ঠিকাদরি-সহ নানা অভিযোগ রয়েছে। কয়েকটি ক্ষেত্রে সেই অভিযোগ থানা-পুলিশ পর্যন্তও গড়ায়।

Advertisement

এ বার প্রথম থেকেই তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব স্বচ্ছ ভাবমূর্তির প্রার্থী বাছাইয়ে জোর দেন। গোঘাটের দলীয় বিধায়ক মানস মজুমদারের তত্ত্বাবধানে সেখানকার দু’টি ব্লকের ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ভোটে মুচলেকা বা অঙ্গীকারপত্র দাখিল করে তবেই মিলেছে মনোনয়নের ছাড়পত্র। একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট পরিবারটি কত বছর তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

প্রার্থীদের অঙ্গীকার করতে হয়েছে, ‘আমাকে প্রার্থী তালিকায় স্থান দিলে সদস্য হিসাবে আমার পরিবার আগামী ৫ বছর নিজস্ব প্রভাব খাটিয়ে দলের অনুমতি ছাড়া গীতাঞ্জলি, কৃষি যন্ত্রপাতি-সহ অন্য পরিষেবার সহায়তা গ্রহণ করবে না। আমি ঠিকাদারি, বালিখাদ, টোল ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকব না’।

কিন্তু কেন এমন মুচলেকা? বিধায়ক বলেন, “সদস্যদের অনেকেই যে ঠিকাদারি, বালিখাদ-সহ নানা দলবিরোধী কাজে যুক্ত ছিলেন, তা অস্বীকার করার জায়গা নেই। মুখ্যমন্ত্রী চেয়েছিলেন দলে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির প্রার্থী থাকবেন। সেইমতোই এই ব্যবস্থা।’’ দলের হুগলি জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘জেলার সর্বত্রই মনোনয়ন প্রত্যাহার পর্বের পরে ওই অঙ্গীকারপত্র দিতে বলা হয়েছে প্রার্থীদের। গোঘাটের ক্ষেত্রে বিধায়কের উদ্যোগে তা আগে হয়েছে।’’ বিধায়কের এই উদ্যোগ নিয়ে বিরোধীদের প্রশ্ন, এর আগে যে সব পঞ্চায়েত সদস্য দুর্নীতিতে যুক্ত ছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? এ বার মুচলেকা অমান্য করলে কী হবে? বিধায়কের দাবি, ‘‘আগের বার
বহু ক্ষেত্রে দলীয় সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ বারও মুচলেকা অমান্য করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন